নয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ভার্চুয়াল বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী!!
প্রতি বছর প্রায় ১০০ আত্মহত্যা, আজও রহস্যে ঘেরা জাপানের অওকিগাহারা।

আত্মহত্যার খতিয়ানে সান ফ্রান্সিসকোর গোল্ডেন ব্রিজের পরেই বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে জাপানের অওকিগাহারা জঙ্গল। প্রতি বছর গড়ে একশো মানুষ এখানে কেন আত্মহত্যা করেন, সমাজবিজ্ঞানীরা সেই রহস্য আজও ভেদ করতে পারেননি। জাপান সরকার নানা চেষ্টা করেও সেখানে আত্মহত্যার ঘটনা আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে। জাপানের ফুজি পর্বতমালার উত্তর- পশ্চিমে প্রায় ৩৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা জঙ্গল অওকিগাহারা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষা বলছে, প্রতি বছর গড়ে ১০০ জন মানুষ আত্মহত্যা করেন। প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একটি করে আত্মহননের ঘটনা ঘটে। আত্মহত্যা থেকে বিরত থাকার নানা পরামর্শ বা সতর্কবার্তায় একাধিক সাইন বোর্ড ঝোলানো রয়েছে অওকিগাহারা জঙ্গলের আনাচে কানাচে।তবুও এখানে এসে মানুষের আত্মহত্যা আটকানো যাচ্ছে না । একাধিক পরিসংখ্যান থেকে জানা যাচ্ছে, আত্মহত্যার সংখ্যার নিরিখে অওকিগাহারা জঙ্গল বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এই প্রশ্নে প্রথম স্থানে আছে আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোর গোল্ডেন ব্রিজ। কেন এত মানুষ এই জঙ্গলে এসে আত্মহত্যা করেন, তা নিয়ে একাধিক ব্যাখ্যা রয়েছে। তবে সেগুলি যে খুন নয়,আত্মহত্যাই, তা নিয়ে বিশেষ সংশয় নেই জাপানের প্রশাসনিক মহলে। অওকিগাহারা জঙ্গলের ভিতরে ঢুকে পড়লে মোবাইল ফোন, জিপিএস কার্যত অকেজো হয়ে পড়ে। ঠিক মতো কাজ করে না কম্পাসও।তাই দিক ভুল করে বা কোনও ভাবে এই জঙ্গলের ভিতরে ঢুকে পথ হারিয়ে গেলে সাহায্যের জন্য ফোন করে কাউকে ডাকা এখানে অসম্ভব! বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অওকিগাহারা জঙ্গলের মাটি চৌম্বকীয় আয়রনে সমৃদ্ধ, যা মোবাইল ফোনের পরিষেবা, জিপিএস সিস্টেম এবং এমনকী কম্পাসগুলিকে অকেজো করে দিতে পারে। তাই এখানে আসা পর্যটক-গবেষকরা উজ্জ্বল রঙের প্লাস্টিকের টেপ দিয়ে গাছের গায়ে বিশেষ চিহ্ন দিয়ে রাখেন, যাতে জঙ্গলে ঢুকে পথ হারাতে না হয়। শোনা যায়, ঊনবিংশ শতাব্দীতে এই অওকিগাহারা এলাকায় ‘উবাসুতে’ নামে এক বিচিত্র রীতি পালিত হতো। সেই রীতি অনুযায়ী, মৃত্যুশয্যায় থাকা প্রবীণ মানুষদের এই জঙ্গলে এসে ছেড়ে চলে যেতেন তাদের পরিবারের লোকজন।এর পর এখানেই তাদের মৃত্যু হতো। স্থানীয়দের মধ্যে এখনও অনেকের বিশ্বাস, অওকিগাহারা জঙ্গলে ওই মৃত ব্যক্তিদের আত্মা এখনও ঘুরে বেড়ায়। কোনও জীবিত ব্যক্তি এখানে এলে তাকেও নানা ভাবে প্রভাবিত করে এই আত্মারা। ১৯৮৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত গড়ে প্রতি বছর ১০০ জন অওকিগাহারা জঙ্গলে এসে আত্মহত্যা করেছেন। তবে ২০০৪ সালের পর থেকে স্থানীয় প্রশাসন অওকিগাহারা জঙ্গলে পাওয়া মৃতদেহের সংখ্যা প্রকাশ করা বন্ধ করে দেয়।