প্রতিপক্ষকে চাপ!!

 প্রতিপক্ষকে চাপ!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে ৩৭০ আসন জেতার লক্ষ্যমাত্রা ২ আগেই ঘোষণা করেছিল বিজেপি।এবার ভোটের দিন তারিখ ঘোষণার অনেকটা আগেই প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা শনিবার ঘোষণা করল দল।প্রথম পর্বে যে ১৯৫ আসনে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে গেরুয়া শিবির,তার মধ্যে ১৬ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের লোকসভার আসন রয়েছে।প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা সংক্রান্ত দলের সর্বোচ্চ কমিটির বৈঠক বসেছিল বৃহস্পতিবার বিকেলেই। যদিও সংবাদ মাধ্যমে খবর অনুযায়ী এই বৈঠক গড়ায় শুক্রবার ভোর অবধি। শাহ-নাড্ডার উপস্থিতিতে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন। দেশের নির্বাচন কমিশন এই মুহূর্তে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছে।ইতোমধ্যেই দেশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ রাজ্যেই কমিশনের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ তাদের সফর শেষ করে ভোট প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছেন।প্রাথমিক খবর, চলতি মাসের ১০-১২ তারিখের মধ্যেই ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের চূড়ান্ত নির্ঘন্ট প্রকাশ করতে চলেছে।নির্বাচন কমিশন।১ মার্চ বিজেপির কেন্দ্রীয় নির্বাচনি কমিটির বৈঠকেই দলের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল।দলের সাধারণ সম্পাদক বিনোদ তাওড়ে প্রার্থী তালিকার প্রথম দফা ঘোষণা করে জানিয়েছেন, প্রকাশিত তালিকায় ২৭ জন তপশিলি জাতি,১৮ জন তপশিলি উপজাতি এবং ৫৭ জন ওবিসি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি স্থান পেয়েছেন। এছাড়া প্রথম তালিকায় ৩৪ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নাম রয়েছে, যার মধ্যে ২৮ জন মহিলা।প্রার্থী তালিকা থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার, নিজেদের একক শক্তি যেখানে বেশি সেরকম রাজ্যগুলোতেই প্রথম দফায় তালিকা প্রকাশ করেছে বিজেপি।অর্থাৎ অন্য শরিক দলের মুখাপেক্ষি হতে হবে না এমন রাজ্যগুলোতেই প্রথম তালিকা প্রকাশ করলো দল। যে রাজ্যগুলোকে বিজেপির জোট শরিকদের প্রয়োজন কিংবা এনডিএ জোটের সঙ্গে এখনও আসন চুড়ান্ত হয়নি, সেখানে আপাতত প্রার্থী নিয়ে এগোয়নি পদ্ম শিবির।যে কারণে মহারাষ্ট্র,বিহার, কর্ণাটকের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে দল প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি প্রথম দফায়।যদিও তালিকায় একেবারেই কোন চমক ছিল না,সেটা মথুরায় হেমা মালিনী থেকে শুরু করে কোটার ওম বিড়লার টিকিট প্রাপ্তি থেকেই স্পষ্ট।যদিও মুখে মুখে পরিবারতন্ত্রের ঘোর বিরোধী মোদি দিল্লীতে সুষমা স্বরাজের অরাজনৈতিক কন্যাকেই প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।তাৎপর্য পূর্ণ দিক হলো, বিজেপি নিজেকে জাতপাতের রাজনীতির ঊর্ধ্বে প্রচার করলেও রাহুল গান্ধী ভারত জুড়ো ন্যায় যাত্রায় জাতিভিত্তিক গণনার দাবিতে জেহাদ শুরু করতেই এর আঁচ যে বেশ ভালোভাবে বিজেপির অন্দরে ধাক্কা দিতে শুরু করেছে তা বোঝা যায় প্রার্থী ঘোষণায় জাতপাতভিত্তিক কত আসনে কত জন প্রাথী বিজেপি এবার দাঁড় করিয়েছে তার হিসাবও এখন প্রকাশ করতে হচ্ছে দলীয় তরফে।ভোট ঘোষণার আগেই সর্বাগ্রে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে প্রতিপক্ষের উপর মানসিক চাপ তৈরি করার কৌশলে বিজেপি সবাইকে টেক্কা দিলেও, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রথম পর্বে অন্তত বিজেপি যে সাহসী পদক্ষেপ নিতে পারেনি,প্রকাশিত তালিকা দেখেই এর ইঙ্গিত মিলেছে। তালিকায় ৭০ ঊর্ধ্ব এমন বেশকিছু নাম রয়েছে যাদের ইতিপূর্বে সংসদীয় রাজনীতি থেকে এবার অবসরের কথা বলা হলেও কার্যক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করা সম্ভব হয়নি।খুব সম্ভবত রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা, এবং নির্বাচনি কঠিন লড়াইয়ের কথা মাথায় রেখেই মুখ বদলের রাস্তায় হাঁটতে সাহস দেখাননি মোদি-শাহ জুটি।৫৪৩ আসনের লোকসভায় এখনও সিংহভাগ আসনে প্রার্থী ঘোষণা বাকি।বিশেষ করে দক্ষিণ ভারত এবং পূর্ব ভারত নিয়ে বিজেপি যে যথেষ্ট বেকায়দায় এর প্রতিফলনও স্পষ্ট।দেশের সবচেয়ে বেশি লোকসভার আসন সংখ্যা যে রাজ্যে সেই উত্তরপ্রদেশে ৮০টি আসনের মধ্যে ৫১টি আসনে প্রথম তালিকায় প্রার্থী ঘোষণায় দেখা গেছে,২০১৯-এর তালিকা থেকে মাত্র ৪টি কেন্দ্রে দল নতুন মুখ আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিন্দুকদের একাংশ বলছে,গেরুয়া শিবিরে প্রকাশিত প্রথম তালিকায় চমকের তুলনায় উদ্বেগের ছবিটাই কোন না কোন ভাবে ধরা পড়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে।অপেক্ষাকৃত কঠিন আসনগুলোর জন্য এখনও যেমন প্রার্থী বাছতে পারেনি দল, তেমনি এনডিএ জোটের শরিকদের মধ্যে আসন বাটোয়ারা নিয়ে যেখানে জটিলতা বা ‘মতান্তরের আশঙ্কা থাকছে সেখানেও প্রার্থী তালিকা নিয়ে বেশিদূর এগোয়নি পদ্ম শিবির।তবে মনস্তাত্ত্বিকভাবে প্রতিপক্ষের উপর চাপ ‘বাড়াতে প্রথম তালিকা প্রকাশ করার বিজেপির কৌশল শেষ পর্যন্ত কতটা কাজে লাগে সেটাই দেখার।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.