অনলাইন প্রতিনিধি :-রেলপথে চলাচল করা আবারও ঝুঁকির হয়ে দাঁড়িয়েছে।মাঝখানে বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবারও নতুন করে রেলপথ ও চলন্ত যাত্রীট্রেনে চুরি, ছিনতাইবাজি মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। তার সঙ্গে যাত্রীদের নেশাগ্রস্ত করে তাদের যথাসবস্ব লুটে নেওয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছে।এমন ঘটনা ঘটেছে গত ১৮ অক্টোবর।ফলে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে রেলযাত্রীদের মধ্যে।দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।ফের প্রশ্ন উঠেছে রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে।
২০০৮ সালের ৫ অক্টোবর রাজ্যের রাজধানী শহর আগরতলা মিটার গেজ রেলপথে যুক্ত হয়।তার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই নিরাপত্তা নিয়ে দেখা দেয় হুমকি।নানা ধরনের হুজ্জতি বাড়তে
থাকে রেলপথে আগরতলা যুক্ত হওয়ার পর থেকেই। শুরু হয় রেলপথ ও স্টেশনে যাত্রীদের বিভিন্ন সামগ্রী চুরি এবং ছিনতাই করা।একাংশ যাত্রীর ভাব জমিয়ে তাদের সাধারণ খাবার দেওয়ার নামে নেশাদ্রব্য সেবন করিয়ে লুট করা হতে থাকে।২০১৬ সালের মে মাসে আগরতলা ব্রডগেজ রেলপথে যুক্ত হওয়ার পর এই সমস্যা আরও বাড়তে থাকে।ধাপে ধাপে বিশালগড় সহ রাজ্যের দক্ষিণাংশ উদয়পুর, বিলোনীয়া,সাব্রুম ব্রডগেজ রেলপথে সংযুক্ত হয়েছে।এই ফাঁকে কিন্তু উল্লেখিত সমস্যা বাড়ার বদলে কিছুটা কমতে থাকে।কেননা এর মধ্যে রাজ্যের রেল যাত্রীদের বড় অংশ ট্রেন চলাচলের নানা ঝামেলা সম্পর্কে অবগত হয়ে যান।ফলে তারা রেল সফরের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে শুরু করেন।এমতাবস্থায় যাত্রীদের বিপদে পড়ার হার কমতে শুরু করে।পাশাপাশি এ নিয়ে রেলের নিজস্ব সুরক্ষা বাহিনী আরপিএফ এবং রাজ্য রেল পুলিশ তথা জিআরপির উদ্যোগে প্রয়োজনীয় তৎপরতা শুরু হয়।চলে প্রচার। সময়ের সঙ্গে তাল না থাকায় এই ক্ষেত্রে তৎপরতা বাড়ার বদলে কমতে শুরু হয়েছে।তার সঙ্গে নতুন করে বিপদ বাড়ছে রেল যাত্রীদের। নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা কমার মূলে রয়েছে লোকবলের সংকট।রাজ্যে রেলপথ ও স্টেশনের বহর বাড়লেও রেলের নিজস্ব সুরক্ষা বাহিনী অথবা রাজ্য রেল পুলিশের লোকবল কিন্তু সেইভাবে বাড়ানো হয়নি। মাঝে মধ্যেই লোকবল কমে যায় বলে খবর। এই কারণে যাত্রী নিরাপত্তা উপেক্ষিত হয়ে চলছে।
অন্যদিকে যাত্রীদের একাংশের মধ্যেও রেল সফরের ক্ষেত্রে নিজের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে উদাসীনতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বিপদ নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।১৮ অক্টোবর শিয়ালদহ- কাঞ্চনজঙ্ঘা দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেনের এক মহিলা যাত্রী বিপাকে পড়েন অনুরূপভাবে।প্রতারণার ফাঁদে পড়ে তার প্রায় যথাসর্বস্ব খোয়া গেছে।লুট হয়ে গেছে মোবাইল ফোন, নগদ অর্থ সহ তার সঙ্গে থাকা বিভিন্ন সামগ্রী।
