পশু হাসপাতালেও সিন্ডিকেট বেজায় ক্ষুব্ধ পশুপালকরা!!

 পশু হাসপাতালেও সিন্ডিকেট বেজায় ক্ষুব্ধ পশুপালকরা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি:- রাজ্যের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা অনৈতিক ব্যবসার রমরমা নতুন কিছু নয়। যেমন প্রয়োজন নেই, তবুও একগাদা পরীক্ষার তালিকা রোগীর হাতে ধরিয়ে দেওয়া। আবার সেই পরীক্ষা নির্দিষ্ট প্যাথোলজি থেকে করিয়ে আনতে বাধ্য করা। একাংশ চিকিৎসক তো নিজের পছন্দের নির্দিষ্ট করা প্যাথোলজির স্লিপই রোগীর হাতে ধরিয়ে দেন। আর ওষুধের কথা বলে লাভ নেই। ভালো মানের ওষুধ যেখানে অল্পতেই রোগ সেরে যাওয়ার কথা, সেখানে অপ্রয়োজনীয় নাম গোত্রহীন কোম্পানির নিম্নমানের একাধিক ওষুধ লিখে দেওয়া। দশকের পর দশক ধরে মানুষের চিকিৎসা চলছে। এই তালিকায় শামিল হয়েছে এখন পশুরাও। রাজ্যের সরকারী পশু হাসপাতালগুলিকে কেন্দ্র করেও এমন অনৈতিক ব্যবসা গড়ে উঠেছে। এতে করে সাধারণ পশু পালকরা নানাভাবে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। সম্প্রতি এমনই ঘটনা সামনে এসেছে আগরতলা অভয়নগরস্থিত রাজ্য সরকারী পশু হাসপাতালকে কেন্দ্র করে। গত ১৯ জানুয়ারী রাজধানীর বিবেকানন্দ ময়দান এলাকায় বহি:রাজ্যের একটি বেসরকারী সংস্থা পশুদের রক্ত পরীক্ষা কেন্দ্র চালু করেছে। ওই কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজধানীর একাধিক পশু চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন। এই পর্যন্ত ঠিকই আছে। কিন্তু বিস্ময়ের ঘটনা হলো, এই বেসরকারী কেন্দ্রটি উদ্বোধনের পরদিন থেকেই সংস্থাটির কর্মীরা অভয়নগরস্থিত রাজ্য পশু হাসপাতালে গিয়ে ঘাঁটি গেড়েছেন। এই কর্মীরা হাস্পাতালের ভিতর থেকে
পশুর রক্ত সংগ্রহ করে তাদের ল্যাবে পৌছে দিচ্ছে। মোদ্দাকথা পশুপালকদের বাধ্য করছে। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালে কর্মরত পশু চিকিৎসকরাই যুক্ত বলে অভিযোগ। এই ঘটনার খবর পেয়ে ক’দিন আগে সাংবাদিকরা পশু হাসপাতালে হাজির হলে বেসরকারী ল্যাব সংস্থার কর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করেন। সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করতেই কোনও সঠিক জবাব দিতে পারেনি। সাংবাদিকরা ক্যামেরা ওপেন করে চেপে ধরতেই বেসরকারী সংস্থার কর্মীরা হাসপাতাল থেকে বেড়িয়ে চম্পট দেয়। সবথেকে অবাক করার ঘটনা হলো, অভয়নগরস্থিত রাজ্য পশু হাসপাতালের সুপার ডা. রাজীব দাস এই অনৈতিক কাণ্ড ও ব্যবসা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত আছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পশু পালকরা তাদের অসুস্থ পশুকে নিয়ে হাসপাতালে গেলেই, তিন থেকে চার হাজার টাকার রক্ত পরীক্ষা করার স্লপ ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে পশু পালকরা বড় ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, রাজ্যের তরুণ প্রাণী সম্পদ বিকাশ মন্ত্রী সুধাংশু দাস কি এই অনৈতিক ব্যবসা সম্পর্কে অবগত আছেন? কোন কোন পশু চিকিৎসক এই অনৈতিক ব্যবসার সাথে যুক্ত বলে অভিযোগ, তাদের নামের তালিকাও আমাদের কাছে এসেছে। এখানেই শেষ নয়, কর্তব্যরত পশু চিকিৎসকরা পশুপালকদের নির্দিষ্ট একটি দোকান থেকে ওষুধক্রয়ের জন্য বাধ্য করছেন বলে অভিযোগ। এমন সব কোম্পানির ওষুধ লিখে দিচ্ছেন, যেগুলো শুধু ওই নির্দিষ্ট দোকানেই পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই দোকানের মালিকও একজন পশু চিকিৎসক। ফলে সাধারণ মানুষ আর কোথায় যাবে। এভাবেই নিত্যদিন আর্থিকভাবে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি হয়রানিরও শিকার হচ্ছেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.