উত্তরের আকাশে আছে এক নক্ষত্রপুঞ্জ ‘ডাকো’। দ্বিতীয় শতকের গ্রিক জ্যোতির্বিদ টলেমির লেখায় যে ৪৮ টি নক্ষত্রপুঞ্জের উল্লেখ আছে ‘ডাকো’ তাঁর একটি। এই ‘ডাকো’ যে দিকে সেদিকেই ৭৫০ আলোকবর্ষ দূরে আমাদের ছায়াপথেই সূর্যের আলোর মতো হলুদ রঙের একটি নক্ষত্র খোঁজ পেয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তারা ওই নক্ষত্রের নাম দিয়েছেন জিএসসি-০৩৫৪৯-০২৮১১। নিকষ কালো গ্রহ ট্রেস-২বি এই নক্ষত্রকে ঘিরেই পাক খাচ্ছে। এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হওয়া গ্রহ উপগ্রহদের মধ্যে এই ট্রেস-২বি’কেই সবচেয়ে কালো গ্রহের স্বীকৃতি দিল আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র বা নাসা।
তারার যে আলো এই গ্রহের ওপর এসে পরে তার মাত্র ১ শতাংশ আলো প্রতিফলিত হয়। কয়লা কিংবা কালো অ্যাক্রাইলিক রঙও এর থেকে বেশি আলো প্রতিফলিত করে। হার্ভার্ডের ‘স্মিথসনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্স’ এর জ্যোতিপদার্থবিদ ডেভিড কিপিং অতীব কম মাত্রায় প্রতিফলনের কারণে ট্রেস-২বিকে বিরল গ্রহের তকমা দিয়েছেন।
নিজের নক্ষত্রের থেকে মাত্র ৩০ লাখ মেইল দূরে ঘুরতে থাকা বৃহস্পতির সমান এই গ্যাসীয় দানব টড়েস-২বি-এর তাপমাত্রা প্রায় ৯৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খুব কাছ থেকে দেখলে এই গ্রহকে গ্যাসীয় পদার্থের কালো বল বলে মনে হবে। প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ডেভিড স্পাইজেলের মতে এই গ্রহ কুচকুচে কালো হলেও অত্যন্ত উত্তপ্ত হওয়ার কারণে জ্বলন্ত কয়লার মতো মৃদু লাল আলোর আভা বেরোতে দেখা গিয়েছে। বৃহস্পতিকে জড়িয়ে যে উজ্জ্বল অ্যামোনিয়ার মেঘ আছে তা সূর্য থেকে বৃহস্পতির বুকে আসা আলোর এক তৃতীয়াংশের বেশি আলোকে প্রতিফলিত করে।
অন্যদিকে, ২০০৬ সালে আবিষ্কৃত ট্রেস-২বিতে আলোকে প্রতিফলিত করার মতো মেঘ না থাকায় এই গ্রহ মাত্র ১ শতাংশ আলো প্রতিফলিত করতে সক্ষম। বিজ্ঞানী কিপিং আর বিজ্ঞানী স্পাইজেল ট্রেস-২বি’র প্রতিবিম্বের পরিমাপের জন্য নাসার কেপলার মহাকাশ যানের দূরদূরান্তের গ্রহ আর নক্ষত্রের ঔজ্জ্বল্য নির্ভুলভাবে মাপার জন্য যে ব্যবস্থা রয়েছে তারত সাহায্য নিয়েছেন।
নাসার কেপলার মিশন তৈরি হয়েছিল ‘মিল্কি ওয়ে’ ছায়াপথে সৌরজগতের বাইরের গ্রহদের খুঁজে বার করার জন্য। যাতে পৃথিবীর মতো বাসযোগ্য গ্রহদের খোঁজ পাওয়া যায়। মাত্র ৩০ বছর আগে ১৯৯২ সালে বাইরের কোনো গ্রহকে প্রথম নিশ্চিতভাবে সনাক্ত করা সম্ভব হয়। অনেক আগে ১৯১৭ সালে এইরকম বাইরের গ্রহের দেখা পাওয়ার দাবি উঠলেও তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ১৯৮৮ সালে আরেকটি বহির্গ্রহের খোঁজ পাওয়া গেলেও ২০০৩ সালের আগে নিশ্চিতভাবে তার অস্তিত্ব প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি। ২০২২ সালের ১লা জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৯০৫ টি বহির্গ্রহের অস্তিত্ব নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে নাসার কেপলার মিশনের কেপলার মহাকাশযান ২৬০০ বহির্গ্রহ আবিষ্কার করেছে যার মধ্যে কুচকুচে কালো গ্রহ ট্রেস-২বিও আছে।
