বিভৎস ট্রেন দুর্ঘটনা, ছিটকে গেল চলন্ত তিনটি মালগাড়ির কামরা!!
পরিবহণ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে: মুখ্যমন্ত্রী।।

অনলাইন প্রতিনিধি:-রাজ্যের পরিবহণ ব্যবস্থাকে আরও মসৃণ ও অত্যাধুনিক করে তুলতে এবং পরিবহণ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে পরিবহণ দপ্তর। বিশ্বমানের পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে নানা প্রকল্প হাতে নিয়েছে পরিবহণ দপ্তর। যান চালক থেকে শুরু করে যাত্রীদের সার্বিক সুবিধার্থে একের পর এক প্রকল্প হাতে নিয়ে কাজ করছে পরিবহণ দপ্তর। পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা যত উন্নত হবে ততই রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন হবে। দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকও আরও বেশি মাত্রায় আসবে। ইতিমধ্যে রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রগুলির ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।বুধবার জিরানীয়া মহকুমাশাসক কার্যালয় সংলগ্ন মাঠে আয়োজিত পরিবহণ দপ্তরের ৪০.৫৭ কোটি টাকার ছয়টি প্রকল্পের ভার্চুয়াল শিলান্যাস ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা জানান মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পর্যটনের ব্যাপক বিকাশ ঘটছে রাজ্যে।পাশাপাশি স্বাস্থ্য শিক্ষা পরিবহণ কৃষি সহ সমস্ত দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে রাজ্য।তিনি বলেন, দেশ বিদেশের পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে রাজ্যে একটি হেরিটেজ পাঁচতারা হোটেল করার চিন্তাভাবনা চলছে। ইতিমধ্যে টাটা গোষ্ঠীর সাথে কথাবার্তা হয়েছে। খুব সহসাই মৌ স্বাক্ষর হতে পারে। তিনি বলেন, এই হেরিটেজ পাঁচতারা হোটেল করা গেলে মানিক্য রাজবংশের ইতিহাস সারা পৃথিবীর মানুষ জানতে পারবে। মানিক্য রাজবংশের স্মৃতি অক্ষত রেখেই হবে হোটেল। এর জন্য ১৭কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, টাটা গোষ্ঠী এই হোটেলের জন্য ২৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে এ রাজ্য দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। কথার মাধ্যমে নয়, পরিকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে এগোচ্ছে রাজ্যে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একসময় উত্তর পূর্বাঞ্চলের সন্ত্রাসবাদীদের কবলে ছিল। ২০১৪ সালে মোদিজীর নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর এ পর্যন্ত ১২টি মৌ স্বাক্ষরের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান হয়েছে। সন্ত্রাসবাদমুক্ত হয়েছে রাজ্য।আর শান্তি ফিরে এসেছে।রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার উদ্যোগপতিরা বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে।সম্প্রতি শিল্প সম্ভাবনাকে সামনে রেখে ডেস্টিনেশন ত্রিপুরা বিজনেস কনক্লেভসম্পন্ন হয়েছে। তাতে ৮৭ জন উদ্যোগপতির মৌ স্বাক্ষর হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৩৭০০ কোটি টাকা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখনো একটা অংশ রাজ্যের জাতি জনজাতিদের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। একটা অংশ চেষ্টা করছে নতুনভাবে কীভাবে উগ্রপন্থা রাজ্যে প্রবেশ করানো যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসেই প্রধানমন্ত্রী হাত ধরে উদ্বোধন হবে নবরূপে সেজে ওঠা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরের। অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন, খাদ্য, পরিবহণ ও পর্যটন দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, বিজেপি সরকার সবকা সাথ সবকা বিকাশ মন্ত্রে উন্নয়নমূলক কাজ করছে। বিজেপির লক্ষ্য কাউকে বঞ্চনা করা নয়, ভাইয়ে ভাইয়ে বিভেদ সৃষ্টির জন্য নয়, সমাজ বিভাজনের জন্য নয়।বিজেপির একমাত্র লক্ষ্যই হল উন্নয়নমূলক কাজ করা।যেভাবে উন্নয়ন হচ্ছে সেই রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আগামী দিনে মানুষের কাছে যাওয়া হবে। শ্রীচৌধুরী বলেন, একটা অংশ বাজেটের বিরুদ্ধে কথা বলে মানুষকে ভুল পথে পরিচালনার চেষ্টা করছে। রাজ্যে উন্নয়ন হচ্ছে না বলে চিৎকার করছে। তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলে যারা এ সমস্ত কথা বলছেন তাদের রাজ্যের নানা প্রান্ত ঘুরে দেখা প্রয়োজন। আগে একটি জাতীয় সড়ক ছিল। বর্তমানে ছয়টি হয়েছে। আরও তিনটি জাতীয় সড়কের মঞ্জুরি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তিনি বলেন, মোদিজীর নেতৃত্বে রাজ্যের সঙ্গে রাজ্য, জেলার সঙ্গে জেলা, গ্রামের সঙ্গে গ্রাম যুক্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, সংসদে জনমুখী বাজেট পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। এই বাজেট ভারতবর্ষের প্রতিটি মানুষের সমর্থন কুড়িয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য বাজেটে ৪৭ শতাংশ অর্থ গত বছরের চেয়ে এবার বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে নানা দিক দিয়ে রাজ্য এগিয়ে যাবে। মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, রাজ্যের পাশাপাশি জিরানীয়ায়ও প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের পালক যুক্ত হচ্ছে। মহকুমা হাসপাতাল ২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে এস এন কলোনীতে একটি অত্যাধুনিক পার্ক গড়ে উঠবে। এই পার্ক গড়ে উঠলে এলাকার বহু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ যেমন সৃষ্টি হবে, তেমনি দেশ বিদেশের মানুষ রাজ্য এবং জিরানিয়াকে চিনবে। এদিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন পরিবহণ দপ্তরের সচিব সিকে জমাতিয়া, কমিশনার সুব্রত চৌধুরী, মহকুমাশাসক শান্তি রঞ্জন চাকমা, সমাজসেবী গৌরাঙ্গ ভৌমিক, রণজিৎ রায় চৌধুরী, জিরানীয়া নগর পঞ্চায়েত চেয়ারম্যান রতন দাস, রাণীরবাজার পুর পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রবীর কুমার দাস, পূর্ত দপ্তরের চিফ এগজিকিউটিভঅফিসার সত্যনারায়ণ সরকার প্রমুখ। এদিন মোট ৪০ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকার প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করা হয়। প্রকল্প গুলো হল জিরানীয়া, মেলাঘর ও জোলাই বাড়িতে অত্যাধুনিক মোটরস্ট্যান্ড, তেলিয়ামুড়া ও শান্তির বাজারে জেলা পরিবহণ দপ্তরের অফিসের শিলান্যাস এবং খোয়াইয়ে নব নির্মিত পার্কিং জোনের উদ্বোধন। ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্থানে মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিরা ছিলেন।