প্রাপ্ত খবর অনুসারে রাজ্যের খোয়াই জেলার একই মহকুমা এবং থানার অফিসটিলা এলাকার বাসিন্দী লক্ষ্মী দেবনাথ (৪৫) ১৭ অক্টোবর ১৩১৭৩ শিয়ালদহ – সাব্রুম কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনে চাপেন বাড়ি আসার উদ্দেশে। পরদিন ১৮ অক্টোবর তিনি আমবাসা স্টেশনে নামবেন বলে স্থির করেন।কেন না এই ট্রেনটি তেলিয়ামুড়া স্টেশনে বিরতি দেয় না।তবে লক্ষ্মীদেবীর পক্ষে আমবাসা দূরে থাক, তার পরের স্টেশন আগরতলা অথবা উদয়পুরেও নামা সম্ভব হয়নি।তিনি আঠারো অক্টোবর রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ট্রেনটির শেষ গন্তব্য সাক্রম স্টেশনে পৌঁছে যান।ঘটনা হলো তখনও পর্যন্ত তার কোনও হুঁশ আসেনি।পরে ‘ট্রেনে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করেন ট্রেনের সাফাই কর্মীরা।তারপর শুরু হয় দৌড়ঝাঁপ।চলে পুলিশি তৎপরতা।এর আগে চৌদ্দ অক্টোবর সাক্রম স্টেশনে কাঞ্চনজঙ্গা এক্সপ্রেসেরই সাধারণ কোচের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। মোট কথায় রেলযাত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে নতুন করে।
রেলের সঙ্গে যুক্ত অনেকের বক্তব্য,বিশেষত দূরপাল্লার ট্রেনে সফরকালে যাত্রীদের সজাগ ও সতর্ক থাকা প্রয়োজন।তা না হলেই বিপদে পড়ার আশঙ্কা আছে। কারণ চলন্ত ট্রেনে চোর ছিনতাইকারীরা নিজেদের কাজ হাসিল করতে নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়। পাশাপাশি দূরপাল্লার ট্রেনের প্রায় দেড় হাজার যাত্রীর প্রতি যথাযথ নজর রাখা সামান্য কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মীর পক্ষে বাস্তবে অসম্ভব।
আর এই সুযোগটা নিয়েই কাজ হাসিল করে প্রতারক, চোর, ছিনতাইবাজের দল। তাদের একাংশ যাত্রীদের মধ্যে বাছাই করা কয়েকজনের সঙ্গে অযাচিত ভাব জমায়।নানা অছিলায় তাদের বাছাই করা যাত্রীদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে চায়।আর এই ফাঁদে পা দিলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিপদ অনিবার্য।সবচেয়ে বেশি বিপদের আশঙ্কা আছে তাদের দেওয়া কোনও খাবার গ্রহণ করলে।এই খাবারের সঙ্গে মেশানো থাকে ঘুমের ওষুধ এবং নেশা সামগ্রী। ফলে ফাঁদে পড়ে কেউ তাদের দেওয়া খাবার খেলে চোখ ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। শরীর নেশাগ্রস্ত এবং অচৈতন্য হয়ে যায়।এরপর সুযোগ বুঝে সংশ্লিষ্ট যাত্রীর সব কিছু উজাড় করে দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রতারকরা যে যাত্রীর সঙ্গে ভাব জমায় সেই যাত্রীকে উপর থেকে দেখা নতুন প্যাকেট থেকে বিস্কুট ইত্যাদি দেয়।সন্দেহ দূর করতে তার নিজেরাও এই প্যাকেট থেকেই বিস্কুট অথবা অন্য খাদ্য সামগ্রী নিয়ে খায় এ সবই ঘটে একেবারে চোখের সামনে। ফলে অবিশ্বাস করার কোনও অবকাশই থাকে না। বাস্তবে প্রতারকরা ইঞ্জেনকশনের মাধ্যমে অথবা অন্য কোনও উপায়ে নির্দিষ্ট বিস্কুট অথবা খাদ্য সামগ্রীতে নেশাদ্রব্য, ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। অবিশ্বাস্য দক্ষতার সঙ্গে এই কাজ করে চলছে প্রতারকরা। আর তাদের বিশ্বাস করে ফাঁদে পড়ে ঠকছে বহু রেলযাত্রী। এ নিয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হয় উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মার সঙ্গে। তিনি উল্লিখিত সমস্যার কথা স্বীকার করে কার্যত অসাহয়ত্ব প্রকাশ করেন।বলেন,এই ক্ষেত্রে যাত্রীদের সতর্কতাই বিপদ থেকে বাঁচার প্রধান অবলম্বন হতে পারে।
অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…
অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…
অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…
দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…
২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…