পাইকারিতে ভোজ্য তেল, ডালের মূল্য কমলেও প্রভাব নেই খুচরো বাজারে

 পাইকারিতে ভোজ্য তেল, ডালের মূল্য কমলেও প্রভাব নেই খুচরো বাজারে
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি || রাজ্যের বৃহত্তর পাইকারি বাজার মহারাজগঞ্জ বাজারে ভোজ্য তেল ও ডালের পাইকারি মূল্য অনেকটা কমলেও খুচরো বাজারে তার কোনও প্রভাবই নেই। যদিও খাদ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণ আনতে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছেন। এদিকে, গত দুই সপ্তাহ আগেই মহারাজগঞ্জ পাইকারি বাজার ও নেতাজী সুভাষ রোডের পাইকারি বাজারে ভোজ্য তেল ও ডালের মূল্য কমে ক্রমেই নিম্নমুখী হচ্ছে। অথচ খুচরো বাজারের ব্যবসায়ীরা ভোজ্য তেল ও ডালের মূল্য সেই আগের বর্ধিত আকাশছোঁয়া মূল্যেই ক্রেতা সাধারণের কাছ থেকে পকেট কেটে নিচ্ছেন। পাইকারি বাজারে মূল্য কমার কোনও সুফল ক্রেতা সাধারণের ভাগ্যে না ঝুটলেও খাদ্য দপ্তর ও প্রশাসনের তা অজানা নয়। বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতেও পাইকারি ও খুচরোর মূল্যে যাতে সামঞ্জস্য থাকে সেই বিষয়টিকে সামনে রেখে খাদ্য দপ্তর, সদর প্রশাসন, লিগ্যাল মেট্রোলজি, বিক্রয় কর ইত্যাদি দপ্তরগুলি যৌথভাবে বাজারে বাজারে ব্যবসায়ীদের নিয়ে শিবির করছে। গত ছয় এপ্রিল নেতাজী সুভাষ রোডের বাণিজ্য ভবনে মহারাজগঞ্জ বাজার ও নেতাজী সুভাষ রোডের পাইকারি ও খুচরো ব্যবসায়ীদের নিয়ে ওইসব সরকারী দপ্তরগুলি শিবির করেছে। গত এগারো এপ্রিল বটতলা বাজারে করা হয়েছে এই ধরনের শিবির।

জ্বালানি তেলের পর এবার ভারতে কমল ভোজ্যতেলের দাম


মূল্য বৃদ্ধি না করা, মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা, পাইকারি ও খুচরো মূল্যের মধ্যে যাতে অসামঞ্জস্য ফারাক না থাকে সেই বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দিয়ে বাজারে বাজারে শিবির শুরু করেছে খাদ্য দপ্তর, প্রশাসন, লিগ্যাল মেট্রোলজি, বিক্রয় কর, ফুট সেফটি দপ্তরগুলি যৌথভাবে। খাদ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর নির্দেশ ও গাইডলাইন অনুযায়ী সরকারী দপ্তরগুলি ব্যবসায়ীদের নিয়ে শিবির করছে। শিবিরের উদ্যোগটা ভালো হলেও খুচরো বাজারে তার কোনও প্রবাব পড়েছে বলে বাজারে গিয়ে ক্রেতা সাধারণও এখনও বুঝে উঠতে পারেননি। ভোজ্য তেল ও ডালের পাইকারি মূল্য গত পনেরোদিনে অনেকটা কমলেও খুচরো বাজারে সেই আখের বর্ধিত মূল্য দিয়েই ক্রেতাদের ক্রয় করতে হচ্ছে ভোজ্য তেল ও ডাল। এমনটাই প্রতিদিন অভিযোগে জানাচ্ছেন ক্রেতারা। গত পনেরোদিনে মহারাজগঞ্জ বাজারে ইঞ্জিন, রানি, রিফাইন, ধারা এই সব বিভিন্ন ব্র্যাণ্ডের ভোজ্য তেলের মূল্য পাইকারিতে গড়ে কমেছে প্রতি লিটারে আট টাকা থেকে দশ টাকার মতো বলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান। বুধবার মহারাজগঞ্জ বাজার ও নেতাজী সুভাষ রোডের পাইকারি দোকানে ইঞ্জিন তেল বিক্রি হয়েছে প্রতি লিটার ১৫৯ টাকা থেকে ১৬০ টাকায়। রানি ব্র্যাণ্ড তেল পাইকারিতে প্রতি লিটার বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকার মধ্যে। রিফাইন (ফরচুন) তেল প্রতি লিটার বিক্রি হয়েছে পাইকারিতে ১৩৫ টাকার মধ্যে। ধারা তেল বিক্রি হয়েছে পাইকারিতে প্রতি লিটারে ১৪২ টাকার মধ্যে। মহাকোষ তেল বিক্রি হয়েছে পাইকারিতে প্রতি লিটারে ১১৮ টাকায়। তেলের বুধবারের পাইকারি মূল্য এখানে উল্লেখ করা হলেও মহারাজগঞ্জ বাজার ও নেতাজী সুভাষ রোডের পাইকারি বাজারে এই বিভিন্ন ব্র্যাণ্ডের তেলের মূল্য গত পনেরোদিনে প্রতি লিটারে আট-দশ টাকা কমে গেলেও আগরতলা পুর নিগম এলাকায় কোনও খুচরো বাজারে এক পয়সাও ভোজ্য তেলের মূল্য কমেনি বলে ক্রেতা সাধারণের অভিযোগ। খুচরো ব্যবসায়ীরা আগের মতো বর্ধিত আগুন মূল্য ক্রেতাদের কাছ থেকে নেওয়ায় ক্রেতার পকেট কাটা হচ্ছে। তাতে ক্রেতার অসন্তোষ বাড়ছে। এদিকে, শুধু ভোজ্য তেলই নয়, গত পনেরোদিনে পাইকারি বাজারে মসুরি ডাল, মুগ ডালের মূল্যও অনেকটা কমেছে বলে বুধবার বাজারে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে মূল্য যাচাই করে জানা গেছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, বুধবার আঙুর ব্র্যাণ্ডের মসুরি ডাল পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে প্রতিকিলো ১০৫ টাকা। মুগ ডালও আঙুর ব্র্যাণ্ড বিক্রি হয়েছে পাইকারিতে প্রতিকিলো ১০৫ টাকায়। অন্যান্য ব্র্যাণ্ডের ডালের পাইকারি মূল্যও কমেছে অনেকটা। গত পনেরোদিনে পাইকারি বাজারেও ডালের মূল্যও ন্যূনতম প্রতিকিলোতে নয় টাকা থেকে দশ টাকা কমেছে। অথচ বিস্ময়ের ও পরিতাপের ব্যাপার হলো ক্রেতা সাধারণ ডালের মূল্য কমার কোনও সুফল পাচ্ছেন না। আগের মতোই বর্ধিত আগুন মূল্যে ডাল ক্রয় করছেন ক্রেতারা। এদিকে, পাইকারি ও খুচরো বাজারে ভোজ্য তেল ও ডালের মূল্যের মধ্যে এতো বড় ফারাক থাকায় বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। মহারাজগঞ্জ বাজার ও নেতাজী সুভাষ রোডের পাইকারি ব্যবসায়ীরা বুধবার আরও জানান, ভোজ্য তেল ও ডালের মূল্য আগামী কিছুদিনের মধ্যে আরও কমতে পারে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.