প্রতি ৬ মাসে বাসিন্দাদের নাগরিকত্ব বদলায়, আজব দ্বীপের নাম ফেজ্যান্ট
রাতে যখন ঘুমোতে যাবেন তখন আপনি স্পেনের নাগরিক। সকাল যখন সেই ঘুম
ভাঙবে, তখন আপনি ফ্রান্সের নাগরিক! আজব কাণ্ডই বটে। না, স্বপ্নে নয়, বাস্তবেই এমন ঘটনা ঘটে। তবে সবটাই ভূগোলের ক্যারিশ্মা। ফেজ্যান্ট এমনই এক বিচিত্র দ্বীপ,
যেখানে বাসিন্দারা ৬ মাস স্পেনের বাসিন্দা হয়ে থাকেন, পরবর্তী ৬ মাস ফ্রান্সের বাসিন্দা। হ্যাঁ, সত্যিই এই দ্বীপে প্রতি ছয় মাস শাসন করে একটি দেশ। কখনও স্পেন, পরের ছয় মাস ফ্রান্স। অতএব স্পেন ও ফ্রান্সের যৌথ মালিকানা রয়েছে ফেজ্যান্ট দ্বীপে। বহিরাগতরা সহজে এই দ্বীপে প্রবেশ করতে পারে না। প্রতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারী থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ওই ফেজ্যান্ট থাকে স্পেন সরকারের অধীনে। অর্থাৎ, ওই সময়
কেউ যদি ওই দ্বীপে পা রাখেন, তা হলে তিনি হবেন স্পেনের বাসিন্দা। আবার ১ আগস্ট থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ওই দ্বীপটি ফ্রান্স সরকারের অধীনে থাকে। তখন আপনি ফেজ্যান্টে গেলে আপনি জানবেন ফ্রান্সে বেড়াতে গেছেন। এই ভাবে ছয় মাস অন্তর অন্তর দ্বীপটিদুই দেশের অধীনে থাকে। প্রতি বছরের পয়লা ফেব্রুয়ারী ফরাসি বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিকেরা স্পেনের আধিকারিদের সঙ্গে মিলিত হয়ে দ্বীপটির মালিকানা স্পেন সরকারকে অর্পণ করেন। আবার একই প্রথায় ১ আগস্টে দ্বীপের মালিকানা স্পেন সরকারের থেকে গ্রহণ করেন। এই দ্বীপ হল সবচেয়ে ছোট ও পুরোনো ‘কন্ডিমিনিয়াম’। অর্থাৎ এমন একটা
অঞ্চল, যেখানে একাধিক দেশ নিজেদের মধ্যে কোনও সীমান্ত ভাগাভাগি না করে সমান ভাবে সেখানে আধিপত্য বিস্তার করে। এ ক্ষেত্রে যেমন ফ্রান্স ও স্পেন যৌথ ভাবে ওই দ্বীপটি চালনা করে। যেন অনেকটা কোনও রাজ্যের দুই দলের মিলিজুলি সরকার। আড়াই বছর একটি দলের মুখ্যমন্ত্রী, পরের আড়াই বছর অন্য দলের মুখ্যমন্ত্রী। ফ্রান্স ও স্পেনকে আলাদা করেছে বিদাসোয়া নামের একটি নদী। ওই নদীর মাঝখানেই রয়েছে সুন্দরী দ্বীপ ফেজ্যান্ট দ্বীপ। তবে এই
দ্বীপে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নাস্তি। এমনকী ফ্রান্স ও স্পেনের নাগরিকরাও ফেজ্যান্টে যেতে পারেন না। অনুমতি নেই পর্যটকদেরও। শুধুমাত্র ফ্রান্স ও স্পেনের নৌবাহিনীর সদস্যরাই ওই দ্বীপে যেতে পারেন। মূলত রক্ষণাবেক্ষণের জন্যই তারা সেখানে যান। এছাড়া দু’দেশের ফ্রান্স ও স্পেনের দুই পুরসভার কর্মীরাও ওই দ্বীপে পা রাখার অনুমতি পান।