পাহাড়ি পথে আবারও বেলাইন বাতিল বহু ট্রেন, দুর্ভোগ চরমে!!

 পাহাড়ি পথে আবারও বেলাইন বাতিল বহু ট্রেন, দুর্ভোগ চরমে!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- আবারও বেলাইন রেলগাড়ি। আবারও পাহাড়ি রেলপথে বিপত্তি। সেই সূত্রে বাতিল হলো বহু ট্রেন। চরম দুর্ভোগে পড়তে হলো রাজ্যের দূরপাল্লার রেলযাত্রীদের। বস্তুত পাহাড়ি রেলপথের কারণে বারবার যেন রাজ্যের মানুষের কাছে রেল সফর যেন বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই অবস্থা হয়েছে আসামের দক্ষিণাংশ সহ মিজোরাম, মণিপুর ইত্যাদি রাজ্যের যাত্রীদের।গতকাল ৩১ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার । বিকাল চারটা নাগাদ বদরপুর জংশন ও – লামডিও জংশনের মাঝামাঝি অংশের – পাহাড়ি রেলপথে বেলাইন হয়েছে – একটি ট্রেন। এ নিয়ে গত পক্ষকালের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটেছে দ্বিতীয়বার। মুপা স্টেশনের কাছে দুই নম্বর কৃত্রিম সুড়ঙ্গে ৫২ ভায়া ৫ কিলোমিটার সংলগ্ন এলাকায় একটি পণ্যবাহী মালগাড়ির ওয়াগন রেলপথের নীচে পড়ে যায়। হয়ে যায় বেলাইন। এর ফল হিসাবে মোট একুশটি দূরপাল্লার যাত্রীট্রেন আংশিক অথবা পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে। একটি ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে। রেলপথের বিপর্যস্ত এলাকা সারাই করে ফের কবে পুরোপুরি সচল করা যাবে তা শুক্রবার সন্ধ্যায় সংবাদ লেখার সময় পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মার কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে শনিবার থেকে রেলপথটি সচল হবে বলে আশা করেন তিনি।

উল্লেখিত দুর্ঘটনার পর দফায় দফায় মোট তেইশটি দূরপাল্লার যাত্রীট্রেন আংশিক অথবা পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ত্রিপুরায় চলাচল আস করা ট্রেন রয়েছে মোট এগারোটি। এছাড়া আংশিক বাতিল করা দশটি দুরপাল্লার ট্রেনের মধ্যে রাজ্যের ছয়টি ট্রেন রয়েছে। আগরতলা-গুয়াহাটি ৩১ অক্টোবরের নির্ধারিত বিশেষ এক্সপ্রেস ট্রেন সহ ১ নভেম্বরের গুয়াহাটি- আগরতলা বিশেষ এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিলের কথা জানানো হয়েছে ৩১ অক্টোবর। একই দিনে দিনের আগরতলা-লোকমান্য তিলক টার্মিনাস এবং সাব্রুম-শিয়ালদহ এক্সপ্রেস ট্রেন আংশিক বাতিলের কথা জানানো হয়েছে। এই দুটি ট্রেন নিউ হাফলং স্টেশন থেকে আগরতলা ও সাব্রুমে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ট্রেন দুটি নিউ হাফলং লোকমান্য তিলক টার্মিনাস এবং নিউ হাফলং শিয়ালদহের মধ্যে বাতিল করা হয়েছে। ফলে এই দুই ট্রেনের যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ ও গঞ্জনা সইতে হয়েছে। শিয়ালদহ- সাক্রমের ৩১ অক্টোবরের কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসও লামডিঙ-সাব্রুমের মধ্যে আংশিক বাতিল করা হয়েছে। ফলে রাজ্যের যাত্রীদের বর্ণনাতীত দুর্ভোগে পড়তে হয়। এছাড়া ৩১ অক্টোবর ও ১ নভেম্বরের আগরতলা-পিরোজপুর ক্যান্টনমেন্ট ত্রিপুরাসুন্দরী এক্সপ্রেস এবং আগরতলা-সেকেন্দ্রাবাদ বিশেষ এক্সপ্রেস ট্রেনও পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে। ২৯ অক্টোবর কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু ক্যান্টনমেন্ট থেকে আগরতলার উদ্দেশে ছেড়ে আসা ট্রেনটি ৩১ অক্টোবর গুয়াহাটি- আগরতলার মধ্যে বাতিল করা হয়েছে। অনুরূপভাবে ৩০ অক্টোবর নয়াদিল্লীর নন্দবিহার টার্মিনাল স্টেশন থেকে আগরতলার উদ্দেশে ছেড়ে আসা তেজস রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেন গুয়াহাটি-আগরতলার মধ্যে বাতিল করা হয়েছে। একই দিনে মধ্যপ্রদেশের ভোপালের রাণী কমলাপতি স্টেশন থেকে আগরতলার উদ্দেশে ছেড়ে আসা বিশেষ এক্সপ্রেস ট্রেনটিও গুয়াহাটি – আগরতলার মধ্যে। ২ নভেম্বরের আগরতলা-বেঙ্গালুরু ক্যান্টনমেন্ট হামসফর এক্সপ্রেস আগরতলা-গুয়াহাটির মধ্যে বাতিল করা হয়েছে। একই দিনের সাক্রম- শিয়ালদহ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসও সাব্রুম- লামডিঙের মধ্যে বাতিল করা হয়েছে। মোট কথায় ২ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের রেলযাত্রীদের পক্ষে দূরপাল্লার ট্রেনে চাপা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। ত্রিপুরার পাশাপাশি আসামের দক্ষিণাংশের বরাক উপত্যকা সহ অন্যান্য অংশের যাত্রীদেরও চরম বিপাকে পড়তে হয়েছে। এমতাবস্থায় ত্রিপুরা এবং আসামের দক্ষিণাংশের যাত্রীদের প্রতি উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল সহ ভারতীয় রেলের তরফে উপেক্ষা করা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের মধ্যে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। কেননা, গত কয়েক মাসে পাহাড়ি রেলপথ এলাকায় একের পর এক অঘটন ঘটেছে। এর প্রতিকারের কার্যকর কোনও ব্যবস্থা গ্রহণের খবর নেই। তাতে ক্ষোভ বাড়ছে দুর্ভোগগ্রস্ত যাত্রীদের মধ্যে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.