প্রযুক্তির ব্যবহারই শিক্ষাকে সহজলভ্য করেছে: মুখ্যমন্ত্রী!!

 প্রযুক্তির ব্যবহারই শিক্ষাকে সহজলভ্য করেছে: মুখ্যমন্ত্রী!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রথম সমাবর্তন সমারোহ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলো মহারাজা বীরবিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের। আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত এই সমাবর্তন অনুষ্ঠান থেকে রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লু বৃহস্পতিবার বললেন, প্রযুক্তির যুগে উন্নয়নের গতি আমাদের জীবনযাত্রার রূপরেখাকে বদলে দিচ্ছে। প্রযুক্তিগুলিকে সতর্কতা ও সচেতনতার সাথে গ্রহণ করতে হবে আমাদের।

আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. বিভাস দেব, শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, রেজিস্ট্রার ড. সুমন্ত চক্রবর্তীও উপস্থিত ছলেন। মোট ১৩৫ জন কৃতীকে এ দিন একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্বের কৃতিত্ব স্বরূপ সম্মানিত করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা হাইকোর্টের বিচারপতি টি অমরনাথ গৌড়কে ডিগ্রি অব লিটারেচার সম্মানে ভূষিত করা হয়। বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি |নাল্লু এ দিন বলেন, মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্য ছিলেন সত্যিকারের একজন প্রগতিশীল ব্যক্তি। যিনি অনেক আগেই বুঝতে পেরেছিলেন যে শিক্ষার আধুনিকীকরণের উপরই নির্ভর করবে রাজ্যের ভবিষ্যৎ। শিক্ষাক্ষেত্রে তাই তার অবদান অনস্বীকার্য। ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে রাজ্যপাল বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগেও মানবতাবাদ, সহানুভূতি, সৃজনশীলতা, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতাই একজন ছাত্র বা ছাত্রীকে সমাজের নিকট মহামূল্যবান করে তোলে। তিনি বলেন, প্রযুক্তি সর্বদাই সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়। কিন্তু শিখন, দক্ষতা ও মূল্যবোধ চিরস্থায়ী থাকে। তিনি বলেন, চেতনা, দৃঢ়তা, সমৃদ্ধ বৈচিত্র্য এবং সংস্কৃতিকে সাথে নিয়ে রাজ্যের উন্নয়নে সব অংশের জনগণকেই এগিয়ে আসতে হবে। তবেই না এই সমাজও উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বলেন, রাজ্য সরকার মহারাজা বীরবিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়কে সার্বিকভাবে গুণমানসম্পন্ন একটি উন্নত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, সমাবর্তন অনুষ্ঠান ডিগ্রিপ্রাপ্ত পড়ুয়াদের জন্য জীবনের একটি বিশেষ মুহূর্ত। শিক্ষার এই ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের দেশের ঐতিহ্যগত কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও পরম্পরার উপর ভিত্তি করে দীর্ঘ বছর পর নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করা সম্ভব হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতেও নতুন করে জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করা হয়েছে। তিনি বলেন, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০ এই গৌরবপূর্ণ ঐতিহ্যকে আধুনিক পাঠ্যক্রমেও সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এই দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সামঞ্জস্য রেখে এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেমের উপর একটি কোর্স চালু করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ারের সুযোগ আরও সম্প্রসারিত করতে এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ, এমবিএ, বিসিএ, এমসিএ, বিএসসি এবং বায়োটেকনোলজিতে এমএমসি কোর্স চালু করার পরিকল্পনার কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-এর মতো প্রযুক্তি ব্যবহার শিক্ষাকে আরও কার্যকর এবং সহজলভ্য করেছে। ইতিমধ্যেই কলেজগুলির জন্য অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর নিয়োগ করা হয়েছে। সরকারী উদ্যোগে নতুন কলেজ খোলা হচ্ছে, ছাত্রীদের জন্য টিউশন ফি মকুব করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী কন্যা আত্মনির্ভর যোজনা এবং মুখ্যমন্ত্রী যুব যোগাযোগ যোজনার মতো প্রকল্পও চালু করা হয়েছে বলে তিনি জানান। একই সাথে বললেন, যোগ্য শিক্ষার্থীকে এখন বিনামূল্যে স্কুটি পর্যন্ত বিতরণ করা হচ্ছে। ডিগ্রিপ্রাপ্ত পড়ুয়াদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জীবনের পরবর্তী পর্যায়ে পা রাখার সাথে সাথে নানাবিধ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে। তবে যোগ্যতা ও দক্ষতার সঙ্গে প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে জীবনে। সবার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি বিনয়ী হওয়ার জন্যও এ দিন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন পিএইচডি, স্নাতকোত্তর, স্নাতক ডিগ্রি প্রাপ্ত সহ পোস্ট গ্র্যাজয়েট ডিপ্লোমা উত্তীর্ণদেরও শংসাপত্র প্রদান করা হয়।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.