গোটা বিশ্বজাড়ের ৫জুন ঘটা করে আর ও একবার আন্তর্জাতিক পরিবেশ দিবস উদ্যাপন করা হলো।এদিন আমাদের দেশ এবং দেশের প্রতিটি রাজ্যেও সরকারী,বেসরকারীস্তরে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদ্যাপন করা হয়েছে।এদিন সকাল থেকেই দিনভর আমাদের রাজ্যেও ঘটা করে দিনটি পালিত হয়েছে।পরিবেশ রক্ষার আহ্বান জানিয়ে নেতা, মন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারী আমলা, আধিকারিক অনেকেই দীর্ঘ ভাষণ দিয়ে জনগণকে সচেতনতার পাঠ দিয়েছেন। এ বছর ৫২তম বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন করা হয়েছে। এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের স্লোগান (থিম) ছিল। প্লাস্টিক দূষণের অবসান।’ স্বাভাবিকভাবেই এ বছর ‘প্লাস্টিক দূষণের অবসান’ নিয়ে সকলেই জ্ঞান গম্ভীর ভাষণ দিয়েছেন। জনগণকে আহ্বান জানিয়েছেন প্লাস্টিক ব্যবহার না করার জন্য। বিশেষ করে একবার ব্যবহারযোগ্য (সিঙ্গল ইউজ) প্লাস্টিক ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন সকলে।
এই পর্যন্ত সবটাই ঠিক আছে।কিন্তু প্রতি বছর ঘটা করে, লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদ্যাপন করাটা একটা হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছে। বিষয়টি অনেকটা গাছের গোড়া কেটে মাথায় জল ঢালার মতো। পুরো উদ্যাপনটি একপ্রকার লোক দেখানো একটি গতানুগতিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। কেন এই কথা বলছি, পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আসল কাজটি না করে, এই সব লোক দেখানো উদ্যাপনের কোনো যুক্তি বা অর্থ আছে বলে মনে করি না। বরং এই উদ্যাপনের নামে জনগণের অর্থ অপচয়া এবং কয়েকজনের পকেট ভারী হওয়া ছাড়া আর বিশেষ কিছু লাভহয় বলে মনে করি না। যদি হতো তাহলে পৃথিবী আজ ধ্বংসের দোরগোড়ায় এসে দাঁড়াতো না।
পরিবেশবিজ্ঞানীরা মাথা ঠুকে বলছেন, দূষণের কারণে পৃথিবীর আয়ু ফুরিয়ে আসছে। প্রকৃতি আজ জরুরি অবস্থার মধ্যে রয়েছে। এই শতাব্দীতে বৈশ্বিক উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে রাখতে হলে, ২০২৩ সালের মধ্যে আমাদের বার্ষিক গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন অর্ধেক করতে হবে। পদক্ষেপ না নিলে নিরাপদ নির্দেশিকা অতিক্রম করে বায়ু দূষণের সংস্পর্শ এই দশকের মধ্যে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ফলে ২০৪০ সালের মধ্যে জলজ বাস্তুতন্ত্রে প্লাস্টিক বর্জ্য প্রবাহিত হওয়ার পরিমাণ প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পাবে। ফলে পরিবেশ দূষণ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? তথ্য বলছে, বর্তমান সময়ে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ১ কোটি ১০ লক্ষ টন প্লাস্টিক বর্জ্য জলজ বাস্তুতন্ত্রে প্রবেশ করছে। যা ২,২০০টি আইফেল টাওয়ারের ওজনের সমান। ৮০০টিরও বেশি সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় প্রজাতি এই দূষণের দ্বারা আক্রান্ত। সমুদ্রে মাইক্রোপ্লাস্টিকের সংখ্যা এখন আমাদের ছায়াপথের নক্ষত্রের চেয়েও বেশি।
