নয়া চমকের অপেক্ষা।

 নয়া চমকের অপেক্ষা।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

বিজেপি মানেই চমক।নরেন্দ্র মোদি মানেই চমক।তা স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ হোক কিংবা রাত আটটায় নোটবন্দির ভাষা কিংবা রাত বারোটায় জিএসটি চালুর সূচনা সব কিছুতেই চমক থাকে নরেন্দ্র মোদির। এবার কি আরেক চমক অপেক্ষা করছে দেশবাসীর জন্য! হঠাৎ করে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার মধ্য দিয়ে ফের কোন চমক কি রয়েছে? আপাতত অপেক্ষায় দেশবাসী। বিরোধী দলগুলির এই মুহূর্তে বৈঠক চলছে মুম্বাইয়ে। বিরোধী জোট ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। মোদির বিরুদ্ধে তারা ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিয়েছে। এতেই কি মোদি এবং বিজেপি তাদের স্ট্র্যাটেজি বদলাচ্ছে? চলতি বছরের শেষদিকে পাঁচ রাজ্যে ভোট। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা এবং মিজোরামে বিধানসভা ভোট চলতি বছরের শেষদিকে। আর এই সমস্ত রাজ্যের বিধানসভা ভোটকে ঘিরে অনেক আগে থেকেই যুযুধান দুই শিবিরই। তাহলে কি এই পাঁচ রাজ্যের ভোটের দিকে চেয়ে বিজেপি হঠাৎ করে স্ট্যাটেজি বদল করে ফেলল ? গত মাসে কেবলমাত্র সংসদের অধিবেশন শেষ হয়েছে। মণিপুর ইস্যুতে প্ৰথম হৈ হট্টগোল চললেও সরকার তার সংখ্যাগরিষ্ঠতার নিরিখে একের পর এক বিল পাস করিয়ে নিয়েছে সংসদে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটা বিল ছিল। দিল্লী সার্ভিসেস বিল। এই দিল্লী সার্ভিসেস বিল নিয়ে আলোচনাকালে, এমনকী ভোটাভুটির সময়ও সরকারপক্ষ এবং বিরোধীপক্ষে ব্যাপক তরজা হয়েছে। বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ চেহারা দেখেছে গোটা দেশ। কিন্তু হঠাৎ কী হল যে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকতে হল সরকারপক্ষকে। শোনা যাচ্ছে এই অধিবেশনেই বেশকিছু বিল সং পেশ করা হবে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সরাসরি তা পাস করিয়ে নেবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হতে পারে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে বিল, এক দেশ এক ভোট নিয়ে বিল। অন্তত বিরোধীরা এ রকমই অনুমান করছে। কিন্তু শেষপর্যন্ত তা নাও হতে পারে। কেননা নরেন্দ্র মোদি তার কোন তুরুপের তাস তার আস্তিনে গুটিয়ে রেখেছেন তা বলা মুশকিল। গত নয় বছরে নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি দল এমন কিছু ঘোষণা করেছেন এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা বিরোধীরা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি। অর্থাৎ চমক ছিল নরেন্দ্র মোদির ঘোষণায়। বারবারই তা প্রকাশ্যে এসেছে। যেমন জনধন যোজনার ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী করেছেন তার স্বাধীনতার দিবসের ভাষণে। নোট বাতিলের ঘোষণা করেছেন দেশবাসীর উদ্দেশে আচমকা টেলিভিশন ভাষণে। তেমনি জিএসটি চালুর সূচনাও হয়েেেছ রাত বারোটায়। এগুলি সবকিছুই ছিল চমক। প্ল্যানিং কমিশন ভেঙে নীতি আয়োগের ঘোষণা – তাও ছিল স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে। অর্থাৎ গত নয় বছর বিজেপির শাসনকালের দিকে তাকালে শুধু চমক আর চমক।তাই বিরোধীরা এবারও মনে করছে যে, হঠাৎ করে সংসদের অধিবেশন ডেকে কী চমক আনতে চলেছেন মোদি। তবে ইতোমধ্যেই ইঙ্গিত মিলেছে ‘এক দেশ এক ভোট’ নিয়ে রিপোর্ট পেশ করা হতে পারে সংসদে। এ জন্যই হঠাৎ করে এ সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করে কেন্দ্র। এর মাথায় বসানো হয়েছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে। সম্ভবত সংসদের আসন্ন অধিবেশনে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করবে রামনাথ কোবিন্দ’র নেতৃত্বাধীন কমিটি।আবার এমনও হতে পারে, বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে চন্দ্রায়ন – ৩ নিয়ে দেশের সাফল্য নিয়ে আলোচনার জন্য। যেমনটা হয়েছে মণিপুর রাজ্যের বিধানসভা অধিবেশনে। মণিপুরে অশান্তি, হিংসা নিয়ে একটা লাইন আলোচনা হয়নি বিধানসভায়। মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য বিধানসভা ডেকে চন্দ্রায়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে অধিবেশনে। মনে করা হচ্ছে, সংসদের আসন্ন অধিবেশনে ‘এক দেশ এক ভোট নিয়ে শেষপর্যন্ত যদি কোন বিল / রিপোর্ট ইত্যাদি আসে এমনও হতে পারে – পাঁচ রাজ্যের ভোটের সাথে লোকসভা ভোটও হতে পারে। তবে সবটাই ‘যদি’, ‘কিন্তু’ ইত্যাদির উপর নির্ভর করছে। প্রসঙ্গত, সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে আগামী ১৮-২২ সেপ্টেম্বর।
এমন সময়ই এই চমকপ্রদ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে যখন মুম্বাইয়ে বিরোধীদের বৈঠক চলছে। এটাও এক চমক। মিডিয়ার গোটা নজর এক নিমেষে সরকারের ঘোষণার দিকে সরে আসে এই এক ঘোষণায়। বিরোধীরা সবাই একসুরে আশঙ্কা করছে হয়ত ‘এক দেশ এক নির্বাচন – নিয়ে কোনও বড়সড় ঘোষণা দিতে চলেছে কেন্দ্র। এ জন্য বিশেষ অধিবেশন। যদিও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, বিরোধীদের এত ঘাবড়াবার কী আছে। আলোচনা হোক না! এমন তো নয় যে, এখনই তা চালু হতে চলেছে। আলোচনা হতে পারে, বিতর্ক হতে পারে। তবে বলাই যায়, আগামী ১৮ – ২২ সেপ্টেম্বর বড় চমক অপেক্ষা করছে দেশের জন্য। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে হতে পারে মোদির এটা বড়সড় তুরুপের তাস, যা দীর্ঘকাল তিনি জমিয়ে রেখেছেন তার আস্তিনে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.