রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষা ফেব্রুয়ারী মাসে করার উদ্যোগ!!
প্রচন্ড গরমে নিঃশব্দ ঘাতক হিট স্ট্রোক, সতর্ক থাকুন
ঘরে ঘরে বয়স্ক ও শিশুরা দমবন্ধ গরমে অস্থির। ঘামে ভিজে যাচ্ছে পুরো শরীর,জামা-কাপড়। শরীরে সৃষ্টি হচ্ছে জলশূন্যতা। শ্বাসপ্রশ্বাসের কষ্ট হচ্ছে অনেকেরই।
এই দুঃসহ গরমে মানুষের সামনে নেমে এসেছে নীরব ঘাতক হিট স্ট্রোক।বিশেষজ্ঞরা বলছেন,দাবদাহ বা হিট ওয়েভ কোন ছেলেখেলা নয়। অব্যবহৃত মোমবাতি রোদে রেখে দেখতে পাবেন যে তা গলে যাচ্ছে। অতএব এমন নিদারুণ পরিস্থিতিতে আপনার শরীরের ক্ষেত্রেও।
কারণ দাবদাহ হিট স্ট্রোকের প্রধান কারণ। চলমান ভয়ানক গরমে প্রকৃতিতে যে তাপদাহের সৃষ্টি হচ্ছে,তা মানুষকে হিট স্ট্রোকের মতো বিপজ্জনক পরিস্থিতির মুখোমুখি করছে।এখন সুর্য বিষুব রেখার উপর অবস্থান করার ফলে আগামী কয়েক দিন এশিয়ার বেশিরভাগ এলাকাজুড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আরও পাবে।ফলে সরাসরি রৌদ্রের আঁচ থেকে সরে থাকতে চেষ্টা করতে হবে।এই সময় তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি পর্যন্ত ওঠানামা করতে পারে।এর ফলে ডি- হাইড্রেশন ও সানস্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।এ সময় নিজে এবং পরিবারের সবাইকে পরিমাণ মত ঠান্ডা জল, জুস, সরবত পান করান। প্রত্যেকে কমপক্ষে ৪ লিটার ঠান্ডা জল পান করুন। দু- তিন দিন অন্তর ব্লাড প্রেসার চেক করার প্রয়োজন। পরীক্ষা করতে হবে রক্তে সুগারের পরিমাণ। কারণ গরমের অস্থিরতায় প্রেসার ও ব্লাড সুগার ওঠানামা করতে পারে। ঘামে, প্রেসারে, সুগারের কারণে শরীরের অবস্থা খারাপ হলে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে।তীব্র এই গরমে বার বার চিকিৎসকরা বলছেন সাবধান থাকতে হবে।
নয়তো হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সব বয়সের মানুষজনই এই হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন। বিশেষ করে যারা নিতান্তই প্রয়োজনে এই তীব্র গরম উপেক্ষা করে বাইরে বেরোচ্ছেন, তাদের ক্ষেত্রে হিট স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তীব্র রোদে দীর্ঘক্ষণ বাইরে থাকার ফলে শরীর ব্যাপকভাবে গরম হয়ে যায়। অতিরিক্ত পরিশ্রম বা ব্যায়াম করলেও এই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।গ্রীষ্মের দিনে অতিরিক্ত তাপমাত্রাজনিত কারণে শরীর অতিরিক্ত গরম হয়ে যেতে পারে। শরীরে তাপমাত্রা পৌঁছে যেতে পারে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে। এই সমস্যাকে বলা হয় হিট স্ট্রোক। যদিও হিট স্ট্রোক আরও বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে।চিকিৎসকদের মতে,হিট স্ট্রোক হলে রোগীর শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করেই অনেকটা বেড়ে যায়। শরীরের তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ৷ রোগীর ব্যাপক ঘাম হয়। শ্বাস প্রশ্বাস খুব দ্রুত হয়ে যায়। অত্যাধিক হারে বেড়ে যায় হার্টবিট রেট।
তাছাড়া রোগীর .মধ্যে তীব্র বমি বমি ভাব বা বমি হতে দেখা যায়।রোগী অদ্ভুত ব্যবহার করতে থাকেন। অনেক সময় খিচুনি হয়। মাথা ব্যাথা অনুভব হতে পারে।রোগী বারবার সংজ্ঞাহীন হয়ে যেতে পারেন।এই অবস্থায় রোগীকে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে না গেলে জীবন নিয়ে টানাটানি হতে পারে।স্বাভাবিকভাবেই গরম থেকে নিজেকে রক্ষা করা ছাড়া এর দ্বিতীয় কোনও উপায় নেই। প্রথমত প্রয়োজন ছাড়া প্রখর রোদে বেরোনো উচিত নয়। বাইরে বেরোতে হলেও তীব্র রোদে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না।অবশ্যই হালকা ঢিলেঢালা পোশাক পড়তে হবে।
বাইরে বেরিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘন ঘন খেতে হবে জল।পারলে ইলেক্ট্রোলাইট মেশানো জল খেতে হবে। রাস্তায় বেরতে হলে কিছুক্ষণ করে বিশ্রাম নিতে হবে।একটানা পরিশ্রমের কাজ করা চলবে না।করা যাবে না গরমের সময় অতিরিক্ত ব্যায়াম।পারলে জল আছে এমন ফল বেশি করে খেতে হবে। যেমন শসা, তরমুজ। ছাতা অথবা টুপি অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও সম্ভব হলে সকাল ১০ টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বাইরে না বেরনো ভালো।বয়স্কদের একটু বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সকাল এবং সন্ধ্যার দিকে সারতে হবে বাইরের প্রয়োজনীয় কাজ। নিজের প্রস্রাবের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রস্রাব বেশি হলুদ হলে জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।কফি, মদ্যপান ইত্যাদি থেকে এই সময় যতটা দূরে থাকা যায়, ততই ভাল।