পূর্বদিকে হেলে পড়ছে পৃথিবী, ভারত-আমেরিকাকে দায়ী করলেন বিজ্ঞানীরা।
সাধারণ মানুষেরই ভুলে, আমাদেরই অগোচরে এক ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটে গেছে। বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি জেনেছেন, এই বসুধা আগের চেয়ে প্রায় ৮০ সেন্টিমিটার পূর্বদিকে হেলে পড়েছে। যার প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়তে চলেছে পৃথিবীর জলবায়ুর উপর।এই পরিবর্তনের জন্য ভারত আর আমেরিকাকেই দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা।কেন এ ভাবে ৮০ সেন্টিমিটার পূর্বদিকে হেলে পড়েছে পৃথিবী?কারণ হিসাবে বিজ্ঞানীরা যা জানিয়েছেন, তাও চমকে দেওয়ার মতো! বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ভারত আর আমেরিকায় মাত্রাতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ জল পাম্প করে তুলে নেওয়া হচ্ছে নানা কারণে।কতটা জল মাটির গভীর থেকে এই সভ্য সমাজ তুলে ফেলেছে? ২,১৫০ গিগাটন (২১৫,০০০০০০০০০০০০০কেজি)! ভূগর্ভস্থ জলের অতিরিক্ত বাহ্যিক ব্যবহার প্রভাবিত করেছে পৃথিবীর ঘূর্ণনকে।এর ফলে ক্রমশ বিগড়ে যাচ্ছে পৃথিবীর ঘূর্ণন-ভারসাম্য। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর দুই মেরু ১৯৯৩ সাল থেকে ২০১০ সালের মধ্যে প্রতি বছর ৪.৩৬ সেন্টিমিটার গতিতে প্রবাহিত হয়েছে, যার ফলে পৃথিবী প্রায় ৮০ সেন্টিমিটার পূর্ব দিকে হেলে পড়েছে।জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্সে এই সংক্রান্ত গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে।সেখানে বলা হয়েছে, সেচের জন্য ভূগর্ভস্থ জলের হ্রাসের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৯৩ সাল থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ হ্রাস এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাবে প্রতি বছর ৪.৩৬ সেন্টিমিটার করে পূর্ব দিকে হেলে পড়ছে। গবেষকদের আন্তর্জাতিক দলের অনুমান, মানুষ প্রায় ২,১৫০ গিগাটন ভূগর্ভস্থ জল পাম্প করে তুলে ফেলেছে, যা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ০.২৪ ইঞ্চিরও বেশি বৃদ্ধির সমতুল।যদিও গবেষকরা স্বীকার করেছেন, এটি মোটামুটি অনুমান মাত্র, সঠিক অঙ্ক কষা বেশ কঠিন।বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পৃথিবীর ঘূর্ণন মেরুর অবস্থান পৃথিবীর বাইরের স্তরের সাপেক্ষে পরিবর্তিত হয়। আমাদের গ্রহে জল যেভাবে ছড়িয়ে রয়েছে, তার উপর পৃথিবীর ভর নির্ভর করে।সুতরাং,ভূগর্ভস্থ জলের অতিরিক্ত বাহ্যিক ব্যবহার পৃথিবীর ভারসাম্যকে নষ্ট করছে যা ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।বিজ্ঞানীরা,তাদের গবেষণার দেখেছেন, বেশিরভাগ ভূগর্ভস্থ জল পশ্চিম-উত্তর আমেরিকা এবং উত্তর- পশ্চিম ভারতে ব্যবহৃত হয়েছে এবং এখনও হয়ে চলেছে। যদিও এই গ্রহের মেরুর সামান্য হেলে পড়ায় ঋতুতে তেমন প্রভাব ফেলবে না। তবে গবেষকরা সতর্ক করেছেন দীর্ঘকালের ভূতাত্ত্বিক সময়কাল ধরে এই পরিবর্তন জলবায়ুর উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।