নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!
নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ বাতাস এই প্রশ্নে এখন উত্তাল।প্রতিদিনই পত্রপত্রিকায় খবর বেরুচ্ছে যে,নিগোসিয়েশন,টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, চাঁদাবাজি, তোল্লাবাজি,কমিশন বাণিজ্য ইত্যাদি রাজ্যের কোন কোন প্রান্তে ঘটেই চলেছে।এবং এতে প্রতিটি ক্ষেত্রেই শাসক দলের নেতা,পাড়ার দাদা, মণ্ডল নেতা, কার্যকর্তা থেকে শুরু করে একেবারে দলের সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত জড়িত। এর জন্যই কি রাজ্যে সরকার পাল্টানো জরুরি ছিলো? ২০১৮ সালে বহু প্রত্যাশা নিয়ে রাজ্যের সাধারণ মানুষ ২৫ বছরের একটা সরকারকে হটিয়ে দেয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে।কিন্তু গত ছয় বছর ধরে যত দিন যাচ্ছে ততই সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা বলছে রাজ্যে সরকার বলতে আর অবশিষ্ট কিছু নেই। সরকার ভাসছে অন্য দুনিয়ায়।মানুষের সুখ দুঃখে পাশে থাকা একটা সরকারের মৌলিক কর্তব্য। কিন্তু মানুষের পাশে কি সরকার রয়েছে?প্রকৃত ঠিকাদাররা ভয়ে সিঁটিয়ে থাকছেন।নিগো মাফিয়ারা সমস্ত কিছুতে ভাগ বসাচ্ছে। সম্প্রতি আমবাসার একটি ঘটনায় এক ঠিকাদার নিগো মাফিয়াদের ভয়ে স্থান পরিত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।কোনও ব্যবস্থা নেই। স্বরাষ্ট্র দপ্তর একেবারে চুপ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চুপ,নির্বিকার, কোনও ভূমিকাই নেই তার। কোনও সদর্থক ভূমিকা চোখে পড়ছে না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।কিছুদিন আগে বিশালগড়ে রাত তিনটায় এক অফিস স্থানান্তর করতে হয়েছে।কী সুশাসনের নমুনা।এই রকম নমুনা কী আর দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া যাবে? বিশালগড়ের দুই বিবদমান গোষ্ঠী একবারে সম্মুখসমরে অবতীর্ণ।শুধুমাত্র নিগো বাণিজ্যের ভাগ বাটোয়ারা নিয়েই এই অবস্থা, এবং শাসক দলের দুই শীর্ষনেতার সাঙ্গপাঙ্গরা এতে জড়িত। সাধারণ মানুষ একেবারে তিতিবিরক্ত।সরকারের কোনও হেলদোল নেই।স্বরাষ্ট্র দপ্তর নির্বিকার।সংবাদে প্রকাশ, নিগো বাণিজ্য ঘিরে খুমুলুঙ এবং মান্দাইয়ে গত দুই মাস আগেও গুলী চলেছে।সেই গুলীকাণ্ডের আজও কোন কিনারা হয়নি। এর জেরে শাসক দলের দুই নেতাকে লক্ষ্য করে গুলী চলে।দলীয় অফিস ভাঙচুর পর্যন্ত হয়।পুলিশ আজও এর কিনারা করতে ব্যর্থ।নিগো মফিয়ারা এত বেড়েছে যে শাসক দলও তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।শাসক দলের সর্বোচ্চ নেতাদের কোনও রাশ নেই।ফলে এর বাড়বাড়ন্ত চলছেই।এই অবস্থায় সাধারণ মানুষ এর থেকে পরিত্রাণ চাইছেন। রাস্তা বানানো, বিল্ডিং বানানো থেকে শুরু করে যেকোনও পরিকাঠামো উন্নয়নে নিগো মাফিয়ারা থাবা বসাচ্ছে।আর এর কমিশন যাচ্ছে সর্বোচ্চ স্তরে। ফলে সবাই চুপ। পত্রপত্রিকায় খবর হলেও সবাই নির্বিকার।নির্বিকল্প সমাধিস্বরূপ সবাই বসে রয়েছে।স্বরাষ্ট্র দপ্তর কোনও ভূমিকাই নিচ্ছে না।সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছে এই অবস্থা যদি চলতে থাকে তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?সাধারণ মানুষ এর থেকে পরিত্রাণ চাইছেন।যে হারে রাজ্যের দিকে দিকে কমিশন বাণিজ্য,নিগো বাণিজ্য, মাফিয়ারাজ থাবা বসিয়েছে তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া চলছে।সাধারণ মানুষ মনে করছেন এর জন্যই কি তারা ক্ষমতায় বসিয়েছেন এই সরকারকে? মুখ্যমন্ত্রী মাঝেমধ্যেই ভাষণে এর উল্লেখ করছেন মাত্র। কোনও কাজ হচ্ছে না। মাফিয়ারা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর গর্জন বর্ষণ হয়ে ঝরে পড়ছে না।রাজ্যবাসী চাইছেন ব্যবস্থা নেওয়া হোক গণহারে মাফিয়াদের বিরুদ্ধে।
বর্তমানে পুজোর মুখে পুজোর চাঁদার জুলুমও গণহারে হচ্ছে।প্রশাসন লোক দেখানোর জন্য ক্লাবগুলির সাথে বসে মিটিং করে এই যা।আসলে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।পুজোর জুলুমবাজির ট্র্যাডিশন অব্যাহত রয়েছে।অচিরেই এগুলোর বিরদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া কাম্য।
সাধারণ মানুষ কিন্তু সরকারের কথায় এবং কাজে মিল খুঁজে পাচ্ছেন না। সরকারকে এর থেকে পরিত্রাণ দিতেই হবে মানুষকে।সাধারণ মানুষ তা চাইছেন।