পরিকাঠামো বেহাল আইজিএমে রোগী দুর্ভোগ!!

 পরিকাঠামো বেহাল আইজিএমে রোগী দুর্ভোগ!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-চিকিৎসা পরিকাঠামোর উন্নয়ন,বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণ আইজিএম হাসপাতালে সেইভাবে না হওয়ায় রোগীর চিকিৎসার সুবিধা অপ্রতুল ও সংকুচিত হয়ে রয়েছে।হাসপাতালের সব বিভাগে সঠিক চিকিৎসা পরিকাঠামো না থাকায় রোগীরা হাসপাতালে এসে চরম বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগে পড়ছেন।অসুস্থ রোগীকে ছুটে যেতে হচ্ছে জিবি হাসপাতালে।আর সেই কারণে জিবি হাসপাতালে রোগীর চাপ কেবল বাড়ছেই। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে আইজিএম হাসপাতাল অবস্থিত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থার দিকে খুব সুবিধাজনক।রাজ্যের খুব প্রাচীন ও রাজন্য আমলের হাসপাতাল।১২০ বছরের উপর হাসপাতালের বয়স।
ভিক্টোরিয়া মেমেরিয়াল (ভিএম) হাসপাতালের নাম পরিবর্তনে হয় ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল (আইজিএম) হাসপাতাল।২০০৫ সালে জিবি হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রূপান্তরিত করার পর ২০০৬ সালে আইজিএমকে স্টেট সিভিল রেফারেল হাসপাতাল করা হয়।মূলত মেডিক্যাল কলেজের স্বীকৃতি ধরে রাখতে গিয়ে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার আইজিএমকে স্টেট সিভিল রেফারেল হাসপাতালের স্বীকৃতি দেয়।তখন কিছু নতুনভাবে হাসপাতালে রোগ বিভাগ চালু করা হয়।২০০৬ সালের আগে আইজিএমে শুধু স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগ, শিশু বিভাগ ও সিডিসি, চক্ষু, দন্ত বিভাগ চালু ছিল। ২০০৬ সালে স্বাস্থ্য দপ্তর আইজিএমে নতুন করে মেডিসিন, শল্য, ইএনটি
অস্থি রোগ ইত্যাদি রোগ বিভাগ চালু করে। বিভাগগুলির ইনডোর ও আউটডোর চালু করে। আচমকা আইজিএমে নতুন এই সববিভাগ ভালো চিকিৎসা পরিকাঠামোর উপর ভিত্তি করে চালু করা হয়েছিল।রোগীরা চিকিৎসা পরিষেবার ভালো সুবিধাও পেয়েছিলেন।কিন্তু তিন-চার বছর যেতে না যেতে শল্য, অস্থি, ইএনটি বিভাগগুলি থেকে অনেক চিকিৎসক বিস্ময়জনকভাবে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ায় জিবি এবং টিএমসি হাসপাতালে পোস্টিং দেওয়া হয়।সেই কারণে বাম আমলেই আইজিএমে ভালো চিকিৎসা সুবিধা চালু করে আবার তিনটি বিভাগ শল্য, অস্থি, ইএনটির চিকিৎসা পরিকাঠামোর সুবিধা ও চিকিৎসার সুবিধা সংকুচিত করা হয়।নামকাওয়াস্তে অস্থি, শল্য এবং ইএনটিকে টিকিয়ে রাখা হয় স্বাস্থ্য দপ্তর ও হাসপাতালের কাগজপত্রে।সবচেয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থার করুণ দশা অস্থি ও শল্য বিভাগের। উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৮ সালে বিজেপি জোট সরকার ক্ষমতায় আসলেও আইজিএমের বেহাল চিকিৎসা পরিকাঠামোর কোনও উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণ গত সাত বছরে হয়নি বলে রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজনের অভিযোগ। বেহাল শল্য ও অস্থি বিভাগের পৃথক পৃথক কোনও ইনডোর রোগী ভর্তি রাখার ওয়ার্ড নেই। ইএনটির ক্ষেত্রেও রোগীর জন্য কোনও পৃথক ওয়ার্ড নেই। হাসপাতালে বত্রিশ শয্যার একটি ওয়ার্ডে অস্থি, শল্য, ইএনটি রোগী কম্বাইন্ড একসঙ্গে রাখা হচ্ছে।বত্রিশ শয্যার একই ওয়ার্ডে পুরুষ ও মহিলা রোগীকে মাঝ বরাবর পার্টিশন দিয়ে রাখা হচ্ছে।রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তর সরকারী সিভিল স্টেট রেফারেল হাসপাতালে একটি ওয়ার্ডের মধ্যে তিনটি বিভাগের রোগী কম্বাইন্ডভাবে ভর্তি রেখে কীভাবে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসক মহলেই প্রশ্ন উঠেছে। স্টেট রেফারেল হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবার এত করুণ অব্যবস্থা ও বেহাল দশা রাজ্যের কোন মহকুমা ও জেলা হাসপাতালেও নেই বলে খোদ চিকিৎসকরাই অভিমত প্রকাশ করছেন। শুধু অস্থি, শল্য এবং ইএনটির রোগী ভর্তির রাখার চরম অব্যবস্থাই নয়, রাজ্য সরকার ও তার স্বাস্থ্য দপ্তর নাম রক্ষার্থেই এই তিন বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে রেখেছে। দুজন করে এই বিভাগগুলিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে রেখেছেন। সহকারী ছুটির দিন বা বিকাল চারটায় বহিঃবিভাগ বন্ধ হয়ে গেলে এই তিন বিভাগের জন্য কোনও রোগী ভর্তি নেওয়া হয় না। রোগী এলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জিবি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজন সব সময়ই এই অভিযোগ করছেন।যেহেতু তিন বিভাগের রোগীর জন্য বত্রিশ শয্যার একটি মাত্র কম্বাইন্ড ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয় তাতেই সকলের পক্ষে অনুমেয় করতে সহজ হচ্ছে যে আইজিএমে চিকিৎসা পরিষেবার কী হাল দশা। পৃথক ওয়ার্ডে ও পরিকাঠামো নেই, সেই কারণে চিকিৎসকরা জটিল রোগ বা একটু বেশি অসুস্থ এমন কোনও রৌগ আউটডোরে এলে ভর্তি না রেখে জিবিতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছেন বলেও রোগী ও রোগীর ক্ষুব্ধ আত্মীয়স্বজনের প্রতিদিনের অভিযোগ। হাসপাতালের শুধু এই তিন বিভাগের চিকিৎসা পরিকাঠামো হাল বেহাল ও করুণ তাই নয়, মেডিসিন বিভাগেরও চিকিৎসা পরিষেবা গত সাত বছরে কোনও উন্নয়ন, আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ রাজ্য সরকারও করেনি স্বাস্থ্য দপ্তর বলেও হাসপাতাল সূত্রে সংবাদ।এই বিষয়ে হাসপাতাল মেডিক্যাল সুপার ডা. দেবশ্রী দেববর্মাকে প্রশ্ন করা হলে জানান, চিকিৎসা পরিকাঠামোর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে স্বাস্থ্য দপ্তর কিছু পরিকল্পনা নিয়েছে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.