পাতাল ইস্যুতে দলের বেহাল অবস্থা প্রকট, অশনি সংকেত।।
অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমানে রাজ্য বিজেপি দল কী অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে? বিভিন্ন মহল থেকে এখন এই প্রশ্ন উঠেছে।সব দেখে অনেকেই মনে করছেন রাজ্য বিজেপি – এখন ‘গো এজ ইউ লাইক’-এ পরিণত এ হয়েছে। দলের শৃঙ্খলা, অনুশাসন সব কিছু নিয়েই বড় ধরনের প্রশ্ন উঠেছে।এক কথায় নিয়ন্ত্রণহীন।কেউ কারো নির্দেশ মানছে না,শুনছে না। অভিযোগ, নেতৃত্বের দুর্বলতা এবং ব্যর্থতার কারণে দলের এখন বেহাল অবস্থা বলে বিভিন্ন মহলের অভিমত। সাম্প্রতিক কালে পাতাল কন্যা জমাতিয়া ইস্যুতে এই প্রশ্ন আরও বড় হয়ে উঠেছে।
বিগত কয়েকমাস ধরেই বিজেপির জনজাতি নেত্রী পাতাল কন্যা জমাতিয়া একের পর এক দল বিরোধী কার্যকলাপ চালিয়ে গেছেন। সব থেকে বিস্ময়কর ঘটনা হলো, দলের সহ- সভানেত্রী পদে থেকেই দল বিরোধী কার্যকলাপ চালিয়ে গেছেন পাতাল কন্যা।বিজেপিতে থেকে নিজে রাজনৈতিক দল গঠন করা, বিজেপির শরিক দলের নেতৃত্বের তীব্র সমালোচনা করা,এমনকী বিজেপি দলের বিরুদ্ধেও প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন পাতাল কন্যা।এই সব দল বিরোধী কার্যকলাপের জন্য রাজ্য বিজেপি পাতাল কন্যাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বলে সামাজিক মাধ্যমে প্রদেশ বিজেপির একটি বিবৃতি ভাইরাল হয়েছে।কিন্তু পাতাল কন্যার পাল্টা দাবি, দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করার এমন কোনও আদেশ বা চিঠি তিনি এখনো হাতে পাননি। সব থেকে অবাক করার ঘটনা হলো, পাতাল কন্যার এমন বিস্ফোরক দাবি ও অভিযোগের পরও প্রদেশ বিজেপি নেতৃত্বের মুখে তালা! এই বিষয়ে দলের পক্ষে আজও কোনও বক্তব্য বা বিবৃতি পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, কে সঠিক?পাতাল কন্যা যে কথা বলছেন, সেটা সঠিক? নাকি দল সঠিক? এই নিয়ে জনমনে ব্যাপক বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।এখানেই শেষ নয়, পাতাল কন্যা তাঁর এই বহিষ্কার নিয়ে দিল্লীতে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাথেও নাকি সাক্ষাৎ করে কথা বলেছেন। এমনটাই দাবি করেছেন পাতাল কন্যা। কিন্তু দিল্লীতে কোন্ নেতৃত্বের সাথে তিনি সাক্ষাৎ করে কথা বলেছেন, সেটা কিন্তু স্পষ্ট করেননি। গত ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় দিল্লী থেকে ফিরে এসে বিমান বন্দরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সামনে পাতাল কন্যা রাজ্য বিজেপি’র বিরুদ্ধে এবং দলের একাংশ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন।দল নাকি তাকে অফিসিয়াল বহিষ্কার পত্র দিতে পারছেন না। পাতাল কন্যা সরাসরি বিজেপি নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, ক্ষমতা থাকলে তাকে অফিসিয়ালি বহিষ্কার পত্র প্রদান করতে। তিনি রাজ্য বিজেপিকে জীবন্ত লাশ বলে আখ্যায়িত করেন। স্বাভাবিকভাবেই পাতাল কন্যা ইস্যুতে একটা রহস্য দানা বেঁধেছে। কেননা, দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও পাতাল কন্যা এখন টিআরপিসির চেয়ারপার্সনের পদে বহাল তবিয়তে রাজ করছেন। তাঁর পরিচালনায় টিআরপিসির গঙ্গাপ্রাপ্তি এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। টিআরপিসির মৃত্যুঘন্টা বেজে গেলেও, তাঁর আরাম আয়েসে কোনও ঘাটতি নেই। সব কিছু জেনে শুনেও দল রহস্যজনকভাবে নীরব। দলের একাংশের মতে পাতাল কন্যাকে আর গুরুত্ব দিতে চাইছেনা বিজেপি। তাই তাঁর কোনও বক্তব্য এবং অভিযোগের জবাব দিতে চাইছে না দল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, জনমনে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে সেটা দূর করবে কে? পাতাল কন্যা পথ দেখিয়েছে, এইভাবে চলতে থাকলে দলের অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন উঠতে বেশি দিন লাগবে না। তাই দলের শৃঙ্খলা, অনুশাসনের কঠোর না করলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ২০২৮ এ মুখ থুবড়ে পড়তে হবে। এতে কোনও সন্দেহ নেই।