জনগণনা একটি বিপুল কর্মযজ্ঞ।আধুনিক জনকল্যাণকামী সব দেশেই জনগণনা হলো একটি। অতি প্রয়োজনীয় সরকারী কাজ। পৃথিবীর ছোট-বড়,উন্নত-উন্নয়নশীল-অনুন্নত প্রায় প্রতিটি দেশেই নির্দিষ্ট সময় অন্তর জনগণনা বা সেন্সাস হয়ে থাকে। সাধারণত প্রতি ১০ বছর অন্তর এই জনগণনা হয়ে থাকে।ভারতে প্রথম জনগণনা শুরু হয়েছিল ১৮৭২ সাল থেকে। সেই থেকে প্রতি ১০ বছর বাদে দেশে জনগণনার রীতি চালু আছে।২০১১ সাল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন ভাবে এই জনগণনার কাজটি দেশে হয়ে এসেছে। এমনকি ১৯১৪-১৯১৯ এর প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং ১৯৩৯-১৯৪৫ এর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালেও দেশে জনগণনার কাজ কোন বাধাপ্রাপ্ত হয়নি। কিন্তু দীর্ঘ গত ১৪ বছর ধরে দেশে জনগণনার কাজ বন্ধ। দেশে শেষবার জনগণনা হয়েছিল ২০১১ সালে। নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী জনগণনা হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালে। কিন্তু ২০১৯-এ শুরু হওয়া কোভিড মহামারির কারণ দেখিয়ে জণগণনার কাজ সেই যে বন্ধ হয়ে পড়েছে, তা আর শুরু হওয়ার দেখা নেই। ২০২১ সালে জনগণনার মূল কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, এর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় বছর দুই আগে থেকেই। আর সেই কারণেই ২০১৯-এর ডিসেম্বর থেকে ২০২০-এর প্রথম পর্বে কোভিড ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ার পর কোভিড মহামারির কারণ দেখিয়ে সরকারী তরফে ঘোষণা দিয়ে জনগণনার কাজ সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয়। অথচ ২০২২ সালের শেষ দিকে কোভিডের প্রভাব গোটা দুনিয়াতেই সম্পূর্ণ থেমে গেলেও দেশে জনগণনা শুরু করা হয়নি। সরকার তথা প্রশাসন এই বিষয়ে অদ্ভুত নীরবতা এবং নিস্পৃহতা বজায় রেখে চলেছে। বিস্ময়ের বিষয় হলো, কোভিডের জন্য গত চার বছর ধরে জনগণনার কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে থাকলেও, এই কোভিড মহামারির সময়ে দেশের ১২ টি রাজ্যে বিধানসভার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। লোকসংখ্যার নিরিখে এই নির্বাচনগুলোতে দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক মানুষ অংশ নিয়েছেন কিংবা ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।নির্বাচনি কর্মকাণ্ড মানেই শুধু ভোট প্রদান করা নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ভোটার তালিকা, কমিশনের তরফে বাড়ি বাড়ি ভোটার স্লিপ বিলি,আছে মিছিল, জনসভা থেকে শুরু করে হাজারো রাজনৈতিক কাজকর্ম। স্বাভাবিক কারণেই এতে করে কোভিডের মরশুমে হার লক্ষ কোট মানুষের ভিড়,রাজনৈতিক উন্মাদনা কোন কিছুরই ঘাটতি হয়নি।একমাত্র দেশে জনগণনার কাজই শুধু বন্ধ রাখা হয়। অথচ এই কোভিডের সময়কালে বিশ্বের প্রায় সব দেশই তাদের জনগণনার কাজ যথাযথ ভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ভারতে জনগণনার কাজ নিয়ে এত নিস্পৃহতার কারণ কী? মনে রাখতে হবে, একটি দেশের জনগণনার সঙ্গে সেই দেশের সার্বিক নীতি গ্রহণ ও পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার বিষয়টি যুক্ত। জনগণনা যেহেতু দেশের মোট লোকসংখ্যা গণনা করাই নয়, এর সঙ্গে যুক্ত আছে দেশটির জনগণের ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং আর্থ-সামাজিক নানা ধরনের তথ্য। তাই জনগণনার মাধ্যমে দেশের জনগণের জীবন-জীবিকা, শিক্ষা, পেশা, রুজি-রোজগার, ধর্ম, পানীয় জল, বিদ্যুৎ, শৌচাগারের অবস্থা-সব মিলিয়ে পুরো একটা তথ্যভাণ্ডার আসবে দেশের সামনে। এই তথ্যের ভিত্তিতেই দেশের এবং তার জনগণের অবস্থা, অগ্রগতি, জীবনমানের ধারা সব কিছুর তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা যাবে অতীতের জনগণনার সঙ্গে। পাশাপাশি আগামীর জন্য এই তথ্যকে ভিত্তি করেই নীতি ও পরিকল্পনা স্থির করা হবে। কিন্তু জনগণনা গত ১৪ বছর ধরে না হওয়ায় ২০১১-এর তথ্য দিয়েই দেশকে এগোতে হচ্ছে। এখানেই বিরোধীরা সরকারের অভিসন্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। বলছেন ২০১১-এর তথ্য ব্যবহার করে সরকার দেশের কোটি কোটি মানুষকে বঞ্চিত করেছেন, পরিকল্পনা বাবদ কম খরচ করছেন। যা এককথায় জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। যেহেতু ২০১১ এর জনগণনা অনুযায়ী রেশন দেওয়া হচ্ছে জনগণকে তাই এই সময়ে যারা জন্মে ছে তারা রেশন সহ বিভিন্ন প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সংসদের এবারের বাজেট অধিবেশনেও এই অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে বিরোধীদের তরফে। ২০২৩ সালে দেশে লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে জনগণনা সম্ভব হয়নি। ২০২৪ সাল ভোটের বছর। তাই জনগণনার প্রশ্নই উঠে না। অথচ ২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকার আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেট পেশ করলেও জনগণনা খাতে বাজেট বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়ায় এ বছরও জনগণনা হবে কিনা সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মোদি জামানায় এখনো পর্যন্ত জনগণনা হয়নি, তাতে বিরোধীদের মতো সরকারের অন্দরেও যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু বাজেটে এনপিআর বাবদ বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া কীসের ইঙ্গিতবাহী?
অনলাইন প্রতিনিধি :-ফের লাইনচ্যুত ট্রেন। ছিটকে গেছে তিনটি কামড়া। ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার তিতলাগড় স্টেশনের কাছে।…
অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রথম সংক্রমণের ৫ বছরের রেষ কাটতে না কাটতেই নতুন করে চিনে খোঁজ মিলেছে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-গত ৫ আগস্ট হাসিনা জামানার পতনের পর বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়। তবে…
শুক্রবার মরিশাসের সংসদে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন আসন্ন ন্যাশনাল ডে বা জাতীয় দিবসের উদযাপনে প্রধান অতিথি…
কোনও চাওয়া যখন পথের থেকে বেশি সংখ্যায় পথবন্ধক তৈরি করে, তাকে পরিত্যাগ করাই বিধেয়। কারণ…
অনলাইন প্রতিনিধি:- নারী নির্যাতন কিংবা মহিলা সংক্রান্ত অপরাধের সংখ্যা রাজ্যে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি…