প্রত্যাশা মতোই এবার ব্যালন ডি’অর উঠল বেনজেমার হাতে

 প্রত্যাশা মতোই এবার ব্যালন ডি’অর উঠল বেনজেমার হাতে
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

গত মরশুমে লিওনেল মেসির তেমন কোনও বড় সাফল্য ছিল না। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোও ছিলেন নিষ্প্রভই। আর রবার্ট লেভানডভস্কি গোল পেলেও তা যে ব্যলন ডি’অর জেতার জন্য যথেষ্ঠ ছিল না সেটা আগেই অনুমান করা গিয়েছিল। তাই এবারের ব্যালন ডি’অর জেতার ক্ষেত্রে যে নামটা সব থেকে বেশি উচ্চারিত হয়েছিল সেটি হল করিম বেনজেমা। আর বেশিরভাগ মানুষের যা অনুমান ছিল সেটাই শেষ পর্যন্ত ধরা দিল বাস্তব হয়ে। প্রত্যাশামতোই ২০২২ সালের ব্যালন ডি’অর জিতলেন করিম বেনজেমা। প্রথমবার এই ট্রফির মালিক হলেন ফরাসি ফুটবলার। ২৪ বছর পরে ফের সেরা ফুটবলাররের শিরোপা উঠল ফ্রান্সের কোনও ফুটবলাররের হাতে।

শেষবার ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের ফুটবলার হিসাবে জেনেদিন জিদান ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দুরন্ত পারফরম্যান্স করেই এই খেতাব জিতে নিলেন তিনি। অন্যদিকে, দ্বিতীয়বারের জন্য মহিলাদের ব্যালন ডি’অর পেলেন স্পেনের অ্যালেক্সিয়া পুতেয়াস। শুধু তাই নয় এদিন বেনজেমা এই পুরস্কার জিতে আরও একটি নজির গড়ে ফেলেছেন। ১৯৫৬ সালের পর থেকে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসাবে ব্যালন ডি’অর জেতার নজিরও গড়লেন করিম। কিছুদিন আগেই সংবাদ মাধ্যমকে একটি বিবৃতি দিতে গিয়ে করিম বেনজেমাকে নিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো অ্যান্সেলোত্তি বলেছিলেন, ‘বেনজেমা হল ওয়াইনের মতো। যত সময় যায়, তত উপাদেয় হয়।’ তা যে আক্ষরিক অর্থেই সত্যি সেটা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল ব্যালন ডি’অরের মঞ্চে।

মাইকেল প্লাতিনি, রেমন্ড কোপা, জেনেদিন জিদান, জিন-পিয়েরে পাপিনের পর বেনজেমা পঞ্চম ফরাসি ফুটবলার হিসাবে এই খেতাব জিতলেন। গত বছর সপ্তমবার ব্যালন ডি’অর জেতা মেসি এবার ৩০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায়ই ছিলেন না। ২০০৫ সালের পর যা প্রথম। ২০২১-২২ মরশুমে রিয়ালের রেকর্ড ১৪তম চ্যাম্পিয়ান্স লিগ জয়ের ক্ষেত্রে বড় অবদান ছিল বেনজেমার। ১৫ টি গোল করে সেই আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন তিনি। এর মধ্যে বেনজেমা ১০টি গোলই নকআউট পর্বে করেছিলেন। শুধু তাই নয় একের পর এক ম্যাচে রিয়ালের রূপকথার প্রত্যাবর্তনের নায়কও ছিলেন তিনি। বিশেষ করে শেষ ষোলো ও কোয়ার্টার-ফাইনালে এই ফরাসি তারকার হ্যাটট্রিকেই পিএসজি ও চেলসিকে পরাজিত করে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। তারপর সেমি-ফাইনালে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির বিরুদ্ধে দুই লেগ মিলিয়ে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেওয়া গোলটি বেনজেমার পা থেকেই এসেছিল।

শুধু এখানেই শেষ নয়। গতবার রিয়ালের লা লিগা জয়েও বড় অবদান রেখে বেনজেমা ঘরোয়া আসরে সর্বোচ্চ ২৭ টি গোল করেছিলেন। এছাড়া ক্লাবের স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ের পথে তিনি সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে একবার করে গোল পান। মাদ্রিদের এই সেরা ক্লাবটির হয়ে গত মরশুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৬ টি ম্যাচে বেনজেমা ৪৪ টি গোল করেছিলেন। ব্যালন ডি’অর জিতেও বেনজেমার মুখে উঠে এল টিমগেমের কথা। পুরস্কার নিয়ে মঞ্চে উঠে তিনি বললেন, ‘এই জয় দলের সকলের। হয়তো এই ট্রফি আমি একাই পেয়েছি। কিন্তু দলের অন্যদের সহযোগিতা ছাড়া আমি গোল করতে পারতাম না। সবসময় বিশ্বাস করি, ফুটবল আসলে দলের খেলা। আমি নিজেও সবসময় দলের জন্যই খেলে যেতে চাই।’ জিনেদিন জিদানকে আদর্শ করেই ফুটবল খেলেন বলেও জানান বেনজেমা।

প্রসঙ্গত, মেসি-রোনাল্ডো-নেইমার ত্রয়ীর কেউই চলতি বছরের ব্যালন ডি’অর খেতাবের দৌড়ে ছিলেন না। সেরা ফুটবলারের খেতাব জেতার দৌড়ে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন লিভারপুলের সাদিও মানে। তৃতীয় হয়েছেন ম্যাঞ্চেস্টার সিটির কেভিন দে ব্রুইন। ব্যালন ডি’অরের পাশাপাশি সোমবার অন্যান্য পুরস্কারগুলিও ঘোষণা করা হয়েছে ফিফার তরফ থেকে। মরশুমের সেরা ক্লাব হয়েছে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। সেরা স্ট্রাইকারের পেয়েছেন বার্সেলোনার পুরস্কার পেয়েছেন রবার্ট লেভানডভস্কি। থিবো কুর্তোয়ার হাতে উঠেছে সেরা গোলকিপারের শিরোপা।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.