অনলাইন প্রতিনিধি :- নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে পালিত হলো ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের আপসহীন ধারার উজ্জ্বল নক্ষত্র নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৮তম জন্মবার্ষিকী। নেতাজী জন্মজয়ন্তীকে কেন্দ্র করে সরকারী এবং বেসরকারী পর্যায়ে হয়েছে অজস্র অনুষ্ঠান। মূল অনুষ্ঠান হয়েছে আগরতলার নেতাজী সুভাষ বিদ্যানিকেতনে। বারবারের মতো এবারও তাদের শোভাযাত্রা ছিল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। শোভাযাত্রাটিবিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে যাত্রাস্থলেই ফিরে যায়। এ দিন বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। তিনি বলেন, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর দেশপ্রেম আজও দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করে। স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর বীরত্ব ও সাহসিকতা ছিল অতুলনীয়। তিনি আরও বলেন, আজকের দিনটি সবার কাছে এক গৌরবের দিন। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর অবদানের কথা স্মরণ করেই প্রধানমন্ত্রীনরেন্দ্র মোদি ২০২১ সালে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিন ২৩ জানুয়ারীকে ‘পরাক্রম দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেন। সেই থেকে ২৩ জানুয়ারী সারা দেশে ‘পরাক্রম দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। নেতাজী সুভাষ বিদ্যানিকেতন মাঠে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, সমাজসেবী রাজীব ভট্টাচার্য, কর্পোরেটর রত্না দত্ত, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসারভট্টাচার্য,
বিদ্যানিকেতনের প্রধানশিক্ষক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিগণ জাতীয় পতাকা ও আজাদ হিন্দ বাহিনীর পতাকা উত্তোলন করেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠন করেছিলেন। আজাদ হিন্দ বাহিনীর ৭৫ বছর পূর্তিতে লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। আইএনএ মিউজিয়াম স্থাপন করা হয়েছে। ইন্ডিয়া গেটে নেতাজীব সুভাষ চন্দ্র বসুর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বীর সেনানীদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন নেতাজী সুভাষ বিদ্যানিকেতনের প্রশংসায় বলেন, এই বিদ্যানিকেতনের সুনাম শুধু রাজ্যেই নয়, দেশ বিদেশেও ছড়িয়ে আছে। শিক্ষা, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি চর্চায় বিদ্যানিকেতনের ছাত্রছাত্রীদের সাফল্য রাজ্যবাসীকে গর্বিত করে আসছে। ১৯৪৮ সালের ৩ মার্চ এই বিদ্যানিকেতন স্থাপিত হয়েছিল। নেতাজী জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের এই শোভাযাত্রার সূচনা হয় ১৯৫১ সালে। নেতাজী জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লু আগরতলার মহারাজগঞ্জ বাজারে নেতাজী মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। নেতাজী মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর রাজ্যপাল সাংবাদিকদের জানান, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজীর অবদান স্মরণীয় হয়ে আছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠন করেছিলেন। রাজ্যপাল একটি সুন্দর সমাজ গঠনে যুব সম্প্রদায়কে নেতাজীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হওয়ার আহ্বান জানান। পরে রাজ্যপাল নেতাজী জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে নেতাজী সুভাষ বিদ্যানিকেতনের আয়োজিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি দেখেন।
এ দিন ২৩ জানুয়ারীর সকালে নেতাজী সুভাষ বিদ্যানিকেতনের উদ্যোগে যে শোভাযাত্রা রাজধানী পরিক্রমা করেছে এতে নজর কেড়েছে ২০০১ সালের নেতাজী স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের অভিনব ট্যাবলো। এই ট্যাবলোতে ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। ২০০১ ব্যাচের ছাত্রছাত্রীরা তাদের ট্যাবলোর মাধ্যমে জানান দিয়েছে যে, মানুষ গড়ে তোলার কারিগরদের অবদান অপরিসীম। এটা বলার অবকাশ নেই। ওই সময়কার সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের স্মরণ করা হয়েছে এ দিন। এ জন্য মন থেকে তাদের ধন্যবাদ জানান ছাত্রছাত্রীরা। ছাত্রছাত্রীদের অভিমত, থ্যাংক ইউ ফর এভরিথিং, স্যার, দিদিমণি। এ দিনের এই ট্যাবলো সবার নজর কেড়েছে। প্রদেশ বিজেপি অফিসেও এ দিন যথাযথ মর্যাদায় নেতাজীর জন্মজয়ন্তী পালিত হয়েছে। সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাজীব ভট্টাচার্য। সেখানে নেতাজীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন দলের সাধারণ সম্পাদকগণ সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। জিরানীয়া মহকুমাতেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করা হয়। করইবনস্থিত নেতাজীর সুভাষ প্রোগ্রেসিভ বিদ্যালয়ের উদ্যোগে বের করা হয় শোভাযাত্রা। তা মোহনপুর নলগড়িয়া হয়ে যাত্রাস্থলেই ফিরে আসে। শোভাযাত্রায় রাম, লক্ষ্মণ, সীতা, হনুমান সেজে ছাত্ররা অংশ নেয়। নলগড়িয়াস্থিত সুকান্ত একাডেমি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়েও এ দিন নেতাজী জন্মজয়ন্তী পালন করা হয়। আইএনটিইউসির কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও এ দিন যথাযোগ্য মর্যাদায় নেতাজী জন্মজয়ন্তী পালিত হয়েছে। শ্রমিকদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি বিপ্লব কুমার রায়। আইএনটিইউসির পতাকা উত্তোলন করেন ইন্টাকের সাধারণ সম্পাদক সাধন দাস।