তথ্য আরও বলছে, বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ৪০ কোটি টনের বেশি প্লাস্টিক উৎপাদিত হয়। যার অর্ধেক শুধুমাত্র একবার ব্যবহার করার জন্য উৎপাদন করা হয়। এরমধ্যে দশ শতাংশেরও কম পুনর্ব্যবহারযোগ্য। ৫ মিমি ব্যাস পর্যন্ত ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা খাদ্য, জল এবং বাতাসে প্রবেশ করছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, এই গ্রহের প্রতিটি মানুষ প্রতি বছর ৫০ হাজারের বেশি প্লাস্টিক কণা গ্রহণ করে। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ফেলে দেওয়া বা পুড়িয়ে দেওয়া, মানব স্বাস্থ্য এবং জীববৈচিত্রের মারাত্মক ক্ষতি করে এবং পর্বতশৃঙ্গ থেকে সমুদ্রের তলদেশ পর্যন্ত প্রতিটি বাস্তুতন্ত্রকে মারাত্মক দূষিত করে। এমন নয় যে কেউই এই বিষয়ে অবগত নয়। পরিবেশ সম্পর্কে এই উদ্বেগের কথা গোটা বিশ্ব সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল। প্রতিটি দেশ, দেশের সরকার, প্রতিটি রাজ্য এবং রাজ্য সরকার পরিবেশের এই মারাত্মক দূষণ সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে অবগত আছে। কিন্তু ব্যবস্থা কই? শুরুতেই বলেছিলাম, বিষয়টি ‘গাছের গোড়া কেটে মাথায় জল ঢালার মতো।’ প্লাস্টিক ব্যবহার না করার জন্য সকলে উপদেশ দিচ্ছে, কিন্তু একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক উৎপাদন দেশে এবং রাজ্যে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে না কেন? উৎপাদন না হলেই তো ব্যবহারের প্রশ্ন আসে না। এই সহজ কথাটি কারও মগজে কি আসে না? আসে, না আসার কোনও কারণ নেই। এই জন্যই বলেছিলাম, পুরো বিষয়টি লোক দেখানো। বর্তমানে জীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছু একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকে বন্দি। আরও স্পষ্ট করে বললে মানুষের জীবনটাই এখন প্লাস্টিকে আবদ্ধ। এখান থেকে বেরোতে হলে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে।এই ব্যাপারে ভারত সরকার এবং রাজ্য সরকারগুলিকে নীতি পরিবর্তন করে বিকল্প নীতি গ্রহণ করতে হবে। শুধু তাই নয়, এই ক্ষেত্রে প্রকৃত অর্থেই আন্তরিক উদ্যোগের পাশাপাশি কঠোর অবস্থান নিতে হবে।প্লাস্টিক ব্যবহার করে – ‘প্লাস্টিক বর্জন করুন’, – সরকারের এই জাতীয় হাস্যকর বিজ্ঞাপন ও আবেদন বন্ধ করতে হবে।বিশ্ব পরিবেশ দিবসের বিজ্ঞাপনী প্রচারে প্লাস্টিকেই মুখ ঢেকেছে গোটা আগরতলা শহর। এই ধরনের কার্যকলাপ যতদিন বন্ধ না হবে, ততদিন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদ্যাপনের কোনো যুক্তি নেই।এসব প্রকৃত অর্থে বন্ধ হলে তবেই পরিবেশ দিবস উদ্যাপন সার্থক হবে।
অনলাইন প্রতিনিধি :-শুক্রবার রাতভর ইউক্রেনের একাধিক শহরে ৪০০-র বেশি ড্রোন এবং অন্তত ৪০ মিসাইলের মাধ্যমে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ফের একবার জুন মাসে রাজ্য সফরে আসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । সূত্রের…
অনলাইন প্রতিনিধি :-কর্নাটকের শিবমোগা জেলার সমাজকর্মী এএম বেঙ্কটেশ ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক বিরাট কোহলির বিরুদ্ধে অভিযোগ…
অনলাইন প্রতিনিধি :-কেদারনাথ যাওয়ার পথে ঘটল বিপত্তি। ছয়জন পুণ্যার্থী নিয়ে কেদারনাথ যাওয়ার পথে রাজপথেই জরুরি…
অনলাইন প্রতিনিধি :-পবিত্র ঈদুল আজহার দিনেও থেমে থাকল না গাজার মৃত্যমিছিল। স্থানীয় চিকিৎসা সূত্রের দাবী,…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে পবিত্র ঈদুল আজহারে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। একটি বন্দিদের জন্য…