প্রতারণার ফাঁদে পা নয়ঃ জিতেন
সংকল্পপত্রেই পরাজয় নিশ্চিত হয়ে গেছে বিজেপির। শাসকদল বিজেপি পরাজয় নিশ্চিত জেনেই বিদায়লগ্নে এসে সংকল্পপত্রের মাধ্যমে আবারও জুমলাবাজির আশ্রয় নিয়েছে। ২০১৮ সালে ভিশন ডকুমেন্টের জুমলাবাজি থেকে শিক্ষা নেওয়া রাজ্যবাসী বিজেপির নতুন করে পাতা প্রতারণার ফাঁদে আর পা দেবেন না। বৃহস্পতিবার সাব্রুমের পূর্ব টেক্কা, দশরথনগর, পাটিঘাটা, চাতকছড়ি, সোনাই বাজার, বিজয়নগর সহ চৌদ্দটি স্থানে নির্বাচনি সভায় এভাবেই বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন চৌধুরী।তিনি এদিনও বিশালগড়ে এসডিপিও রাহুল দাসকে পদ থেকে অপসারণ করা,পোল্টাল ব্যালটে ভোটগ্রহণ পর্ব একাংশ ক্ষেত্রে সঠিক পথে হচ্ছে না। অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনেও চিঠি দেন। এদিকে, জিতেন চৌধুরী নির্বাচনি সভায় আরও বলেন, ঢালাও হারে অর্থ বিলি করেও মানুষের সাড়া পাচ্ছে না জনবিরোধী বিজেপি। এমনকী কাজে আসছে না তাদের কোনও প্রলোভনও। ফলে এদের রাজ্য ও কেন্দ্রের নেতারা সম্পূর্ণ হতাশ। আর ভবিষ্যৎ পরিণতির কথা ভেবে ইতিমধ্যে বাইকবাহিনীর ৯৯ শতাংশ সদস্যও বাড়িতে বসে গেছেন। কারণ তারা বুঝতে পারছেন বিজেপি দল ক্ষমতায় টিকে থাকতে তাদের বেআইনি কাজে ব্যবহার করেছে। কিন্তু এই বেকারদের চাকরি দিতে পারবে শুধুমাত্র বামফ্রন্ট সরকার। আর বিজেপি দল বেকারদের চাকরি না দিয়ে গুণ্ডাবাহিনীতে পরিণত করেছে এবং নেশার সাগরে ছেড়ে দিয়েছে। এই সত্যটা এখন রাজ্যের বেকার যুবসমাজও বুঝে গিয়েছেন। জিতেনবাবুর দাবি, বিজেপির জেলা সভাধিপতি, পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, রাজ্য কমিটির সদস্য সহ তাবড় তাবড় নেতারা রাজ্যের দিকে দিকে গণহারে শতশত মানুষ নিয়ে বিজেপি দলত্যাগ করে সিপিএমে শামিল হচ্ছেন। দিল্লী ও বিভিন্ন রাজ্য থেকে চার্টার্ড বিমানে টাকা এনেও কোনও কাজ না হওয়ায় পরাজয়ের আতঙ্কে হতাশায় ডুবে গেছে বিজেপির নেতারা। বিজেপি নেতারা বুঝে গেছেন, মানুষকে দাদনের অর্থ দিলেও রাজ্যবাসী তাদের আর একটি ভোটও দেবেন না। এই পরিস্থিতিতে পরাজয় নিশ্চিত জেনেই, হাতেগোনা কিছু বখাটে সমাজদ্রোহীকে দিয়ে সন্ত্রাসের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছে বিজেপি। কারণ রাজ্যে বিজেপির দিন শেষ হয়ে গেছে। তবে এদিন আবার রাজ্যবাসী নতুন বিশ্বাসঘাতকতার দলিল প্রত্যক্ষ করলেন। কারণ সংকল্পপত্রে বিজেপি বলেছে পাঁচ টাকার বিনিময়ে নাকি রান্না করা খাবার পাওয়া যাবে। কিন্তু কবে নাগাদ এবং কোথায় ও রাজ্যের কোন্ কোন্ স্থানে এই স্টল থাকবে এর কোনও উল্লেখ নেই। এতে করে রাজ্যবাসী আবারও বুঝে গেছেন, এসব প্রতিশ্রুতি হল এক ধরনের জুমলা। তবে ভালো দিক হলো রাজ্যবাসী বিজেপির কোনও প্রতিশ্রুতিতে এখন কর্ণপাত করছেন না। কারণ মানুষ বিজেপিকে বিদায় জানাতে ঘরে ঘরে প্রস্তুত রয়েছেন। জিতেন চৌধুরী দাবি করেন রাজ্যে পুনরায় বামফ্রন্ট সরকার হচ্ছে। আর বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় এসে আড়াই লক্ষ বেকার যুবক যুবতীকে কর্মসংস্থান প্রদান করবে। বয়স উত্তীর্ণ বেকারদের সরকারী চাকরির ক্ষেত্রে ছাড় প্রদান করবে। শিক্ষক-কর্মচারী, সর্বশিক্ষা, এনএইচএম, রেগা প্রকল্প সহ অন্যান্য প্রকল্পের কর্মচারী এবং অনিয়মিত ও চুক্তিবদ্ধ কর্মচারীদের সব সমস্যার সমাধান করবে। ১০৩২৩ শিক্ষক শিক্ষিকা সহ অন্যান্যভাবে ছাঁটাইকৃতদের চাকরি ফিরিয়ে দেবে। কৃষক, শ্রমিক, জুমিয়া, ক্ষুদ্র, মাঝারি সহ অন্যান্য ব্যবসায়ীদের সমস্যার সমাধান করা হবে। অন্যায়ভাবে বাতিল করে দেওয়া পরিবারগুলিকে পুনরায় সামাজিক ভাতা প্রদান করা হবে। এমনকী রেগা ও টুয়েপের কাজ পুনরায় সঠিকভাবে চালু করা হবে। ১২৫ তম সংবিধান সংশোধন করে এডিসিতে অধিক অর্থ ও ক্ষমতা প্রদান করা এবং ককবরক ভাষাকে অষ্টম তপশিলে শামিলের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বামফ্রন্ট। তিনি এদিন সকলকে রাজপথে নামার পাশাপাশি বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস প্রার্থীদের বিপুলভাবে ভোট প্রদানের আহ্বান জানান। তিনি কমিশন ও প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, গণতন্ত্র রক্ষায় সঠিকভাবে কাজ করুন। তা না হলে ভোটাধিকার রক্ষায় মানুষ প্রতিরোধে শামিল হবেন। কারণ মানুষ প্রস্তুত।