নাব্যতা হারিয়ে ধলাই নদী এখন মৃত্যু শয্যায়, উদ্বেগ

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

ধলাই নদীর নাব্যতা আরও কমেছে । বর্ষা প্রায় শেষ । যদিও ৩ সেপ্টেম্বর অবধি বৃষ্টি হয়েছে । বৃষ্টিপাত আরও হতে পারে । কারণ আকাশে এখনও মেঘ আছে । আবার আবহাওয়ার পূর্বাভাস তাই বলছে। ধলাই নদীর চিত্র কিন্তু পাল্টাচ্ছে না । নদীতে জল নেই , আমবাসা সংলগ্ন লংতরাই পাহাড় থেকে সৃষ্টি হয়ে কুলাই , সালেমা , হালাহালী হয়ে শহর সংলগ্ন মলয়া গ্রামে পৌঁছেছে এই নদী । তারপর বাংলাদেশের কুশিয়ারী নদীতে । একদা প্রলয়ঙ্কর ছিল ধলাই । এখন মৃত প্রায় । যত দিন যাচ্ছে এই নদী ততই যেন মৃত্যুর দিকে অগ্রসর হচ্ছে । এইবার বর্ষায় নদীর জল ছিল হাঁটুর সমান উঁচু । কোথাও কোথাও তাও নেই । পূজার পর নদীতে দেখা যাবে জলের পরিবর্তে বালির স্তূপ ।জল কমে যাওয়ায় ধলাই নদীর বহু মাছ হারিয়ে গেছে । মাছের জন্য বিখ্যাত ছিল এই নদী । প্রচুর পরিমাণে ছোট বড় মাছ পাওয়া যেত । বেশ কিছু জেলে সকাল থেকে বিকাল অবধি নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরতেন । জাল ফেলতে ফেলতে তারা এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যেতেন । সন্ধ্যায় সেই মাছ আসত বাজারে । মহকুমার প্রতিটি বাজারে পাওয়া যেত নদীর মাছ । কয়েক বছর ধরে আর এদের প্রায় দেখাই যায় না । হাতে গোনা কয়েকজন নদীর মাছ ধরেন । কোনও কোনও বাজারে হঠাৎ পাওয়া যায় । নিত্যদিন পাওয়া যায় না । পুঁটি , ইচা , মেনি , টেংরা , বোয়াল , পোটা আর লাচো মাছ ছিল সহজলভ্য । ছিল বাঁশপাতা রাণী মাছ । আর পশ্চিমবাংলার বাটা মাছ সুস্বাদু ও বিখ্যাত । বাটা মাছের চেয়েও সুস্বাদু লাচো মাছ । এখন অদৃশ্য হয়ে গেছে । একই অবস্থা পোটা , রাণী মাছ । নেই কাজরী মাছ । এখনও কারও কারও মুখে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া এই সব মাছের নাম শোনা যায় । আগামীদিনে নামগুলিও শোনা যাবে না । আবার নদীতে মাছ ধরে কিছু লোক সংসার চালাতেন এসবও মনে হবে গল্প । ধলাই নদীর বন্যা ছিল বিধ্বংসী । প্রতিবছর বর্ষায় একাধিকবার বন্যা হতো । গ্রাম শহর ভেসে যেত । মানুষ নিরাশ্রয় হতেন । আশ্রয় নিতেন টিলায় বা সরকারী প্রতিষ্ঠানে । ১৯৬৩ সালের বন্যায় জামতুম গ্রামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল । যুবকটির নাম বানরজয় হালাম । ভালো সাতারু ছিলেন এই যুবক । ধলাই নদী তখন খরস্রোতা । প্রচণ্ড বন্যা । বাজি ধরে বানরজয় নামলেন নদীতে । সাঁতার দিয়ে পার হবেন নদী । কিন্তু এপারে আসতে পারলেন না । জল স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে গেল সাঁতারুকে । মৃত্যু হলো বানরজয়ের । সম্ভবত ধলাই নদীর প্রথম শিকার এই হালাম যুবক । দ্বিতীয় শিকার ১৯৬৬ সালে । সেই বছরও বন্যা হয় । ভেঙে যায় অনেক কিছু । বহু গ্রাম জলমগ্ন হয় । মহকুমাশাসকের অফিস থেকে সব কিছু চলে যায় জলের তলায় । নদী অতিক্রম করতে গিয়ে মৃত্যু হয় এক বিএসএফ জওয়ানের । এই জওয়ান ধলাই নদীর দ্বিতীয় শিকার । বন্যা ধ্বংস ডেকে আনত । আবার নদীর জলের পলি মাটি ঊর্বর করত জমি । ফসল ভালো হতো । ভালো মন্দে মিশ্রিত ধলাই এখন মৃত্যু শয্যায় ।

Dainik Digital

Recent Posts

আগরতলা থেকে নিখোঁজ যুবকের দেহ মিললো গন্ডাছড়ার পানের দোকানের আইসক্রিমের ফ্রীজে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ভয়ানক কান্ড!! আগরতলা ইন্দ্রনগর থেকে নিখোঁজ হওয়া যুবকের দেহ মিললো গন্ডাছড়া নারায়ণপুরে একটি…

13 hours ago

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওলজি ল্যাবে আগুন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ১৫ মিনিট নাগাদ দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের নর্থ ক্যাম্পাসের জিওলজি ল্যাবে আচমকা…

15 hours ago

সংখ্যালঘু কং নেতার ফেসবুক লাইভ বক্তব্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ফেসবুক লাইভে মুখ্যমন্ত্রী, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপির সংখ্যালঘু নেতাদের কদর্য ভাষায় ব্যক্তি আক্রমণ করে…

17 hours ago

মোদি শাসনের ১১ বছরকে অমৃৎকাল বললেন মুখ্যমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদির ১১ বছরের শাসনকে মঙ্গলবার এক কথায় অমৃতকালের সাথে তুলনা…

17 hours ago

প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের আগে মন্ত্রীদের করতে হবে কোভিডটেস্ট!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বুধবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করতে…

18 hours ago

নির্বান্ধব প্যালেস্তাইন!!

সারা বিশ্ব কি মুখ ঘুরাইয়া লইয়াছে?এইবার কি পৃথিবীর মানচিত্র হইতে মুছিয়া যাইতেছে প্যালেস্তাইন?কী ভাবিতেছে বিশ্ব…

18 hours ago