ইনটেকের বিভাগীয় অফিসগুলিতেও কর্মসূচি পালিত হয়েছে। পুরাতন মোটরস্ট্যান্ডস্থিত ত্রিপুরা মোটর কর্মী সমিতির অফিসেও কর্মসূচি হয়েছে। অনুষ্ঠানে সমিতির পতাকা উত্তোলন করেন সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি সুভাষ সাভ চন্দ্র মজুমদার। ভোলানন্দপল্লীস্থিত শ্রীকৃষ্ণ মিশন স্কুলেও এ দিন নেতাজী জন্মজয়ন্তী পালন করা হয়েছে। স্কুলের প্রাত ও বিভাগের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিদ্যালয়ের অধিকর্তা দীনবন্ধু দাস। স্কুলের পতাকা উত্তোলন করেন বিদ্যালয়ের প্রশাসক আশীষ কুমার দেবনাথ। এ দিন যথাযথ মর্যাদা সহ সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটির উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এই দিনটি প্রতিপালিত হয়। সকালে মিউজিয়ামের সামনে ক্ষুদিরাম মূর্তির সন্নিকটে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কমিটির সদস্য সহ উপস্থিত সকলে নেতাজীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অনুষ্ঠানে সুভাষ চন্দ্রের জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে আলোচনা করেন কমিটির সম্পাদক হরকিশোর ভৌমিক। প্রতি বছরের মতো এবারও তেইশে জানুয়ারীতে বিশালগড়ের রাজপথে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করলো বিশালগড়ের অন্যতম বনেদি স্কুল আনন্দমার্গ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়। এ দিন স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে এই শোভাযাত্রাটি বিশালগড় বাজার হয়ে অফিসটিলা ঘুরে পুনরায় বাজার হয়ে বিশালগড় স্ট্যান্ড থেকে বিদ্যালয়ে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ব্যাপক সংখ্যায় অংশগ্রহণ করে। কর্মসূচির বিষয়ে আনন্দমার্গ বিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান ননীগোপাল দেবনাথ বলেন, প্রায় ৩০টির কাছাকাছি থিম এই শোভাযাত্রায় প্রদর্শিত হয়েছে যেখানে প্রায় এক হাজারের উপর বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করেছে। নেতাজী জন্মজয়ন্তীতে কল্যাণপুরে স্থাপিত হলো এই মহান বিপ্লবীর পূর্ণাবয়ব মূর্তি। কল্যাণপুর হাসপাতাল এবং সবজি বাজারের মধ্যবর্তী স্থানে এই মূর্তি স্থাপন করা হয়। উদ্বোধন করেন বিধায়ক পিনাকী দাস চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন কল্যাণপুর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সোমেন গোপ, ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব পাল, পঞ্চায়েত উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান ইন্দ্রাণী দেববর্মা, পূর্ণেন্দু ভট্টাচার্য প্রমুখ। এ দিন কল্যাণপুর বিজেপি মণ্ডলের উদ্যোগেও নেতাজী জন্মজয়ন্তী পালিত হয় কল্যাণপুর বিজেপি মণ্ডল অফিসের সামনে। সেখানেও বিধায়ক ছাড়া মণ্ডল সভাপতি জীবন দেবনাথ সহ অন্যরা ছিলেন। কৈলাসহরেও সাড়ম্বরে পালিত হয়েছে নেতাজীর জন্মজয়ন্তী। শহরের প্রতিটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এ দিন নেতাজী বিদ্যাপীঠে একত্রিত হয়। সেখান থেকে বের হয় র্যালি। তা শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে নেতাজী কর্নারে এসে শেষ হয়। সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলাশাসক রাজীব দত্ত। সঙ্গীত পরিবেশনা করেন প্রাক্তন সৈনিক লীগের সদস্যরা। মঙ্গলবার উত্তর জেলা প্রশাসন, তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর, বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর ও ধর্মনগর পুর পরিষদের যৌথ উদ্যোগে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৮তম চাদরে জন্মজয়ন্তী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হলো ধর্মনগরে। প্রতি বছরের মতো এ বছরও মূল অনুষ্ঠানটি হয় ধর্মনগর সেন্ট্রাল রোডে নেতাজী মূর্তির পাদদেশে। অনুষ্ঠানের সূচনা করেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক ও সমাহর্তা দেবপ্রিয় বর্ধন, মহকুমাশাসক শ্যামজ্যোতি জমাতিয়া, ধর্মনগর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন প্রদ্যোত দে সরকার সহ অন্যরা। এ দিন পরবর্তী অনুষ্ঠানটি হয় ধর্মনগর বিবিআই মাঠে। জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে সেখানে দেশনায়ক নেতাজীকে স্মরণ করা হয় যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে। এরপর উত্তর জেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে আগত শিল্পীরা বিভিন্ন নৃত্যশৈলী ও দেশনায়ক নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু ও ভারতবর্ষের অন্যান্য মণীষীদের সাজে সজ্জিত হয়ে একটি শোভাযাত্রা ধর্মনগরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে। এ দিন উত্তর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে কদমতলাস্থিত তৃণমূল ভবনে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে দেশনায়ক নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৮তম জন্মজয়ন্তী পালন করা হয়। নেতাজীর প্রতিকৃতিতে মাল্যদানের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তর জেলা সভাপতি বিমল নাথ। সেসঙ্গে দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন বাগবাসা ব্লক মাইনরিটি তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সভাপতি আব্দুল রসিদ।
অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…
অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…
অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…
দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…
২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…