মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, বন্ধ ইন্টারনেট,, কার্ফু জারি!!
নয়া ইতিহাস
২৮মে ২০২৩ রবিবার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতের ইতিহাসে আজকের দিনটি স্বর্ণাক্ষরে লিখিত হয়ে গেলো। কেননা, আজকের এই দিনেই একশ চল্লিশ কোটি আবাদির দেশে, আত্মনির্ভর ভারতের নয়া ইতিহাসের সূচনা হলো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে এদিন উদ্বোধন হলো স্বাধীন ভারতের নয়া সংসদ ভবন।একই দিনে অস্তাচলে আরেক ইতিহাস। ব্রিটিশের তৈরি পরাধীন ভারতের সংসদ ভবন।যে ভবন স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর ধরে গণতন্ত্রের পীঠস্থান হিসাবে বহু ইতিহাসের সাক্ষী। সংসদ ভবন শুধু ইতিহাসের সাক্ষী নয়, ইতিহাসের জন্মদাতা।গণতন্ত্রের পীঠস্থানের ঠিকানা বদলালেও, ইতিহাস বদলায় না।ইট কাঠপাথরের স্থাপত্য একা হয়েও একা নয়, কেননা তাতে পরতে পরতে জড়িয়ে থাকে ইতিহাস। সেই ইতিহাস দেশ গড়ার,দেশ বদলের।একশ চল্লিশ কোটির দেশে গণতন্ত্রের প্রাণভোমরা হয়ে থেকেছে দিল্লীর সংসদ মার্গের এই বাড়িটি। দেশ খাতায়-কলমে স্বাধীন হওয়ার আগে, এই বাড়িতেই তৈরি হয়েছিলো সংবিধান সভা।এখানেই গৃহীত হয়েছিল দেশের সংবিধান। এখান থেকেই স্বাধীনতার সদর্প ঘোষণা করেছিলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। আবার গণতন্ত্রের কন্ঠরোধ করা জরুরি অবস্থা জারির প্রস্তাবও পাস হয়েছিল এখানেই।দু’শো বছরের পরাধীনতার অন্ধকার দূর করে ১৯৪৭ সালে জন্ম দেওয়া ‘ভারত’ নামক দেশকে সাবালক করেছে এই বাড়িটি।২৮ মে থেকে ওই বাড়িটি শুধু ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে স্মৃতি রোমন্থন করবে।অপরদিকে, একইদিনে সূচনা হলো নয়া ইতিহাসের।আর সেই ইতিহাসের সূচনা করে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন,’আত্মনির্ভর ভারতের নতুন সূর্যোদয় এই নতুন সংসদ ভবন।২০১৪ সালে দিল্লীর মসনদে বসে আত্মনির্ভর ভারতের বার্তা দিয়েছিলেন মোদি।আজ নতুন সংসদ ভবনে দাঁড়িয়ে একই সুর শোনা গেল তাঁর গলায়। রবিবার, সকালে প্রথম পর্যায়ের অনুষ্ঠানে সেঙ্গেল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।এরপর সংসদ ভবনে দাঁড়িয়ে তাঁর প্রথম ভাষণে বলেন, দেশের জন্য নতুন সংস ভবনের প্রয়োজন ছিল। এই ভবন একশ চল্লিশ কোটি দেশবাসীর স্বপ্নের প্রতিবিম্ব।২৮ মে ২০২৩, ইতিহাসে লেখা থাকবে।’মোদির কথায়, “ভারত এগোলেই বিশ্ব এগিয়ে যাবে।ভারতের উন্নয়ন বিশ্বকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।আর পিছনে ফিরে তাকাবে না ভারত। ‘ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘আজকের দিনটি ভারতের ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে নতুন উপহার নতুন সংসদ ভবন।এটি শুধু একটি ভবন নয়,এটি ভারতের একশ চল্লিশ কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। এটি গোটা বিশ্বকে ভারতের সংকল্প সম্পর্কে বার্তা দেবে।’তথ্য অনুযায়ী রবিবার থেকে স্মৃতির অস্তাচলে স্থান নেওয়া পুরনো সংসদ ভবনের কাজ শুরু হয়েছিল ১৯২৭ সালের ১৮ জানুয়ারী।কমবেশি ছয় বছর সময় লাগে ভবনটি তৈরি করতে। তৎকালীন সময়ে ভবন নির্মাণে খরচ হয়েছিল ৮৩ লক্ষ টাকা। ১৯৪৭-এ দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ১৯৪৬ সাল থেকেই এখানে সংবিধান তৈরির কাজ শুরু হয়। নয়া সংসদ ভবন ৬৪,৫০০ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে তৈরি হয়েছে।চারতলা বিশিষ্ট এই বিশাল ভবনটিতে ভারতের ঐতিহ্যশালী স্থাপত্য এবং পরিকাঠামোগত বিস্ময়। লোকসভার জন্য আসন ক্ষমতা ৮৮৮, রাজ্যসভার জন্য আসন ক্ষমতা ৩৮৪টি। নয়া সংসদ ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে।অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা থেকে শুরু করে,নিরাপত্তা, প্রযুক্তি সমস্ত কিছুর সর্বোচ্চ সংমিশ্রণ রয়েছে এই নয়া সংসদ ভবনে।যা আত্মনির্ভর ভারতের বার্তা বহন করবে বলে দেশবাসীর বিশ্বাস।