পাঁচশোর বেশি বেওয়ারিশ লাশ সৎকার!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

গত ১২ বছরে পাঁচশোর বেশি বেওয়ারিশ লাশের সৎকার করেছেন তারা । মহিলা হিসেবে এমন সাহসিকতার জন্য তামিলনাড়ু রাজ্য পুলিশের তরফে তাদের সম্মানিত করা হয়েছে । তামিলনাড়ু রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে যেন ওই মহিলাদের কেন্দ্রীয় সম্মানে ভূষিত করা হয় । বয়স মাত্র ৩৫ বছর । ২০১০ সালে তামিলনাড়ুর রাজ্য পুলিশে চাকরি পান আমিনা । ধর্মে মুসলমান । কিন্তু তাই বলে বেওয়ারিশ লাশগুলোকে এইভাবে মর্গে ফেলে রাখতে দেখতে পারেননি তিনি । আর সেই জন্যই নিজের সহকর্মী পাঁচ মহিলাকে নিয়ে তৈরি করলেন ‘ জীবা জ্যোতি ফাউন্ডেশন ‘ । এক একটি দেহের সৎকারের জন্য প্রায় দেড় হাজার টাকার মতো খরচ হয় । পাঁচ পুলিশ বন্ধু একত্রে সেই টাকা নিজের বেতন থেকে দিয়ে যান । এই ঘটনা প্রায় বছর চারেক চলার পর নজরে আসে পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্তার । তখনই ওই আইপিএস তামিলনাড়ুর রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানায় বেওয়ারিশ লাশ সৎকারের জন্য সরকারের তরফ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বরাদ্দ করা হোক । দীর্ঘ টালবাহানার পর ২০১৮ সালে তামিলনাড়ু সরকার বেওয়ারিশ লাশ সৎকারের জন্য বারোশো টাকা করে ধার্য করে । এখন তামিলনাড়ুর রাজ্যজুড়ে যেখানেই বেওয়ারিশ লাশ মর্গে জমা পড়ে তার সৎকারের জন্য ডাক পাড়ে জীবা জ্যোতি ফাউন্ডেশনের সদস্যদের । পাঁচ সদস্যার দল মুহূর্তের মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বেরিয়ে পড়েন শব সংগ্রহ করতে আর তারপর নিজেরাই হিন্দু কিংবা মুসলিম কিংবা যেকোনো ধর্মের রীতি মেনে শবের সৎকার পর্ব সারেন । আমিনার সহযোগী রুবিনা জানালেন , সময় লকডাউনের করোনায় যখন মৃত্যুর হার শীর্ষে পৌঁছেছিল তখনো জীবনকে পণ রেখে শবের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে পিছুপা হন নি পাঁচ বীরঙ্গনা । ২০২০ সালে তামিলনাড়ু রাজ্য প্রশাসনের তরফে তাদেরকে কোভিড সেনানী সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে । পাঁচ বন্ধু বিভিন্ন থানায় কাজ করলেও যখনই শবের শেষকৃত্যের প্রয়োজন হয়েছে , তখনই একসঙ্গে একই ছাতার তলায় চলে আসেন পাঁচজনই । মড়া পোড়ানোর অভিজ্ঞতাটা আমিনাই প্রথম উপলব্ধি করেছিলেন । সেটা কোয়েম্বাটুরে । তারপর মাস খানেকের মধ্যে দ্বিতীয় শবের শেষকৃত্য হয়েছিল মেত্তুপালায়ামের শ্মশানে । আর এখন গোটা তামিলনাড়ু জুড়ে যেকোনো শ্মশানে দেহের শেষকৃত্য করার অভিজ্ঞতা আছে পাঁচ বীরঙ্গনার । পুলিশের আরামের চাকরির মাঝে হঠাৎ এমন আজব নেশায় কেন মাতলেন তারা ? জবাব দিয়েছেন আমিনা । তিনি বলেছেন , পুলিশের চাকরির সুবাদে খোঁজ মিলত পথ দুর্ঘটনা নিহত ব্যক্তির দেহের । তারপর ভারতীয় আইন মেনে সেই দেহের ময়নাতদন্ত হতো । আর ময়নাতদন্তের পর সেই দেহ পড়ে থাকত কখনো পাঁচ দিন , কোথাও আবার সাত দিন, আবার কখনো ১৫ দিন । কোন কোন ক্ষেত্রে আবার মৃতের বাড়ির লোককে খুঁজেই পাওয়া যেতে না । কেউ আবার খোঁজ পেলেও মৃতের সৎকার করতে আসতেন না ।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

তিন ঘন্টা ধরে ৫০ ফুট উপরে উঠে আটকে রইল নাগরদোলা!

অনলাইন প্রতিনিধি :-কমপক্ষে ৩০ জন মানুষ৷ জমি থেকে ৫০ ফুট উপরে উঠে শূন্যে ভাসমান অবস্থায়…

12 hours ago

অমরপুর ও নূতনবাজারে একাধিক কর্মসূচি,কৃষকরা লাভের মুখ দেখছেন: রতন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-অর্থনীতিতে বিশ্বের মধ্যেচতুর্থ স্থানে ভারত। আগামীদিনে জার্মানিকে পেছনে ফেলে বিশ্ব অর্থনীতিতে তৃতীয় স্থানে…

14 hours ago

কপিলমুনি আশ্রমের সামনে প্রবল জলোচ্ছ্বাস!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-গঙ্গাসাগরের কপিলমুনি আশ্রম প্রাঙ্গণের সামনে প্রবল জলোচ্ছ্বাস। দৈত্যাকার ঢেউ আঁচড়ে পড়ছে উপকূলে। তীরবর্তী…

14 hours ago

স্টুডেন্ট ভিসা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করল ট্রাম্প!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনকারীদের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন ৷ মার্কিন…

14 hours ago

দ: কোরিয়ায় এশিয়ান জিমনাস্টিক্স, ভারতীয় দলে ত্রিপুরার শ্রীপর্ণা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রত্যাশা মতোই দক্ষিণ কোরিয়াতে হতে চলা মহিলাদের ১৮তম এশিয়ান জুনিয়র আর্টিস্টিক জিমনাস্টিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের…

15 hours ago

বর্ষপূর্তির রণসাজ!!

প্রধানমন্ত্রী হিসাবে টানা ১১ বছর ক্ষমতায় থাকার এক মাইলফলক পূর্ণ করলেন নরেন্দ্র মোদি।২০১৪ সালের ২৬…

15 hours ago