প্রজন্মের স্বার্থে সবুজায়ন জোটবদ্ধ বার্তা সম্মেলনে

 প্রজন্মের স্বার্থে সবুজায়ন জোটবদ্ধ বার্তা সম্মেলনে
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি || দেশ ও বিদেশের দেড়শো জন প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সোমবার আগরতলায় শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী জি-২০ বিজ্ঞান সম্মেলন। বিশ্বের ১৯টি দিশের প্রতিনিধিগণ এদিন আলোচনার টেবিলে বসে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে পৃথিবীকে আরও বেশি সবুজ করে তোলার সমাধান সূত্র খুঁজলেন।

May be an image of 11 people and people standing


সম্মেলনে গ্রীণ হাইড্রোজেন, সমুদ্র থেকে প্রাপ্ত শক্তি এবং শক্তি সংরক্ষণের প্রসঙ্গ সবচাইতে গুরুত্ব পেয়েছে। হাপানিয়াস্থিত আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণের ইন্ডোর প্রদর্শনী হলে আয়োজিত সম্মেলন চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত। প্রথমবারের মতো রাজ্যে আয়োজিত এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উচ্ছ্বসিত রাজ্য। রাজ্যের মানুষ উষ্ণ আন্তরিকতায় স্বাগত জানিয়েছে দেশ ও বিদেশের অতিথিদের। তারা রাজ্যবাসীর আতিথেয়তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসাও করেছেন সম্মেলনের বিভিন্ন পর্বে।এ দিন সম্মেলনে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে জি-২০-র ভারতীয় প্রতিনিধি অধ্যাপক নরিন্দার মেহেরা বলেন, ত্রিপুরার আতিথেয়তা তার হৃদয়কে স্পর্শ করেছে। তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে গোটা পৃথিবীকে আরও বেশি সবুজায়ন করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। নতুন উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে।

May be an image of 3 people and people standing


এই ধরনের শীর্ষ সম্মেলনের সুযোগ যথাযথভাবে কাজে লাগানোর জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।সম্মেলনে আলোচনার প্রারম্ভিক সূচনাপর্বে ভারত সরকারের প্রিন্সিপাল সায়েন্টেফিক অ্যাডভাইজর অধ্যাপক অজয় সুদ বলেন, শিল্পায়নের ক্ষেত্রে ক্লিন এনার্জির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ক্লিন এনার্জি নিয়ে যেসব সমস্যা রয়েছে তা দূরীকরণে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। পরিবেশকে দূষণমুক্ত রেখে ক্লিন এনার্জি কীভাবে উৎপাদন করা যায় সেই বিষয়গুলি দেখা প্রয়োজন । আজকের এই আলোচনা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে নীতি নির্ধারণ এবং বিভিন্ন বিষয়গুলি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমাধানে সহায়ক হবে।ক্লিন এনার্জির ক্ষেত্রে গ্রিন হাইড্রোজেন যথাযথভাবে কাজে লাগানোর উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।সম্মেলনের সূচনাপর্বে জি-২০ সম্মেলনের সভাপতিত্বকারী দেশ ভারতের প্রতিনিধি আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টির উপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, ক্লিন এনার্জি উৎপাদনে গবেষণা, উদ্ভাবনী উদ্যোগ বর্তমানে প্রাসঙ্গিক একটি বিষয়। সম্মেলনে জি-২০-র সদস্যদেশ ব্রাজিলের প্রতিনিধি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে সবাইকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি রাজ্যের আতিথেয়তায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। ভিডিও বার্তার মাধ্যমে জি-২০-র অন্যতম সদস্য দেশ ইন্দোনেশিয়ার প্রতিনিধিও আলোচনায় অংশ নেন। সম্মেলনে জি- ২০ ভুক্ত দেশগুলির প্রতিনিধি সহ ভারত সরকারের প্রতিনিধি এবং বিজ্ঞানীরা অংশগ্রহণ করেছেন।

May be an image of 9 people, people standing and indoor



প্রথম দিনের সম্মেলন শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে ইণ্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স একাডেমির সভাপতি আশুতোষ শর্মা বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তন মোকাবিল করা ও সুস্থায়ী উন্নয়ন একা কোনও দেশের পক্ষে করা সম্ভব নয়। এটা বিশ্বব্যাপী সমস্যা। এজন্যই জি-২০ বিজ্ঞান সম্মেলন। এই সমস্যা সমাধানে আমাদের গ্লোবাল ফোর্স হিসাবে কাজ করতে হবে। জি-২০ সম্মেলনের অঙ্গ হিসাবে আজ আগরতলায় বিজ্ঞান-২০ সম্মেলনে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। জি-২০ সম্মেলনের মূল ভাবনা হলো ‘ওয়ান আর্থ,ওয়ান ফ্যামিলি, ওয়ান ফিউচার’ অর্থাৎ এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ।

May be an image of 14 people and people standing


সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভারত সরকারের প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক উপদেষ্টা প্রফেসর অজয় সুদ। সাংবাদি সম্মেলনে সভাপতি শ্রীশর্মা জানান, বিজ্ঞান-২০ সম্মেলনের মূল ভাবনা হলে ‘সবুজতর ভবিষ্যতের জন্য পরিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ’ (ক্লিন এনার্জি ফর গ্রিনার ফিউচার)এই সম্মেলনে ১০টি দেশের বিজ্ঞানীগণ অংশ নিয়েছেন। অন্যান্য সদস্য দেশের বিজ্ঞানীগণ বিভিন্নভাবে তাদের অভিমত জানিয়েছেন। তিনি জানান, আমাদের সুস্থায়ী উন্নয়ন ও আবহাওয়ার পরিবর্তন মোকাবিলা করার জন্য ক্লিন এনার্জি খুবই প্রয়োজন। এ বিষয়ে বিশ্বে নতুন নতুন আবিষ্কার আমাদের আশার সঞ্চার করছে। ক্লিন এনার্জির বিষয়ে আলোচনায় তিনটি বিষয় সবথেকে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। এগুলি হলো গ্রিন হাইড্রোজেন, সমুদ্র থেকে প্রাপ্ত শক্তি এবং শক্তি সংরক্ষণ। তিনি বলেন, ভবিষ্যতের জন্য শক্তি সংরক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।সাংবাদিক সম্মেলনে শ্রীশর্মা জানান, বিদেশ থেকে এবং ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে সম্মেলনে যোগ দিতে যারা আগরতলায় এসেছেন তারা দারুণ অভিজ্ঞতা নিয়ে এখান থেকে ফিরে যাবেন।এই রাজ্যের মানুষের আতিথেয়তা, সংস্কৃতি ও রাজ্য সরকারের ব্যবস্থাপনা তারা সব সময় স্মরণ করবেন।সাংবাদিক সম্মেলনে প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক উপদেষ্টা প্রফেসর অজয় সুদ বলেন, গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদন করার লক্ষ্যে ভারত সরকার ১৮,০০০ কোটি টাকার গ্রিন হাইড্রোজেন মিশন চালু করেছে।এর পেছনে মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ২০৭০-এর মধ্যে নেট জিরো কার্বন এমিশন অর্জন করা। সাংবাদিক সম্মেলনে শিল্প বাণিজ্য দপ্তরের সচিব তথা জি-২০ সম্মেলনের নোডাল অফিসার অভিষেক চন্দ্রাও উপস্থিত ছিলেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.