নিঃসঙ্গতা কাটাতে পুলিশকে ২৭৬১ বার ফোন, গ্রেপ্তার জাপানি প্রৌঢ়া ।

 নিঃসঙ্গতা কাটাতে পুলিশকে ২৭৬১ বার ফোন, গ্রেপ্তার জাপানি প্রৌঢ়া ।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

একাকিত্ব বা নিঃসঙ্গতা কাটাতে কত মানুষ কত বিচিত্র পথই না বেছে নেন! কেউ আত্মহননের পথ বেছে নেন, কেউ বিনা প্রয়োজনে হাসপাতালে গিয়ে রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে গল্প করতে চান, কেউ মাছ ধরেন ইত্যাদি। তবে জাপানের এই ৫১ বছরের মহিলা যা করেছেন,তা সত্যিই আশ্চর্যের। নিঃসঙ্গতা কাটাতে গত দুই বছর ধরে তিনি পুলিশের ইমার্জেন্সি নম্বরে (ভারতে যেমন ১০০ ডায়াল) ক্রমাগত ফোন করে গেছেন। পাঁচ- দশবার নয়, ২৭৬১ বার
আইনরক্ষক বাহিনীর একটি
জরুরি হটলাইন নম্বরকে ব্যস্ত করে রাখার অপরাধে হিরোকো হাতগামি নামের ওই প্রৌঢ়াকে গ্রেপ্তার করেছে এ দেশের পুলিশ। হাতগামি জাপানের চিবাপ্রদেশের মাতসুড়ো শহরের বাসিন্দা।গ্রেপ্তার হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে হাতগামি তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, এই দোষ তার নয়, দোষ তার একাকিত্বের। বিনা কারণে এতবার ফোন করে জরুরি নম্বর ব্যস্ত রাখার কারণ কী? মহিলা বলেছেন, ‘আমি নিঃসঙ্গ ছিলাম। চেয়েছিলাম কেউ আমার কথা শুনুক এবং আমার প্রতি মনোযোগ দিক।’ মনোবিদরা হাতগামির এই প্রবণতাকে ‘অ্যাটেনশন সিক সিনড্রোম’ বলে অভিহিত করেছেন। এই অসুখের রোগীরা নানা ভাবে চারপাশের মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চায়। তবে হাতগামি দাবি করেছেন, তার আপন বলতে কেউ নেই। কথা বলারও লোক নেই, তার কথা শোনার মতোও কেউ নেই। পুলিশ প্রৌঢ়ার বক্তব্যের সত্যতা খতিয়ে দেখছে। চিবা প্রিফেকচারাল পুলিশ হাতগামিকে আটক করার পর জানায়,ধৃত মহিলা দমকল বিভাগের জরুরি নম্বরে সাড়ে ২৭০০ বারেরও বেশি ভুয়ো কল করে গুরুত্বপূর্ণ নম্বরটিকে ব্যস্ত করে রেখেছিলেন।২০২০ সালের ১৫ আগস্ট, থেকে গত মে মাসের মধ্যে তিনি এই কলগুলি করেন। এই নম্বরে সাধারণত মানুষ অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা পেতে যেমন পেট ব্যথা, পায়ে ব্যথা বা ওষুধের অতিরিক্ত মাত্রা প্রয়োগে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়লে ফোন করেন। তবে হাতগামির ফোন পেয়ে পুলিশ তার বাসায় পৌঁছলে তিনি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা প্রত্যাখ্যান করতেন।অপরাধ স্বীকারের পর সম্প্রতি ওই মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অপরাধ স্বীকার করে হাতগামি জানিয়েছেন, পুলিশকে সত্যিই প্রায় ৩,০০০ বার ফোন করেছিলেন তিনি। জাপানে এই ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম নয়।২০১৩ সালে, ৪৪ বছর বয়সি এক সাফাইকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, ছয় মাসে ১৫,০০০ বার পুলিশকে কল করার অভিযোগে। ওই ব্যক্তি একদিনে ৯২৭টি জরুরি কল করেছিলেন! ইচ্ছাকৃত ভাবে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.