নিশ্চিন্তপুরে দফায় দফায় ট্রলি পর্যবেক্ষণ,যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্বোধনী প্রস্তুতি।

 নিশ্চিন্তপুরে দফায় দফায় ট্রলি পর্যবেক্ষণ,যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্বোধনী প্রস্তুতি।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবার, পরপর দুদিন ট্রলি সফর ও পর্যবেক্ষণ হয়েছে নিশ্চিন্তপুরে। ৯ সেপ্টেম্বর উদ্বোধনের কথা মাথায় রেখে চলছে শেষ তুলির টান। মিটার গেজ রেলপথের মাপজোক চলছে। বারবার খতিয়ে দেখা হচ্ছে নানা দিক। যাবতীয় ত্রুটি বিচ্যুতি দূর করার লক্ষ্যে চলছে তৎপরতা। চলছে ঝাড়পোঁছ। বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন নিশ্চিন্তপুর রেলস্টেশন পুরোদস্তুর তৈরি করছে প্রায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। নিরাপত্তা ও সুরক্ষার প্রতি নজর রাখার পাশাপাশি চলছে সাজসজ্জার উদ্যোগ। শুক্রবার সকালে নিশ্চিন্তপুর রেলস্টেশনে গিয়ে ধরা পড়েছে এই চিত্র।দেখা গেছে, স্টেশনের বাইরে ও ভেতরে বেশকিছু শ্রমিক কর্মরত। রেলপথে রাখা কয়েকটি মিটার গেজ ট্রলি।শ্রমিকদের মধ্যে রাজ্যের পাশাপাশি রয়েছে পার্শ্ববর্তী আসাম রাজ্যের লোক। রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং রাজস্থানের লোক। তারা মেঝে পরিষ্কার করছেন তো কেউ দেওয়াল সাফ করছেন। কেউ আবার স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম ও বাইরের সিঁড়ি সিরিশ কাগজ দিয়ে ঘষতে ব্যস্ত রয়েছেন।অনেকে সিঁড়ির উপরে থাকা স্টিলের হাতলে যন্ত্র ব্যবহার করে চলেছেন। লক্ষ্য, সবকিছু ঝকঝকে তকতকে করা। অনেকে আবার প্ল্যাটফর্মের ভেতরে বৈদ্যুতিক পাখা ঝোলাতে ব্যস্ত। এর মধ্যেই শোনা গেলো ঠিকাদারের তরফে এসব কাজকর্ম তদারকির দায়িত্বে থাকা বিমল চন্দ্র সাহার আক্ষেপ। তাতে যোগ্য সঙ্গত করে চলছেন কর্মরত শ্রমিকরা। রেলপথ ও সংলগ্ন অংশে বারবার পাথর ও মাটি ফেলায় বেড়েছে তাদের কাজ। প্রতিবার পরিষ্কার করার পর আবারও মাটি ও পাথরের ধুলোর আস্তরণ পড়ছে।স্টেশনের মূল ভবন নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে রাজ্যের ঠিকাদার। রাজ্যের রাজধানী শহর আগরতলার ঠিকাদার শিবু রঞ্জন সাহা বরাত পেয়েছেন স্টেশন ভবন সহ রেলপথ ছাড়া অন্য কাজের। পুরো স্টেশনজুড়ে লাগানো হয়েছে কাচ। দ্বিতল ভবনের এই স্টেশনের বাইরে ভেতরে লাগানো কাচ অত্যন্ত দামি। খুব ভারী ও মোটা এই কাচ রাজ্যে অমিল। আনাতে হয়েছে বহি:রাজ্য থেকে। এছাড়া স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম সহ দ্বিতল ভবনের বারান্দা এবং অন্যান্য অংশে ব্যবহৃত কাঠামোর বিশেষ কিছু অংশও আনাতে হয়েছে বহি:রাজ্য থেকে। উল্লেখিত গ্লাস এবং লোহার কাঠামোর বিশেষ কিছু অংশ আবার উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনও রাজ্যে পাওয়া যায় না। এসব আনাতে হয়েছে কলকাতা সহ দেশের অন্যান্য অংশ থেকে। মোট কথায় নিশ্চিন্তপুর রেলস্টেশনকে সাজিয়ে তুলতে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে।নিশ্চিন্তপুর রেলস্টেশনটি মূলত জলাভূমির উপর নির্মিত হয়েছে। এর উপর স্টেশনে মাটি ফেলার পর পাওয়া যায়নি পর্যাপ্ত সময়। বারবার দ্রুত কাজ শেষ, করার উপর তাগাদা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কোভিডজনিত কারণে টানা দুই বছর প্রায় কোনও কাজ করা যায়নি। ফলে স্টেশন ভবন নির্মণ ও রেলপথ বসানোর পর নানা বিপত্তি দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, এসব খুব স্বাভাবিক ঘটনা। পরে নিয়মমাফিক ত্রুটি সারাইয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কয়েক দফা বসানো হয়েছে রেলপথ। বারবার ফেলা হয়েছে মাটি ও পাথর। স্টেশনের ইয়ার্ডের ছয়টি রেলপথই বারবার তুলে সংস্কার করতে হয়েছে। একইভাবে প্ল্যাটফর্ম ভবনেও দফায় দফায় সংস্কার করতে হয়েছে। এসব কাজ আপাতত শেষ। এখন চলছে শেষ পর্যায়ের কাজ, মানে ঝাড়পোঁছ ইত্যাদি।শুক্রবার সকালে আক্ষরিক অর্থেই স্টেশনে ঝাড়পোঁছ করতে দেখা গেছে। এই কাজ চলেছে দিনভর। আবার বিভিন্ন রেলপথের উপর দফায় দফায় চলেছে ট্রলি। রেলপথের মাপজোক চলেছে বিশেষ ধরনের স্কেল ও মাপক ফিতা দিয়ে। মিটার গেজের ট্রলিতে নির্মাণ সংস্থা ইরকনের তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত রমন সিংলা সবকিছু তদারকি করে চলেছেন। দিয়েছেন প্রয়োজনীয় নির্দেশ। রীতিমতো খুঁতখুঁতে মনোভাব নিয়ে শ্রীসিংলা ট্রলি নিয়ে পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ চালিয়েছেন। পাশাপাশি পুরো স্টেশনজুড়ে চালিয়েছেন প্রয়োজনীয় তদারকি। সব মিলিয়ে নিশ্চিন্তপুর রেলস্টেশন যেন ধীরে ধীরে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত হতে স্থির লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে ৯ সেপ্টেম্বরের দিকে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.