পঞ্চায়েতের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে!!

 পঞ্চায়েতের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

লোকসভা ভোট চলছে।এরই মধ্যে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।আগামী ৪ঠা জুন লোকসভা ভোটের ফলাফল।এর উপরই পঞ্চায়েত ভোটের অনেক কিছুই নির্ভর করছে। ফলাফল কেন্দ্রের শাসকদলের অনুকূলে গেলে রাজ্যে কি রাজনৈতিক পরিস্থিতি হবে,ফলাফল কেন্দ্রের শাসকদলের বিপক্ষে গেলে পঞ্চায়েত ভোটের পরিস্থিতি কি হবে তা অনেকাংশে নির্ভর করছে। এই দুইয়ের মধ্যে সাযুজ্যতা রেখেই রাজ্য নির্বাচন দপ্তর পঞ্চায়েত ভোটের উদ্যোগ নিচ্ছে।পঞ্চায়েত ভোটের সাথে এডিসির ভিলেজ কাউন্সিলের ভোটও হবে কিনা সে নিয়ে এখনও কোনও তেমন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এডিসির ভিলেজ কাউন্সিল নির্বাচনও গত বছরই পেন্ডিং ছিল।মনে করা হয়েছিল যে বিধানসভা ভোটের পরপরই রাজ্যে এডিসির ভিলেজ কাউন্সিল নির্বাচন হবে।কিন্তু তা হয়ে উঠেনি।এবার রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের সাথে ভিলেজ কাউন্সিলেও ভোট হবে কিনা তাও এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।কোনও একটি রাজ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পঞ্চায়েতের গুরুত্ব অপরিসীম।পঞ্চায়েত যার হাতে রাজ্যও তার হাতে এরকম একটা ধারণা বা প্রেক্ষাপট চালু রয়েছে। পঞ্চায়েত স্তরে সব রাজনৈতিক দলই চায় নিজেদের দখল নিতে। কেননা গ্রামের একেবারে তৃণমূলস্তরে কাজ করে পঞ্চায়েত।মানুষের দৈনন্দিন জীবনের নানা সুখ, দুঃখ, চাওয়া-পাওয়া ইত্যাদি অনেক দাবি পঞ্চায়েত স্তর থেকেই উঠে আসে।অর্থাৎ একটা রাজ্যের রাজনীতির পালস্ বোঝা যায় পঞ্চায়েত থেকেই। ২০১৮ সালের আগে এ রাজ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে ভিলেজ কাউন্সিল, পঞ্চায়েত সমিতি, জিলা পরিষদ সর্বত্রই বামেদের রমরমা ছিল।ইতিউতি কিছু আসন সে সময়কার বিরোধী কংগ্রেসের দখলে ছিল। অর্থাৎ দেখা যায় যখনই যে ক্ষমতায় থাকে পঞ্চায়েতের সিংহভাগ আসনই তাদের দখলে থাকে।২০১৮ সালে রাজ্যের গদিতে বিজেপি আসার পর ২০১৯ সালে যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয় তাতে একেবারে সিংহভাগ আসনেই বিজেপি প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়ে যায়। বিরোধীদের নাম নিশানা পর্যন্ত নেই।পঞ্চায়েত নির্বাচন রাজ্যে নির্বাচন কমিশনের নজরদারিতে হয়।ফলে শাসকদল যে এই সমস্ত নির্বাচনে দাদাগিরি দেখাবে তা বলাই বাহুল্য।পঞ্চায়েত আসনে মাঠ দখলের লড়াই, টিকে থাকার লড়াই।যে মাঠে টিকে থাকবে সেই জিতবে। মানুষের একবারে মৌলিক সমস্যা নিয়ে পঞ্চায়েত স্তরে ভোট হয়।সুতরাং মানুষের সাথে নিবিড় সম্পর্ক থাকলেই তবেই পঞ্চায়েত ভোটে সাফল্য আসে।
তবে ২০১৯ সালে যে কায়দায় পঞ্চায়েত ভোট হয় তা যেন এবার না হয় তা সুনিশ্চিত করতে হবে নির্বাচন দপ্তরকে। বেশিরভাগ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শাসকদলের প্রার্থীরা জয় লাভ করা আসলে সুস্থ গণতন্ত্রের পক্ষে পরিচায়ক নয়।সুতরাং পঞ্চায়েতে সব রাজনৈতিক দলই যাতে নির্ভয়ে,বিনা বাধায় অন্তত প্রার্থীপদ নিয়ে নির্বাচনে লড়াই করতে পারে তা সুনিশ্চিত করা নির্বাচন দপ্তরের কাজ।
যদিও নির্বাচন দপ্তরের মতে, তারা শুধু রাজ্য সরকারের কাছে ভোটের দিনক্ষণ বা প্রস্তুতির বিষয়ে প্রস্তাব রাখবে।সরকার ঠিক করবে নির্বাচন কবে হবে।আগামী জুলাই-আগস্ট মাসেই হয়তো নির্বাচন হতে পারে।এর মানে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে।দাবি আপত্তি থাকবে।এরপরই চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে।
তবে যতটুকু খবর, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রস্তুতিই নিচ্ছে রাজ্য নির্বাচন দপ্তর। সম্ভবত জুলাই-আগস্ট মাসে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হবে ধরে নিয়েই এগুচ্ছে দপ্তর।তবে সবটাই নির্ভর করবে রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর।আপাতত রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট অবাধ, শান্তিপূর্ণ করাই নির্বাচন দপ্তরের লক্ষ্য হওয়া উচিত।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.