পশ্চিম খুপিলং বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট : লাটে উঠেছে পঠনপাঠন
অনলাইন প্রতিনিধি :- শিক্ষক সংকটে জর্জরিত উদয়পুর মহকুমার টেপানিয়া ব্লক এলাকার বিভিন্ন স্কুল। একদিকে শিক্ষক সংকট অন্যদিকে পরিকাঠামোগত সমস্যায় ধুঁকছে টেপানিয়া ব্লক এলাকায় বিভিন্ন স্কুল। বিদ্যালয় পরিচালন করা খুবই কষ্টকর হয়ে উঠেছে। বিষয়টি দপ্তরের আধিকারিকদের বারবার জানানো হলেও সমস্যার সমাধানে আজও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। জেলা প্রশাসন তথা শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকের ভূমিকা নিয়েও নানা অভিযোগ। অভিযোগ টেপানিয়া ব্লক এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির বেহাল অবস্থা। গ্রাম-পাহাড় সর্বত্র সমস্যায় জর্জরিত অধিকাংশ স্কুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে শিক্ষক নেই। কোনরকম জোড়াতালি দিয়ে চলছে স্কুলগুলো। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের। যদিও শিক্ষক সংকটের চিত্র আজকে নতুন নয়। বিদ্যালয় থেকে শিক্ষকদের বিএলও কাজে নিয়োগ করা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি সার্ভের কাজ করা হচ্ছে। ফলে অনেক স্কুলে ক্লাস ঠিকমতো হচ্ছে না। ব্লক এলাকার গ্রাম-পাহাড় স্কুলগুলি কি পর্যায়ে চলছে তা খতিয়ে দেখতে ব্লক এলাকায় বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন বিদ্যালয়ের আধিকারিক সূত্রের খবর টেপানিয়া আরডি ব্লকের অন্তর্গত পশ্চিম খুপিলং যতীন্দ্র মালাকার বিদ্যালয়ের পঠন পাঠনের অবস্থা নাজেহাল। বিদ্যালয়টির মধ্যে কোনরূপ বাউণ্ডারি নেই। যার ফলে এলাকার গবাদি পশুদের বিচরণ ভূমিতে পরিণত হয়ে রয়েছে বিদ্যালয়ের মাঠ। প্রথম শ্রেণি থেকে পরিকাঠামো উন্নয়নের ব্যাপারে দপ্তর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৯৫ জন। এর মধ্যে শিক্ষক পাঁচজন। পাঁচজনের মধ্যে একজন ছা মাসের ছুটিতে আছেন। একজন বিএলও কাজে নিযুক্ত। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নেহার নন্দী জানান তিনি সর্বশিক্ষার শিক্ষক। তাকে বিজ্ঞান বিষয়টি দেখতে হয়। তাছাড়া তিনি আবার বাড়ি বাড়ি সার্ভের কাজে নিযুক্ত। তাহলে বাকি থাকছে দু’জন শিক্ষক। দু’জন শিক্ষকের দ্বারা আটটি ক্লাস পরিচালনা করা কোনমতেই সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন ঘোষ জানান শিক্ষক স্বল্পতার কারণে বহুবার ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক প্রদানের জন্য টেপানিয়া আইএস কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করে যাচ্ছে। শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিক জানান প্রতি চল্লিশজনে একজন শিক্ষক বিদ্যালয়ে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। এই মোতাবেক বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষক রয়েছে। বর্তমানে শিক্ষক সংকট পূর্ণ করার জন্য নতুন শিক্ষক নিয়োগ হলে তখনই শিক্ষক প্রদান করা সম্ভব হবে। শিক্ষক সংকট থাকবেই। পশ্চিম খুপিলং-এর পঞ্চায়েতের প্রধান জয়া নমঃ জানান। বিদ্যালয়ের সংকটের ব্যাপারটি জানা আছে। কিন্তু ম্যানেজিং কমিটি থেকে এই বিষয়ে কোনও কিছুই জানানো হয়নি। পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের সাথে । আলোচনা করে বিষয়টি এলাকার বিধায়ক রামপদ জমাতিয়াকে অবহিত করা হয়েছে। বিদ্যালয় সংলগ্ন পশ্চিম খুপিলং গ্রাম পঞ্চায়েতের মেম্বার জগদীশ সাহা জানান, বিদ্যালয়টিতে অনেক দিন ধরেই শিক্ষা ব্যবস্থা লাটে উঠেছে। একদিকে শিক্ষক স্বল্পতা অন্যদিকে পরিকাঠামো উন্নয়নের ব্যপারে দপ্তর একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাছাড়া ম্যানেজিং কমিটি ও পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের মধ্যে কোনও একটা অজানা কারণেই দুরত্ব বজায় রয়েছে। উভয়পক্ষ একসাথে মিলে আলোচনার টেবিলে না বসলে এলাকা অথবা বিদ্যালয়ের কোনও উন্নয়নই সম্ভব হবে না। সকলেই জানেন বিদ্যালয় তথা বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার যে রাস্তা সেটি বেহাল দশায় পরিণত হয়ে রয়েছে। দীর্ঘ বছর ধরে এইসব সমস্যায় জর্জরিত পশ্চিম খুপিলং এলাকায় জিং বসবাসকারী সমস্ত জনসাধারণ ভুগছে। দপ্তর কিংবা প্রশাসন কারোরই হেলদোল নেই এই সমস্যার ব্যাপারে। বিদ্যালয়ে অনেক বিষয়ে বিষয় শিক্ষক নেই। একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে শিক্ষা প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত একজন শিক্ষক। তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন কিভাবে সম্ভব হবে। এলাকার অভিভাবকদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েগেছে যে শিক্ষার এই অবস্থা হলে ছাত্রছাত্রীদের আগামী ভবিষ্যৎ কি হবে। কি করে বা এই সমস্যার সমাধান হবে। দীর্ঘ বছর ধরেই এই পশ্চিম ধুপিলং বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক সংকট চলছে, এই অবস্থায় ছাত্রছাত্রীদের কে ভবিষ্যৎ নিয়ে শিক্ষা দপ্তর অথবা পঞ্চায়েত প্রতিনিধি ও ম্যানেজিং কমিটি সাথে একে অপরকে দোষারোপ করে ক্ষান্ত হচ্ছেন। উভয় দপ্তরের রেষারেষি ও প্রতিযোগিতামূলক সমস্যায় ভুক্তভোগী হচ্ছেন এলাকার পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা। কি হবে তাদের ভবিষ্যৎ এদিকে কারোর নজর নেই, দপ্তর কিংবা পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের। এই সমস্ত অভিযোগ ও সমস্যায় জর্জরিত পশ্চিম খুপিলং বিদ্যালয় সংলগ্ন ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক মহল।