পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থাপনায় রোল মডেল ত্রিপুরা : মুখ্যমন্ত্রী

 পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থাপনায় রোল মডেল ত্রিপুরা : মুখ্যমন্ত্রী
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজধানী আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী বললেন, পঞ্চায়েতস্তরে উল্লেখযোগ্য কাজের সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ ত্রিপুরা রাজ্য মোট সাতটি জাতীয় পঞ্চায়েতিরাজ পুরস্কার পেয়েছে।এ রাজ্যের সামগ্রিক বিকাশ হচ্ছে বলেই দেশের প্রায় আড়াই লক্ষ পঞ্চায়েতের মধ্যে এ রাজ্যেরই বিভিন্ন পঞ্চায়েতগুলি জাতীয়স্তরের পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে।গ্রামোন্নয়ন (পঞ্চায়েত) দপ্তরের উদ্যোগে একদিন ছিলো রাজ্যভিত্তিক পুরস্কার প্রদান এবং রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েতের মধ্যে কম্পিউটার প্রদান অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানেরই উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা আরও বলেন, বর্তমান সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে ‘ডিজিটাল পঞ্চায়েত, শক্তিশালী পঞ্চায়েত গঠন করা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন,অর্থনৈতিক
লেনদেন, রেকর্ড সংরক্ষণ ইত্যাদি কাজগুলি সহজ উপায়ে করার জন্য সরকার ই-গভর্ন্যান্সের উপর বিশেষভাবে জোর দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল ইন্ডিয়ার স্লোগানকে শক্তিশালী রূপ দিতে রাজ্যের প্রতিটি পঞ্চায়েতকে ই-অফিস ব্যবস্থার সাথেও যুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, স্বচ্ছ পঞ্চায়েত ব্যবস্থাপনার ভিত্তি হিসেবে পঞ্চায়েতগুলির পরিকল্পনাও অনলাইন পোর্টালে লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে।যে কারণে পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থাপনা
পরিচালনার ক্ষেত্রে গোটা দেশের কাছে ত্রিপুরা আজ রোল মডেল হয়ে উঠেছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন,প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশনায় দেশের পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এসেছে।স্বাধীনতা লাভের পর থেকে দেশে পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় জনগণের অংশগ্রহণকে প্রাধান্য দিয়ে বাস্তবধর্মী কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে।
এই পরিকল্পনারই নাম দেওয়া হয়েছে জন পরিকল্পনা কর্মসূচি বা পিপল প্ল্যান ক্যাম্পেইন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সাল থেকে রাজ্যে পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটেছে। নতুন নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে এবং তা বাস্তবায়িতও করা হচ্ছে। তিনি বলেন, গোটা দেশের পঞ্চায়েত ডিভেলিওশন ইন্ডেক্স রিপোর্টে ত্রিপুরা রাজ্য প্রথম দশটি রাজ্যের মধ্যে সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে। এক্ষেত্রে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ এবং স্থায়ী সম্পদ তৈরির মাধ্যমে পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে সাজিয়ে তোলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী জনপ্রতিনিধিদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, জনগণের সমস্যাগুলি নিরসনে রাজ্যে ‘আমার সরকার’ নামে একটি পোর্টাল চালু করা হয়েছে।এ রাজ্যে এই পোর্টালের সঠিক বাস্তবায়নের ফলে দেশের অনেক রাজ্য’আমার সরকার’ পোর্টাল তাদের রাজ্যেও চালু করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করছে।তিনি বলেন, সরকারী পরিষেবাগুলিকে আরও দ্রুত এবং কার্যকরভাবে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এ দিন ৪৭৫টি পঞ্চায়েতে কম্পিউটার প্রদান করা হচ্ছে এই অনুষ্ঠান থেকে। পাশাপাশি পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার জন্য পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি সহ সর্বস্তরের কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির উপর প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এ দিন পঞ্চায়েত দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং বলেন, রাজ্যের পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থায় বর্তমানে এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। উন্নয়নের এই ধারা বজায় রাখতে হবে। অনুষ্ঠানে পঞ্চায়েত স্বশক্তিকরণে জাতীয়স্তরে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত গোমতী জেলা, অমরপুর পঞ্চায়েত সমিতি, অমরপুর ব্লকের থাকছড়া গ্রাম পঞ্চায়েত, রাজকাও ভিলেজ কমিটি, দেববাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত, রূপাইছড়ি ব্লকের দক্ষিণ মনুবনকুল ভিলেজ কমিটি এবং কুমারঘাট ব্লকের বেতছড়া গ্রাম পঞ্চায়েতকে সম্মানিত করা হয়। একই সাথে রাজ্যের বিভিন্ন স্তরে কৃতিত্ব অর্জনকারী পঞ্চায়েতগুলিকেও পুরস্কৃত করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিরা জেলা, ব্লক, পঞ্চায়েত সমিতি, পঞ্চায়েত এবং ভিলেজ কমিটির প্রতিনিধিদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন। এছাড়াও এ দিন মুখ্যমন্ত্রী রিমোটের বোতাম টিপে ভার্চুয়ালি স্টেট পঞ্চায়েত রিসোর্স সেন্টার ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করেন এবং ৪৭৫টি পঞ্চায়েতের মধ্যে কম্পিউটার সেট বিতরণ কর্মসূচির সূচনা করেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.