পাখির চোখ বেঙ্গালুরুতেই।

 পাখির চোখ বেঙ্গালুরুতেই।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

পাটনার পর এবার বেঙ্গালুরু। পাটনায় বিরোধী দলগুলির জোটের সলতে পাকানো শুরু হয়েছিলো।একে এবার পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে জোটের নেতারা বেঙ্গালুরুতে মিলিত হচ্ছেন। গত মে মাসে পাটনার বৈঠকের আহ্বায়ক ছিলেন জেডিইউ (নেতা) নীতীশকুমার।মোদিবিরোধী হিসাবে তিনি বেশ পরিচিত বিরোধী দলের নেতা হিসাবে। সেজন্য নীতীশকুমার দিল্লীতে গিয়ে সব দলের নেতৃত্বকে পাটনার বৈঠকে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তাতে তাৎপর্যপূর্ণভাবে আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল উপস্থিত ছিলেন। বিরোধী দলের সম্মিলিত বৈঠকে এটাই প্রথম অরবিন্দ কেজরিওয়ালের উপস্থিত থাকার ঘটনা। সেই নিরিখে পাটনার বৈঠক ছিল বিরোধীদের কাছে অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ।ওই বৈঠকের পরই শাসক বিজেপির শিবিরে একটা আগ্রাসী মনোভাব তেজি হতে থাকে।যেকোন মূল্যে বিরোধী জোটে ফাটল ধরাতে মরিয়া প্রচেষ্টা শুরু করে বিজেপি।এর আগে সম্প্রতিকালে জোট গঠনের প্রথম উদ্যোগ শুরু হয়েছিলো কর্ণাটকে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর শপথগ্রহণের মঞ্চে।ওই মঞ্চে একাধিক বিরোধী নেতৃত্ব হাজির ছিলেন।এরপর থেকেই কখনও নীতীশকুমার, কখনও শারদ পাওয়ার, কখনও মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়রা জোট গঠনে তৎপরতা দেখাতে শুরু করেন।বিরোধী দলগুলি চাইছে ২০২৪ সালে নরেন্দ্র মোদিকে একটা জবরদস্ত ধাক্কা দিতে। বিরোধীরা এও জানেন যে, বিরোধী দলগুলি যদি রাজ্যে রাজ্যে জোটবদ্ধ না হয় তাহলে কেন্দ্রে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপিকে পরাস্ত করা কোন মতেই সম্ভব নয়। তাই ২০২৪-এর অনেক আগে থেকে এবার মোদিবিরোধী জোট করতে প্রয়াস নিচ্ছে বিরোধীরা। পাটনায় একবার বৈঠকের পর এবার পরবর্তী গন্তব্য বেঙ্গালুরু। আগের বারের উদ্যোক্তা ছিলেন নীতীশকুমার।এবারের উদ্যোক্তা কংগ্রেস।কংগ্রেস দলের তরফে প্রায় সব বিরোধী পক্ষকেই চিঠি দিয়ে বৈঠকে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে পাটনার বৈঠকের পর বিরোধী জোটে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে বিজেপি শিবির। মহারাষ্ট্রের এনসিপি শিবিরে ভাঙন ধরিয়ে দিয়েছে শাসক।এটা বিরোধী শিবিরে নিঃসন্দেহে একটা বড় ধাক্কা। শারদ পাওয়ার এনসিপির সর্বময় কর্তা।তেমনি বিরোধী জোটের অন্যতম বড় নেতা। তাই তার দলে ভাঙন ধরিয়ে বিজেপি বিরোধী জোটকে একটা বার্ত দিতে চেয়েছে- প্রয়োজনে অন্য দলগুলিকে ভাঙতে বেশি সময় লাগবে ন বিজেপির।অন্যদিকে বিরোধী শিবির এনসিপি ভাঙনে কিছুটা বিমর্ষ হলেও একবারে ভেঙে পড়েনি। বরং পাটনায় ১৭ দল উপস্থিত থাকলেও এবার বিরোধী জোট দাবি করছে যে, তারা আরও মোদিবিরোধী অভিযান আরও তেজি করতে বেশি দলকে আগামী ১৮ জুলাই বেঙ্গালুরুতে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে। পাটনায় বিরোধী প্রায় ১৭টি দল উপস্থিত হয়েছিল। কংগ্রেস এবার দাবি করছে যে, বেঙ্গালুরুতে ২৪টি দল হাজির থাকবে।বিরোধী জোটের এবার বড়সড় চমক কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর উপস্থিতি। এখন পর্যন্ত খবর, আগামী ২৮ জুলাই বেঙ্গালুরুতে বিরোধী দলগুলি যে বৈঠক হতে যাচ্ছে তাতে উপস্থিত থাকবেন সোনিয়া গান্ধী এবং এটা সুনিশ্চিত করতে সোনিয়া গান্ধী আগের দিন নৈশভোজে সবাইকে আপ্যায়িত করতে যাচ্ছেন। সোনিয়া গান্ধীর উপস্থিতি যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করা হচ্ছে। সকলেই অবগত আছেন যে, কংগ্রেস এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব চলছে। দিল্লীর সরকারের প্রশাসনিক ক্ষমতা কবজা করতে কেন্দ্রীয় সরকার একটা অর্ডিন্যান্স জারি করেছে। সেই নিরিখে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিরোধীদের দরজায় দরজায় ঘুরছেন সমর্থন আদায়ের জন্য। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলছেন, লোকসভায় অর্ডিন্যান্সটি বিল আকারে পাস করালেও কংগ্রেস এবং বাকি সব বিরোধী দল যদি একজোট হয় তাহলে রাজ্যসভায় তা আটকে দেওয়া যেতে পারে। তাই কংগ্রেসের সমর্থন চাইছেন কেজরিওয়াল। কিন্তু এখনও স্পষ্ট করে আপকে কিছু জানায়নি কংগ্রেস। এতে গত বৈঠকেই অসন্তোষ জানায় আপ এবং বেঙ্গালুরু বৈঠকে আপ যোগ দেবে কিনা এ নিয়েও স্পষ্ট করেননি অরবিন্দ কেজরিওয়াল। যদিও কংগ্রেসের তরফে আপকে যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে বেঙ্গালুরু বৈঠকে যোগ দিতে এবং এর আগের দিন নৈশভোজে যোগ দিতে আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে।বিজেপিকে ২০২৪ সালে বেগ দিতে গেলে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ লড়াই দরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেরিতে হলেও তা বোঝেছেন। এক্ষেত্রে অন্য বিরোধী দলগুলিকে তা বুঝতে হবে।যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন তারা ততই বিরোধীদের জন্য ভালো। আগামী ২০ জুলাই থেকে সংসদের বাদল অধিবেশন।তাই বেঙ্গালুরু বৈঠক সফল হলে বাদল অধিবেশনেও সংসদে ঐক্যবদ্ধ বিরোধী চেহারা দেখা যাবে। আপাতত বেঙ্গালুরুর বৈঠককেই পাখির চোখ করছে বিরোধীরা।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.