প্রধানমন্ত্রীকে অনুসরণ করতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী।
অনলাইন প্রতিনিধি || যোগার মাধ্যমে আত্মপরিচিতি লাভ করা যায়। যোগা যেমন শরীর ও মনকে সুস্থ রাখে,তা মেধার বিকাশ ঘটাতেও সহায়তা করে।সোমবার ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগা হেলথ অ্যাণ্ড হ্যাপিনেস শীর্ষক দুদিনব্যাপী জাতীয় সেমিনারের উদ্বোধন করে এমনই বললেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীর শিক্ষা বিভাগ ওই কর্মশালার
আয়োজন করে।প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,যোগাকে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি দেওয়া এবং প্রতিবছর ২১ জুন দিনটিকে আন্তর্জাতিক যোগা দিবস পালন করা সম্ভব হচ্ছে বর্তমান প্রাধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগের জন্য।১১ ডিসেম্বর ২০১৪সালে তিনি জাতিসংঘের কাছে আহ্বান রেখেছিলেন ২১ জুন দিনটিকে আন্তর্জাতিক যোগা দিবস হিসাবে পালন করার জন্য। তার এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২১ জুনকে আন্তর্জাতিক যোগা দিবসের স্বীকৃতি দেয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যোগা শুধু এক ধরনের শারীরিক অনুশীলনই নয়, তা হচ্ছে প্রাচীন দর্শন। যদি আমরা নিজেকে প্রশ্ন করি আমি কে? বই পড়ে এর যথার্থ উত্তর পাওয়া সম্ভব নয়।এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় যোগার মাধ্যমে।আমাদের মন,শরীরসহ সমস্ত কিছুর পূর্ণাঙ্গ বিকাশ হয় যোগার মাধ্যমে। তিনি বলেন, রাজ্যের অনেক যুবক যুবতী অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে যোগা করছেন এবং জাতীয় এমনকী।আন্তর্জাতিক স্তরে রাজ্যের নাম উজ্জ্বল করছেন, সেই সঙ্গে পুরস্কার জয় করে আনছেন। বহিঃরাজ্যে পড়াশোনা করাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের প্রতিযোগিতাগুলিতেও সাফল্যের সঙ্গে যোগাতে তিনি অংশ নিতেন বলেও এ দিন উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন,তারা যেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অনুসরণ করেন।মুখ্যমন্ত্রীর মতে, প্রধানমন্ত্রীর নিত্যদিনের কাজকর্মগুলিকে ফলো করলেই অনেক কিছুই জানা সম্ভব। বিশেষ করে মন কি বাত অনুষ্ঠানে তিনি সকলের সামনে নতুন নতুন বিষয় তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী এবছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যোগা কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। তিনি সবসময় আমাদের নতুন দিশা দিয়ে যাচ্ছেন, এর মধ্য দিয়ে ভারতসহ সারা বিশ্ব সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যখন আন্তর্জাতিক যোগা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তখন শুরুতেই কিছু ইসলামিক দেশ এর বিরোধিতা করছিল। কিন্তু পর মুহূর্তেই তারা বুঝতে পারে যোগা কোনও ধর্মীয় বিষয় নয়, এটি হচ্ছে নিজের কল্যাণের জন্য। তাই তারা চটজলদি আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে এবং এখন তারাও আন্তর্জাতিক যোগা দিবসের কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে। জাতীয় স্তরে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এ দিন আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী।এই লক্ষ্যে এগিয়ে আসতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক শিক্ষিকা সহ সকল স্তরের কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান রাখেন।সেই সঙ্গে তিনি আশা ব্যক্ত করেন, সকলে মিলে চেষ্টা করলে এই কাজ করা সম্ভব।এই কাজ করার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের তরফে সার্বিক সহযোগিতারও আশ্বাস দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে বর্তমানে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে তার পাশাপাশি বহু বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজ্যে।বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিষয়ে আগ্রহী। ইতিমধ্যে আইন বিশ্ববিদ্যালয়, ফরেন্সিক বিশ্ববিদ্যালয় রাজ্যে চালু করা হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজ্য খুব সহসাই শিক্ষার হাব হয়ে উঠছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের ফলে রাজ্যে একটি ডেন্টাল কলেজ চালু করা সম্ভব হয়েছে, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে ডেন্টাল কলেজের পাঠ্যক্রম শুরু হবে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ত্রিপুার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গঙ্গাপ্রসাদ প্রসেইন বলেন, ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০কে কার্যকর করার উদ্যোগ নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিমধ্যে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০র অন্তর্গত চার বছরের অস্নাতক কোর্স চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটির সেক্রেটারি ড. সঞ্জীব কুমার ভৌমিক দুদিনের এই আলোচনাচক্রের বিষয়বস্তু কর্মসূচি সম্পর্কে আলোকপাত করেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. প্রশান্ত কুমার দাসের লেখা একটি বইয়ের আবরণ উন্মোচন করেন।