অনলাইন প্রতিনিধি :- আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিতে চলেছে রাজ্যে ব্যাপক পরিমাণে পাম অয়েল চাষ। হ্যাঁ, রাবারের চাইতেও কম সময়ে দ্বিগুণ লাভ পামওয়েল চাষে। রাবার বাগান থেকে আয় শুরু হতে কম করে সাত থেকে আট বছর সময় লাগে। সে জায়গায় পাম অয়েল বা অয়েল পাম থেকে মাত্র চার, সাড়ে চার বছর থেকেই আয় শুরু হয়ে যায়। প্রতি হেক্টর রাবার বাগান থেকে বছরে আয় হয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মতো। সে জায়গায় প্রতি হেক্টরে পাম অয়েল বাগান থেকে বছরে আয় হয় ২লক্ষ টাকার উপরে। ভারত সরকার দেশে ক্রমবর্ধমান পামঅয়েলের চাহিদা মেটাতে ‘গোটা দেশব্যাপী একটি বিশেষ প্রকল্প মেগা অয়েল প্ল্যান্টেশন ড্রাইভ’ শুরু করেছে। দেশে ভোজ্য তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এবং আমদানির বোঝা কমাতে ভারত সরকার পাম অয়েল চাষের এলাকা সম্প্রসারণের জন্য এই বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে দেশে বছরে মাথাপিছু ভোজ্য তেলের ব্যবহার প্রায় ১৯কেজি। ২০২০-২১ সালে দেশে ভোজ্য তেলের উৎপাদন হয়েছে ১২২.৮৯ লক্ষ টন, যা মোট চাহিদার মাত্র ৪৭.৯২ শতাংশ। ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাম তেল ভোক্তা দেশ। তথ্য বলছে, ভারত ২০২১-২২ সালে ১৩৩ কোটি ৫২ লক্ষ টন ভোজ্য তেল আমদানি করেছে, যার মূল্য প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে পাম তেল হচ্ছে প্রায় ৫৬ শতাংশ অর্থাৎ ৭৫ লাখ টন। এছাড়া সয়াবিন তেল ২৭ শতাংশ এবং সূর্যমুখী তেলের অংশ ১৬ শতাংশ।ভারতে ১৪ টি রাজ্যে পাম তেলের চাষ হয়। এই রাজ্য গুলি হলো অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, ছত্তিশগড়, তামিলনাড়ু, কেরালা, গুজরাট, কর্ণাটক, ওড়িশা, মিজোরাম, নাগাল্যাণ্ড, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর এবং ত্রিপুরা। এই ১৪টি রাজ্যের মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা এবং কেরালা এই তিনটি রাজ্যে দেশের মোট উৎপাদনের ৯৮ শতাংশ পাম তেল উৎপাদন হয়। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর মাটি ও জলবায়ু পাম তেলের চাষের জন্য অত্যন্ত অনুকুল হলেও এতদিন তাতে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এবার ভারত সরকার সেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। শুধু তাই নয়, চাষের জমি সম্প্রসারণেও উদ্যোগ নিয়েছে।এ ব্যাপারে রাজ্যের কৃষি ও উদ্যান দপ্তর দেশের দুটি অগ্রণী সংস্থা পতঞ্জলি ফুড প্রাইভেট লিমিটেড এবং গোদরেজ এগ্রোভেট লিমিটেডের সাথে মউ স্বাক্ষর করে রাজ্যে ব্যাপক হারে অয়েল পাম চাষের পরিধি বিস্তার শুরু করেছে। ঊনকোটি, উত্তর এবং ধলাই এই তিনটি জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গোদরেজকে। বাকি দক্ষিণ, পশ্চিম, গোমতী, খোয়াই এবং সিপাহিজলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পতঞ্জলিকে। ইতিমধ্যে দুটি সংস্থা রাজ্যে অয়েল পামের নার্সারি গড়ে তুলেছে এবং চারা সরবরাহ করছে। এই প্রকল্প রূপায়ণের জন্য ভারত সরকার রাজ্যকে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ১০ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা প্রদান করেছে। এছাড়াও ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের জন্য ৩৩ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা দিয়েছে। রাজ্যে ইতিমধ্যে ৫৩০ হেক্টর জমিতে পাম চাষের সম্প্রসারণ চলছে। এছাড়াও আরও দুই হাজার হেক্টর এলাকায় সম্প্রসারণের লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে।পাম অয়েল চাষে খরচও কম। প্রথম বছরে হেক্টরপ্রতি খরচ ৮৮ হাজার টাকা।এর মধ্যে সরকার সাবসিডি দেবে প্রথম বছরে ৬২ হাজার ৫০০ টাকা হেক্টর প্রতি, এবং ৪র্থ বছর পর্যন্ত সাবসিডি দেবে হেক্টর প্রতি এক লক্ষ টাকা।৫ বছর থেকে আয় শুরু হবে। প্রথমে হেক্টরপ্রতি আয় ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা, আট বছর পর ২ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা এবং দশ বছর থেকে ত্রিশ বছর পর্যন্ত হেক্টরপ্রতি আয় হবে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। শুধু তাই নয়, ভারত সরকার অয়েল পাম চাষিদের মূল্যের নিশ্চয়তাও দিয়ে দিয়েছে। যেমন ২০২৮ সালে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতি কেজি তাজা পামের মূল্য ধার্য করা হয়েছে ১৪ টাকা ৩০ পয়সা। ১ নভেম্বর ২০২৮ থেকে ৩১ অক্টোবর ২০০১ পর্যন্ত মূল্য ধার্য করা হয়েছে ১৪ টাকা ৫৫ পয়সা করে। রাজ্য সরকারের সাথে দুটি সংস্থা মউ স্বাক্ষর করেছে, তারা রাজ্যে দুটি পাম তেল মিল স্থাপন করবে, যাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।এই প্রকল্পে গত শুক্রবার জিরানিয়া মহকুমার শান্তিনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে ৪ হেক্টর জমিতে অয়েল পাম চাষের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন কৃষিমন্ত্রী রতন লাল নাথ।উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় হচ্ছে, রোসন দেববর্মা নামে এক উচ্চশিক্ষিত যুবক (এম টেক) পাম চাষে এগিয়ে এসেছেন নিজেকে আত্মনির্ভর করার লক্ষ্যে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন, আমাদের শক্তি শহর নয়, আমাদের শক্তি গ্রাম-গরিব-কৃষক। আমাদের শক্তি পাহাড়। গ্রাম-পাহাড় শক্তিশালী হলে শহর এমনিতেই শক্তিশালী হবে।তাই সরকার গ্রাম ও কৃষককে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। পাম চাষ রাজ্যের অর্থনীতিকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে যাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন মন্ত্রী এবং এ ব্যাপারে চাষিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
অনলাইন প্রতিনিধি :-চাঁদারজুলুম নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তথাকথিত সুশাসনের রাজ্যে প্রশাসনের নির্লজ্জ দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে এলো।…
কেন্দ্রে ১০০ দিন পূর্ণ করল তৃতীয় মোদি সরকার।যদিও বর্তমান ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় সরকারকে মোদি সরকার আখ্যা…
নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…
অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…
হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…
অনলাইন প্রতিনিধি:-মুখ্যমন্ত্রীডা. মানিক সাহার নির্বাচনি এলাকার আপনজন ক্লাবের চাঁদার নামে বড় অঙ্কের তোলাবাজির অভিযোগের রেশ…