বহুদিন আগেই বাংলার কবি লিখে গেছেন বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। এর অর্থ হলো, যে যার জায়গা থেকে ভূমিকা রাখলে সেটাই সবচেয়ে সুন্দর ব্যবস্থা। কিন্তু মানুষ বড় বিচিত্র জীব। সে সবকিছুকেই তার নিজের অবস্থান থেকে দেখতে পছন্দ করে। যে কারণে, যে কোন কিছুকে নিয়েই সে ব্যবসায় মেতে ওঠে। অর্থের আগ্রাসী চাহিদায় সে এখন বন্যপ্রাণকে নিয়ে জমজমাট চাহিদায় মেতে উঠেছে। বহুকাল ধরেই বেয়াইনি বন্যপ্রাণী ব্যবসা স্থান কাল পাত্র ভেদে সব দেশেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বর্তমানে বেআইনি ব্যবসা পাঙ্গা নিচ্ছে দেশের মাদক, নকল ব্র্যান্ডেড জিনিস আর মানব পাচারের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধের সঙ্গে।
অনেকদিন আগে থেকেই পাচারকারীদের কারনে বনজ সম্পদ মূল্যবান বৃক্ষ, ওষধি বনাজি গাছ উজার হয়ে গেছে। এখন মানুষের লোভ বনের পশুপাখি দুষ্প্রাপ্য প্রাণী সবকিছুকেই ধ্বংসের কিনারে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এক সময় এই পাহাড়ি রাজ্য ত্রিপুরার লংতরাইভ্যালি মহকুমার ছামনু, মানিকপুর, ডেবাছড়া, দুর্গছড়া, পূর্ব ছামনু, উত্তর লংতরাই, মকরছড়া এলাকায় হাতি, সাপ, কচ্ছপ, বাঁদর, বনবিড়াল, বনমোরগ, তক্ষক, নীলগাই, হরিণ সহ বহু প্রজাতির পশু ও পাখির দেখা মিলতো। প্রায় ২৫-৩০ বছর আগেও এ রাজ্যের বনভূমিতে বনমহিষ, ভাল্লুক, সজারু, বনরুই হামেশাই দেখা যেত। ছিল গভীর অরণ্যে মূল্যবান সেগুন, দেবদারু, সুন্ধি, কড়ই, গর্জন, চামলের বনানী।
ছিল বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ ও ছন। কিন্তু মানুষের অদম্য লোভ জৈব বৈচিত্র্যকে আজ হুমকির মুখে এনে ঠেলে দিয়েছে। লোভ এখানে মারতে ও মরতে শেখায়। আর তাতেই বিরল প্রজাতির এই প্রাণীকুলকে মেরে, কখনও তাদের খাঁচায় পুরে এনে বিক্রি করে মানুষ তাদের অর্থ প্রতিপ্রত্তি জীবন যৌবন সবকিছুই ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বাড়িয়ে তুলছে। এদের শিং, দাঁত, নখ, গায়ের আঁশ, হাড় সবই মানুষের দখলে। তক্ষকের এটা ওটা খেলে মানুষের রূপ রঙ বাড়ে, তাই পাহাড় জুড়ে নিধন যজ্ঞ। শুধু শৌখিনতা কিংবা চিকিৎসা বা ওষুধ তৈরির প্রয়োজনে বন্যপ্রাণী পাচার ও হত্যা হচ্ছে না। তন্ত্র মন্ত্র করেন যারা, তারাও সাধনার প্রয়োজনে এসবের বড় বিক্রি বাট্টা আর ব্যবসার পসরা বাড়িয়ে চলেছেন। এই কারণে প্যাঁচা এখন দেখা যায় না।
একদিকে বনজ সম্পদ, পশুপাখির ধ্বংসলীলা আর নিধন যজ্ঞ চলছে। আরেক দিকে ছামনু ধুমাছড়া, ছৈলেংটা, দুর্গাছড়া। মানিকপুরের মতো দুর্গম বাজারগুলোতে প্রচুর সংখ্যায় দিনদরিদ্র জনজাতি অংশের গরিব মানুষ অভাবে তাড়নায় বাঁশকুরুল থেকে শুরু করে বিভিন্ন বনজ গাছপালা অঙ্কুরেই বিনাশ করে চলেছেন। পাশাপাশি মাংস বিক্রির চাহিদার কারনে চিরকালই হরিণ কচ্ছপ বাজার চড়া। এভাবেই মানুষের উদর পূর্তির জন্য বানর, হরিণ, কচ্ছপ, বন্যশূকর সবারই প্রাণ যাচ্ছে অহরহ। তেলিয়ামুড়ার মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের চামপ্লাইয়ের গভীর জঙ্গলে বিরল প্রজাতির নানা রঙয়ের পাখির দেখা মিললেও পাখিশিকারিদের কারনে শুনসান এই বনভূমি।
সম্প্রতি সেখান থেকে বনকর্তারা উদ্ধার করেছেন পাখি ধরার বিশাল জাল। কিন্তু চোরা শিকার, বন্যপ্রাণী ব্যবসায়ী আর জৈব বৈচিত্র্য ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে বনদপ্তরে আইন অনুযায়ী কোনও পদক্ষেপ নেই। বেআইনি বন্যপ্রাণী ব্যবসার সবচেয়ে বিপজ্জনক দিকটি হলো, এর ফলে একদিন প্রকৃতির ভারসাম্য এবং জৈববৈচিত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু নীরব প্রশাসন। নেতা মন্ত্রী সান্ত্রি আমলা পরিবেশ দিবসে, বন্যপ্রাণী দিবসে জৈববৈচিত্র ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য সুরক্ষার জন্য বড় বড় লম্বা ভাষণ রাখেন। কিন্তু বনের পর বন সব উজাড় হয়ে গেলেও তাদের সাড়াশব্দ নেই। পরিবেশবিদরা কখনও কখনও দু’ ফোঁটা চোখের জল ফেলেন তোতা ময়নাদের জন্য। কিন্তু সরকার ও প্রশাসনের মিথ্যে প্রচার ও অসত্য পরিসংখ্যানে সব ঢাকা পড়ে যায়। কিন্তু এর পরিণাম যে অচিরেই ভয়াবহ রূপ নিয়ে আমাদের দিকেই ছুটে আসছে এর কোন হেলদোল নেই কর্তাভজা নেতা-মন্ত্রীদের।
প্রতিবেশী বাংলাদেশে গত ছয়মাস ধরে চলতে থাকা অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একেবারে নিঃশব্দে এগিয়ে…
অনলাইন প্রতিনিধি:-প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করছে না সরকার। জেআরবিটির মাধ্যমে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেররাজধানী শহর আগরতলার যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে উড়াল সেতু। শহরের পশ্চিম…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেরসরকারী স্কুলে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ হতেই রাজ্যের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের উপর জুলুমের অভিযোগ উঠেছে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট একটি প্রতীককে ত্রিপুরা সরকারের রাজ্য প্রতীক/লোগো হিসেবে ব্যবহারের…
অনলাইন প্রতিনিধি :-সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকালই বিজেপির দশটি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের নামে চূড়ান্ত সীলমোহর পড়বে।…