পরিবর্তন চান জিতেন্দ্র চৌধুরী

 পরিবর্তন চান জিতেন্দ্র চৌধুরী
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

আবারও মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দ্বারস্থ সিপিএম । টাউন বড়দোয়ালী কেন্দ্রে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে অসীম সাহার নিযুক্তির বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে নির্বাচন আধিকারিককে চিঠি পাঠান জিতেন্দ্র চৌধুরী । তিনি চিঠিতে বলেছেন , অসীম সাহাকে সরকারী বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে । কিন্তু কেন ? কারণ এই আধিকারিক লোকসভা নির্বাচনের সময় পশ্চিম ত্রিপুরা আসনের একজন এআরও হিসাবে সদর সাব – ডিভিশনের সমস্ত বুথের জন্য বিএমএসের ওপর ওয়েব – কাস্টিংয়ের দায়িত্ব অর্পণ করে । বিজেপির প্রতি এই পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে তখন তাকে এই অফিস থেকে সরানো হয়েছিল । কিন্তু এরপরও নির্বাচন প্রশাসন টাউন বড়দোয়ালীর বিধানসভা উপনির্বাচনে একই অফিসারকে রিটার্নিং অফিসার বেছে নিয়েছে । উপনির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য এই নিযুক্তি পুনর্বিবেচনা জন্য অনুরোধ করেছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক । চিঠিতে আইনশৃঙ্খলা আইনশৃঙ্খলা নিয়েও অভিযোগ এনে জিতেন্দ্র চৌধুরী নির্বাচন আধিকারিককে বলেছেন , গত ২৭ তারিখে সর্বদলীয় বৈঠকে বিজেপি ব্যতীত সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি সাধারণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন ।

যা বিজেপির পৃষ্ঠপোষকতায় কিছু বাইক চালক দুষ্কৃতীর খপ্পরে রয়েছে । বিরোধীদের উদ্বেগের সত্যতা প্রমাণ করে , সাম্প্রতিক এমন কিছু হামলার জঘন্য ঘটনার উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, দিলীপ বৈদ্যের বাড়িতে সিপিএমের কর্মীদের সভা করার অপরাধে ব্যাপক ভাঙচুর হয়েছিল । মানিকভাণ্ডারে প্রার্থী অঞ্জন দাসের মনোনয়ন জমা দেওয়ার মিছিলে যোগ দেওয়ায় দুই সিপিএম কর্মীর দোকান ভাঙচুর হয়েছিল । ১ জুন বাইকে আরোহী বিজেপি কর্মীরা সিপিএম প্রার্থী অঞ্জন দাসের বাড়ির আশেপাশের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তাকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য নোংরা ভাষায় হুমকি দেয় । সেদিন রাত ১১ টা পর্যন্ত এ ধরনের সন্ত্রাস ও ভয়ভীতি চলে । পুলিশকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি । হঌ মে প্রয়াত অরুণ দেবের মূর্তি ভেঙে ফেলে কিছু অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত । এর আগেও , ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পরপরই এই মূর্তিটি বিজেপির দুর্বৃত্তরা ভেঙে দিয়েছিল । অনুমান করতে কষ্ট হচ্ছে এই শহিদ মূর্তি ভাঙার পেছনে কারা ? আরও ভয়ানক ঘটনা হল ৩০ মে বিধায়ক রতন কুমার ভৌমিক তার বাড়ি থেকে উদয়পুর যাওয়ার পথে , জামজুরির ফরেস্ট ড্রপগেটের কাছে একটি খুনের উদ্দেশ্যে হামলার সম্মুহীন হন । তার ড্রাইভারের বুদ্ধিমত্তার জন্য তিনি এই আক্রমণ থেকে রক্ষা পান ।

তবে গাড়িটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে । বিধায়ক ভৌমিক এফআইআর করেছিলেন , কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও অপরাধী গ্রেপ্তার হয়নি । অনুরূপভাবে গত ৩১ মে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১.৩০ পর্যন্ত প্রায় ১০০ বাইক আরোহী বিজেপি কর্মী সিপিএমের কর্মীদের বাড়িতে হামলা করে । পুলিশ নীরব । কোনও বাধা ছাড়াই সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা সিপিএম নেতা , কর্মী এবং সাধারণ সমর্থকদের বাড়িঘর ও দোকানে লুটপাট চালিয়েছে । আয়রন চৌমুহনী , সাত – ডুবিয়া , ঘোষ পাড়া , তুলাবাগান , জগৎপুর , টিল্লা বাড়ি , চেচুরিয়া কোথাওএই দুষ্কৃতী চক্রকে ঠেকাতে পুলিশের উদ্যোগ ছিল না । অভিযোগ দায়ের হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি । সবশেষে ১ জুন বিজেপি দুষ্কৃিতীরা বিলোনীয়ার রাধানগরে সিপিএমের মিছিলে প্রাণঘাতী হামলা চালায় । পুলিশের একাংশের প্ররোচনায় এই হামলা হয়েছে । আটজন সিপিএম নেতা ও কর্মী আহত হয়েছেন গুরুতর আহতকে জিবি হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে । আহতদের রাজনগর পিএইচসিতে আনা হলে দুর্বৃত্তরা চিকিৎসা না করার , রোগী রেফার না করার , এমনকি রেফার রোগীদের অ্যাম্বুলেন্স না দেওয়ার ডাক্তারদের উপর চাপ সৃষ্টি করে । নির্বাচন প্রশাসনের প্রধান হিসেবে , ঘটনাগুলি চারটি বিধানসভার নির্বাচনি এলাকার মধ্যে পড়ে না বলে চুপ করে থাকতে পারেন না । ভয়ানক আইন শৃঙ্খলা অবনিত এবং নির্বাচন – বহির্ভূত এলাকার পরিস্থিতি নির্বাচনি এলাকার অভ্যন্তরে প্রভাব ফেলে । রাজ্যে উপনির্বাচন অবাধ , সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার স্বার্থে ক্ষমতাসীন দলের অসাধু উপাদানগুলির গণতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ করতে একটি সক্রিয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন জিতেন্দ্র চৌধুরী ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.