বিভৎস ট্রেন দুর্ঘটনা, ছিটকে গেল চলন্ত তিনটি মালগাড়ির কামরা!!
প্রতিযোগিতা জিতলেই পুরস্কার মিলবে বাঘ,সিংহ ও ম্যাকাও

আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র ঐতিহাসিক ঘোষণা সবচেয়ে আলিপুর চিড়িয়াখানার । বড় বিড়ালদের মধ্যে বৃহত্তমের সংখ্যা হ্রাসের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতেই এই উদ্যোগ । আন্তর্জাতিক একাধিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে , তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পশু পাখিদের প্রেম জাগ্রত করতে পারলেই রক্ষা করা যাবে তাদের । এবার তাই সেই পথে হাঁটতে চলেছে আলিপুর চিড়িয়াখানা । প্রতিযোগিতায় জিতলে অভিনব উপহার । বইখাতা , পেন , পেনসিল নয় , একটা পশু বা পাখি দত্তক নেওয়ার সুযোগ একেবারে বিনামূল্যে । কচিকাঁচাদের জন্য এমনই উপহারের ডালি সাজাতে চলেছে আলিপুর চিড়িয়াখানা ।

বড়দিন , শিশুদিবস , ব্যাঘ্র দিবসের মতো বছরে বিশেষ দিনগুলিতে স্কুল ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ । এই ধরনের প্রতিযোগিতায় পুরস্কার হিসাবে এতদিন থাকত , বইখাতা অথবা পেন , পেনসিল বক্স । সঙ্গে দেওয়া হয় একটি শংসাপত্র । এখন আর এসব পুরস্কারের তালিকায় সেইসব জিনিস থাকছে না । জয়ী প্রতিযোগীরা এবার পুরস্কারে বাঘ , সিংহ , ম্যাকাও পাবেন । এক মাসের জন্য এদের দত্তক নিতে পারবেন । তবে শর্ত একটাই । পুরস্কারে পাওয়া উপহার বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবে না জয়ীরা ।

তবে চাইলে যে কোনও সময় চিড়িয়াখানায় এসে তাদের সঙ্গে দেখা করতে পারবে তাদের দত্তক নেওয়া জীবজন্তুর সঙ্গে । পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য জু অথরিটির মেম্বারস সেক্রেটারি সৌরভ চৌধুরী বলেছেন , ‘ এখন থেকে চিড়িয়াখানায় কোনও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করলে জয়ী ছাত্রছাত্রীদের পুরস্কার হিসাবে বাঘ , সিংহ , ম্যাকাও , কাকাতুয়া দত্তক দেওয়া হবে।বিনামূল্যে তারা একমাসের জন্য এদের অভিভাবক হতে পারবে । দত্তক নেওয়া অন্য প্রাণীর খাঁচার সামনে অভিভাবকদের নামের বোর্ড টাঙানো হয় । তেমনভাবেই পুরস্কার পাওয়া পশুপাখিদের খাঁচার সামনেও জয়ীদের নামের বোর্ড টাঙানো হবে । ‘

দীর্ঘদিনের ব্যাঘ্র গবেষক মধু ভার্মা জানালেন , ‘ একশো বছর আগে , এশিয়ায় ঘুরে বেড়াত এক লক্ষ বাঘ । আজ , আনুমানিক বাঘের সংখ্যাটি ৪ হাজারেরও কম । আজকের দিনের অন্যতম লক্ষ্য হল ২০৩০ সালের মধ্যে এই সংখ্যাটি দ্বিগুণ করা । এটিকে টিএক্স -২ উদ্যোগ বলা হচ্ছে । ‘ গত এক দশকের পরিসংখ্যান বলছে ভারতে বাঘের সংখ্যা হ্রাসের মূল কারণ চোরাশিকারীদের উপদ্রব । গত বছর , একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভাষণ দিতে থেকে মধু ভার্মা বলেছিলেন , তরুণ সমাজকে যদি এগিয়ে নিয়ে আসা যায় তাহলে কেবল বাঘ নয় যে কোন বন্যপ্রাণীর সুরক্ষা বাড়ানো সম্ভব । বনকর্মী দিয়েই শুধু এই রক্ষাকবচ তৈরি করা সম্ভব নয় ।

ভারতের চিড়িয়াখানাগুলির মধ্যে প্রথম আলিপুর চিড়িয়াখানা বন্যপ্রাণীকে দত্তক নেওয়ার পথ দেখিয়েছিল । এতে একদিকে যেমন বন্যপ্রাণীদের খাওয়ার খরচ তোলা সম্ভব হয়েছে ,তেমনি দর্শকদের মধ্যেও বন্যপ্রেম জেগে উঠেছে বলে একাধিক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে । বন্যপ্রাণীদের সঙ্গে মানুষের সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে দত্তক প্রথা যা আলিপুর চিড়িয়াখানা শুরু করেছিল তাকে কুর্নিশ জানিয়েছে দেশের একাধিক চিড়িয়াখানা । বার্ষিক ও মাসিক দুই চুক্তিতে পশুপাখি দত্তক নেওয়া যায় । এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ আর্থিক বিনিময়ে দত্তক দিয়ে থাকে । আলিপুর চিড়িয়াখানার সব সদস্যর দত্তক মূল্য এক নয় ।

একটি বাঘ কিংবা সিংহ দত্তক নিতে বছরে ২ লক্ষ টাকা লাগে । মাসিক খরচ পড়ে ২০ হাজার টাকা । দত্তক নেওয়ার সাধ থাকলেও সকলের সাধ্যে কুলায় না । আর্থিক কারণে যারা দত্তক নিতে এগিয়ে আসতে পারেন না তাদের জন্য গতবছর থেকেই বার্ষিক দত্তক পদ্ধতি তুলে মাসিক দত্তক পদ্ধতি চালু করেছিল আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ । চিড়িয়াখানার বর্তমান অধিকর্তা আশিস কুমার সামন্ত বলেছেন , ‘ মাসিক দত্তক পদ্ধতি চালু হওয়ায় একদিকে যেমন কম খরচে পশুদের দায়িত্ব নিতে পারছেন আগ্রহীরা তেমনি দত্তক নেওয়ার সংখ্যাও উত্তোরত্তর বাড়ছে । ‘