কিন্তু কেন এরকম অদ্ভুত রকমের কালো এই গ্রহ তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিজ্ঞানী কিপিং বলেছেন, বৃহস্পতির বাইরের বায়ুমন্ডলে যেমন অ্যামোনিয়ার মেঘ রয়েছে, তেমনই এই কালোগ্রহের বায়ুমন্ডলে বাষ্পীভূত সোডিয়াম, পটাশিয়াম কিংবা গ্যাসীয় টাইটেনিয়াম ডাই অক্সাইডের মতো আলো শোষনকারী রাসায়নিক পদার্থের থাকার সম্ভাবনা প্রবল।
তবে এই সব পদার্থের উপস্থিতি সত্ত্বেও ট্রেস-২বি গ্রহের এমন ঘোর কালো হওয়া সম্ভব নয় এমনই মনে করছেন বেশিরভাগ বিজ্ঞানীরা। তাই অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন এই গ্রহের বাইরের বায়ুমন্ডলে আলো শোষণকারী এমন কোনো রাসায়নিক পদার্থ আছে যা পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের এখনো অজানা। আরেকটি ঘটনাও বিজ্ঞানীদের প্রথমদিকে ধন্দে ফেলে দিয়েছিল। ট্রেস-২বি যখন তার নক্ষত্রের চারপাশে ঘোরে তখন নানা পর্যায়ে এর ঔজ্জ্বল্যর তফাৎ অত্যন্ত সূক্ষ্ম।
অর্থাৎ বিভিন্ন সময়ে এই গ্রহের ঔজ্জ্বল্যর তারতম্য ভীষণই কম। বিজ্ঞানীরা কেপলারের মাধ্যমে পাওয়া ৫০-এরও বেশি আবর্তনের তথ্য সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ করে দেখেছেন এই ঔজ্জ্বল্যের তারতম্যের পরিমাণ মাত্র ৬ পিপিএম। নানা সময়ের ঔজ্জ্বল্যর এই খুব সামান্য বদল প্রমাণ করে, ট্রেস-২বি নিশ্চিতভাবেই এক অন্ধকার গ্রহ। ‘রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি’র জুন মাসের সংখ্যায় ট্রেস-২বি সম্পর্কে প্রথম তথ্য জনসমক্ষে এনেছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘কালো গ্রহ ট্রেস-২বি’এর আবিষ্কার, আমাদের সৌরজগত ‘মিল্কিওয়ে’ ছায়াপথে এক অত্যাশ্চর্য নমুনা, আমাদের অনেক দিনের সমস্ত ধারণাকে ভেঙে দিয়েছে।’
অনলাইন প্রতিনিধি :-উত্তপ্ত মণিপুরের অশান্তির আঁচ এবার পৌঁছল মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি পর্যন্ত।মন্ত্রী-বিধায়কদের বাড়িতে হামলার পর এবার…
অনলাইন প্রতিনিধি :-বেআইনিভাবে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে চিকিৎসককে মারধর করার অভিযোগে রাজ্য পুলিশের ডিএসপি প্রসূনকান্তি…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ট্রেন, বিমানের পর এবার দেশের সবথেকে বড় ব্যাঙ্করিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াই উড়িয়ে দেওয়ার…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের মন্ত্রী সুধাংশু দাস সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছেন। মন্ত্রীর এই সাম্প্রদায়িক উস্কানির দৌলতে, গণ্ডাছড়া,…
আমেরিকায় পালাবদলের পর বিশ্বের অশান্ত এলাকাগুলিতে,যুদ্ধবিধ্বস্ত সকল অঞ্চলে নতুন ভাবনাচিন্তা শুরু হইয়াছে। বিশেষত দুইটি যুদ্ধ…
অনলাইন প্রতিনিধি :- জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে, চিরস্থির কবে নয়ে নীর, হায়…