পণ্যমূল্য ঊর্ধ্বমুখী ক্রেতার নাভিশ্বাস!!
অনলাইন প্রতিনিধি:- বাজারে শাক- সবজি সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আগুন মূল্য কমার কোনও লক্ষণ নেই। দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজোর পর কালীপুজো- দীপাবলিতে বাজারের আগুন মূল্যে মানুষের দুর্ভোগ আরও চরমে উঠেছে। রাত পোহালেই ভাইফোঁটা। বাজারের অগ্নিমূল্যে বোনেদের ভাইফোঁটার খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করতে গিয়ে এখন নাভিশ্বাস অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শারদোৎসবের শেষ লগ্নে এখন কার্তিক মাসের অর্ধেক পেরিয়ে গেছে। শুরু হয়েছে নভেম্বর মাসও। বলতে গেলে এই সময়টায় শীত পড়া শুরু হয়। তবে শীত পড়া শুরু হয়েও গেছে। অনেক রাতের দিকে শীত অনুভূতও হচ্ছে। কিন্তু মরশুম পরিবর্তনে আগরতলার বাজারে শাক- সবজির মূল্যের উপর তার সামান্য প্রভাবও নেই। বাজারে সবজির মূল্য এখনও লাগামছাড়াই ক্রেতার কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে। শুধু সবজির মূল্যই নয়, বাজারে মাছ মাংসের মূল্যেও আকাশছোঁয়া। অনেক আগেই গরিব ও নিম্ন রোজগারের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা নাগালের বাইরে চলে গেছে। বাজারের বল্লাহীন মূল্য বৃদ্ধির কারণে নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের অবস্থাও জেরবার। বাজারে শাক-সবজি, মাছ মাংস, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অগ্নিমূল্যে বাজারে গিয়ে ক্রেতার হাল পুড়লেও রাজ্য সরকার, প্রশাসন যেন ঠুটো জগন্নাথ। বাজারে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আনতে ও মূল্য কমানোয় রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের কোনও বাস্তবভিত্তিক উদ্যোগ নেই। ডবল ইঞ্জিন সরকার রহস্যজনকভাবেই এ বিষয়ে নির্বিকার, নির্বাক ভূমিকা পালন করছে। এমনটাই অভিযোগ ক্ষুব্ধ ক্রেতা সাধারণের। বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাধারণ ও কম রোজগারের ক্রেতা নাগালের মধ্যে মূল্য বেঁধে রাখতে রাজ্যের ডবল ইঞ্জিনের সরকারের কোনও পরিকল্পনাই নেই। আর সে কারণে একাংশ অসাধু ব্যবসায়ীও নানা অজুহাত খাড়া করে দিনের পর দিন মূল্য বৃদ্ধিকে যেন আরও সর্বোচ্চ চূড়ায় নিয়ে যাচ্ছে। ক্রেতার নাগালের মধ্যে মূল্য রাখার জন্য রাজ্য সরকার ও তার প্রশাসনের যদি সদিচ্ছা থাকতো তাহলে বাজারে গিয়ে মূল্য যাচাইয়ে ও ক্রয়ে ক্রেতার হাত পুড়ত না বলেই মনে করছেন ক্রেতা সাধারণ। রাজ্যে জনগণের দ্বারা, জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটা সরকার থাকলেও অথচ মূল্যবৃদ্ধির ছ্যাঁকায় বাজারে গিয়ে ক্রেতা সাধারণকে নাজেহাল হতে হচ্ছে। বাজারে সবজির আগুন মূল্য শুধু এখনই নয়। গত জুন মাস থেকে বাজারে আচমকাই সবজির মূল্য একতরফা বল্লাহীনভাবে কেবল বাড়তেই থাকে। তার মধ্যে আগষ্ট মাসের বন্যায় সেই মূল্য বৃদ্ধিকে আরও সর্বোচ্চ চূড়ায় নিয়ে যায়। বিনা বাঁধায় ব্যবসায়ীরা বন্যার অজুহাত দেখিয়ে যেমনভাবে পেরেছে বাজারে – সবজির মূল্যবৃদ্ধি করে দিয়েছে। সবজির পাইকারি ব্যবসায়ী বন্যার অজুহাত দেখিয়ে যথেচ্ছভাবে মূল্যবৃদ্ধি করলেও একদিনের জন্যও রাজ্য সরকার ও তার প্রশাসনের কর্তারা বাজারে গিয়ে দেখেননি লাগামছাড়া মূল্য বৃদ্ধির রেকর্ড কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে। বিভিন্ন মহল ও ক্রেতা সাধারণের অভিমত, গত জুন মাস থেকে শুরু হওয়া বাজারে সবজির আগুন মূল্য আজ ১ নভেম্বর পর্যন্ত একটানা এতো দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকেনি। রাজ্য সরকার ও প্রশাসন যদি একটু তৎপর হতো তাহলে বাজারে গিয়ে এভাবে ক্রেতার হাত পুড়ত না বলেও অভিযোগ। আগরতলার বাজারে ঝিঙা, পটল, লতসিম, শশা, কাঁকরোল, বেগুন, লাউ, কুমড়ো, কাঁচা মরিচ, উচ্ছে, করলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি সবকিছুর মূল্য ক্রেতার নাগালের বাইরে। এখন শীত পড়া শুরু হলেও কবে বাজারে সবজির মূল্য কমে ক্রেতার নাগালের মধ্যে আসবে সে বিষয়ে বাজারের পাইকারি ও খুচরো সবজি ব্যবসায়ীরা কিছুই জানাতে পারছেন না। বাজারে মাংসের মূল্যও আগুন। আস্তা পল্ট্রির কিলো ১৬০ টাকা থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পল্ট্রির কাটা মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতিকিলো ২৬০ টাকা থেকে ২৮০ টাকায়। দেশি মোরগের মাংস আস্তা বিক্রি হচ্ছে প্রতিকিলো ৫৫০ টাকা থেকে ৫৭০ টাকায়। পাঁঠার মাংস প্রতিকিলো ১২০০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভাইফোঁটা উপলক্ষে মূল্য আরও চড়ছে। বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য দীর্ঘদিন ধরেই আকাশছোঁয়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। ভোজ্য তেলের মূল্য গত দেড় মাসে এতোটায় বৃদ্ধি পেয়েছে যে তা নজিরবিহীন। সব ধরনের ভোজ্য তেলের মূল্যে আগুন লেগেছে। চাল, ডাল, চিনি, মশলা সবকিছুরই মূল্য কেবল বাড়ছেই। পেঁয়াজের কিলো এখনও ৭০ টাকায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। আলু প্রতিকিলো ৪০ টাকার নিচে মিলছে না।