পরিকাঠামোগত উন্নয়নেই গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-দেশের অন্যান্য উন্নত রাজ্যগুলির মতো এরাজ্যেও উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এমনকী ক্রীড়া সহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ চলছে। রবিবার সেই অনুযায়ী উদয়পুরের রমেশ ইংরেজি মাধ্যম উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে মোট ৭টি প্রকল্পের শিলান্যাস এবং ভার্চুয়ালি গামারিয়া উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত দ্বিতল ভবনের দ্বারোদঘাটন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
একসাথে ৭ প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বলেন, দীর্ঘদিন শাসন ক্ষমতায় থাকলেও বর্তমান বিরোধীরা রাজ্যের স্কুলগুলির মানোন্নয়নে কোনও কিছুই করতে পারেনি।এদিক থেকে বর্তমান সরকারের মূল দৃষ্টিভঙ্গিই হলো উন্নয়ন। উন্নয়নের মাধ্যমেই আমরা মানুষের কাছে যেতে চাই। তিনি বলেন,পরিকাঠামোগত উন্নয়নে রাজ্য সরকার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। বাজেটে এজন্য মোট ২৭ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৭ হাজার কোটি টাকাই বরাদ্দ রাখা হয়েছে পরিকাঠামোগত উন্নয়নে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন,সব বিধানসভা এলাকায় উন্নয়ন করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে রাজ্য সরকার।ওয়ান ডিস্ট্রিক্ট ওয়ান প্রোডাক্ট প্রকল্পে বাধারঘাটে একটি অত্যাধুনিক শপিং মল গড়ে তোলা হবে।এছাড়াও নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার রাজ্যের প্রতিটি জেলায় একটি করে ড্রাগ ডি অ্যাডিকশন সেন্টার গড়ে তোলা হবে বলে তিনি জানান।এজন্য ডোনার মন্ত্রক থেকে ২০০ কোটি টাকা অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন,এজিএমসিতে সুপার স্পেশালিটি ব্লক গড়ে তোলা হয়েছে।বর্তমানে এই হাসপাতালে কিডনি ট্রান্সপারেন্সিদেরও সুবিধা রয়েছে। তার কথায়, ইতিমধ্যে রাজ্যে ডেন্টার কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। এই কলেজে ভবিষ্যতে ডিগ্রি পড়ারও সুযোগ হবে। জি প্লাস ১৪ অফিস বিল্ডিং নির্মাণ করা হবে।এটি নির্মিত হলে রাজ্যে একই ছাদের তলায় সমস্ত দপ্তরের আধিকারিক অফিস গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,সড়ক পথের মান উন্নয়নে রাজ্য সরকার কাজ করছে। রাজ্যে আগামী দিনে জলপথেও যান চলাচল হবে বলে তিনি জানান। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,বর্তমানে বাংলাদেশে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে।খুব শীঘ্রই এই সমস্যা মিটে যাবে। সাক্রমের মৈত্রী সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরকে কাজে লাগিয়ে সাক্রমের স্থলবন্দর এলাকায় স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হলে এতে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলে তিনি জানান।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে পানীয় জল দপ্তরের উদ্যোগ,তিন শতাংশ থেকে ৮২ শতাংশ লোকের কাছে এখন পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানীয় জলের ব্যবস্থা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, উদয়পুরে একটি নতুন করে ক্রিকেট মাঠ তৈরি করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের জনজাতিদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ২১টি একলব্য স্কুল গড়ে তোলার কাজ চলছে।এর অনুমোদনও কেন্দ্রীয় সরকার দিয়ে দিয়েছে। জনজাতি এলাকার জীবনযাত্রার মানউন্নয়নের জন্য ইতিমধ্যেই বিশ্ব ব্যাঙ্ক থেকে ১৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন যেসব প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তার মধ্যে উদয়পুর পুর পরিষদ সহ অত্যাধুনিক টাউন হল, বহুতল কমার্শিয়াল বিল্ডিংও রয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ৪৪ কোটি টাকা।রয়েছে নেতাজী সুভাষ মহাবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবন।এজন্য ব্যয় হবে ৪০ কোটি টাকা।এছাড়াও রমেশ স্কুলের বিচিত্রা হল এবং নতুন বিল্ডিং নির্মাণ।এজন্য ব্যয় হবে ৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এই প্রকল্পে মোট বরাদ্দ হয়েছে ৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, রমেশ স্কুল মাঠে সিন্থেটিক টার্ফ বসানো হবে। এজন্য ব্যয় হবে ৫ কোটি ৭৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। আরও রয়েছে রাজারবাগে উন্নতমানের মোটর স্ট্যান্ড। এজন্য ব্যয় হবে ১০ কোটি টাকা।রয়েছে ভগিনী নিবেদিতা বিদ্যালয় সংলগ্ন ২০০ আসন বিশিষ্ট যুব আবাস।এজন্য ব্যয় হবে ১৬ কোটি ২৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা। আছে গোমতী জেলাশাসক অফিসের নব নতুন ভবন নির্মাণ।এজন্য ব্যয় হবে ২৪ কোটি ২০ লাখ টাকা।মুখ্যমন্ত্রী এদিন একই সঙ্গে উদ্বোধন করেন গামারিয়া স্কুলের নবনির্মিত বিল্ডিংয়েরও।এজন্য ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৮৭ লাখ ৯৪ হাজার টাকা।বনদুয়ারে একান্ন শক্তিপীঠ পার্ক নির্মাণের জন্য ভারত সরকারের পর্যটনমন্ত্রক থেকে ৯৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায়, ক্রীড়া মন্ত্রী টিংকু রায়, গোমতী জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবল দেবরায়ও বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও এদিন বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, বিধায়ক অভিষেক দেবরায়, বিধায়ক জিতেন্দ্র মজুমদার, উদয়পুর পুর পরিষদের চেয়ারম্যান শীতলচন্দ্র মজুমদার সহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।