প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে এক খণ্ড ‘ভারত’, সরকারি ভাষা হিন্দি।

 প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে এক খণ্ড ‘ভারত’, সরকারি ভাষা হিন্দি।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

ভারতের থেকে ভৌগলিক ভাবে অনেক দূরে, প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে এমন একটি দ্বীপরাষ্ট্র আছে, যাকে এক খণ্ড ‘ভারত’ বললে ভুল হবে না।সে দেশের সরকারি কাজের একটি ভাষা হিন্দি। এমনকী, বহু ‘ভারতীয়’ মানুষের বাস সে দেশে। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে ছোট্ট এই দ্বীপরাষ্ট্রের নাম ফিজি।আনুষ্ঠানিক ভাবে এই দেশ এশিয়া বা আমেরিকা নয়, ওশিয়ানিয়া মহাদেশের অন্তর্গত।তবে সে দেশের প্রতি পরতে রয়েছে ভারতের ছোঁয়া। ফিজিতে সরকারি ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে হিন্দি।বর্তমানে সেই দেশে তিনটি সরকারি ভাষা রয়েছে। ইংরেজি, ফিজিয়ান এবং ফিজি হিন্দি।২০২১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, ফিজি দ্বীপের মোট জনসংখ্যা ৯ লক্ষ ২৫ হাজার।তার মধ্যে ৩৮ শতাংশ মানুষই কথা বলেন হিন্দিতে।উল্লেখ্য, বহু ভাষাভাষীর দেশ ভারতে 800 রকমের ভাষায় কথা বলে মানুষ।বহু ভাষার মধ্যে থেকে কাজের সুবিধার জন্য এ দেশে দুটি ভাষাকে বেছে নেওয়া হয়েছে, ইংরেজি এবং হিন্দি।ভারত হিন্দি বলয়ের বাইরেও যেমন বহু মানুষ হিন্দিতে কথা বলায় সড়গড়, ফিজিতেও তেমনই।৩৮ শতাংশ মানুষের মুখের ভাষা হিন্দি হলেও হিন্দি বলতে, বিশেষত বুঝতে পারেন দেশের সিংহভাগ মানুষ।ফিজিতে প্রচুর সংখ্যক মানুষ
পাকাপাকি ভাবে বাস করেন যারা ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তারা কেউ কিন্তু প্রবাসী ভারতীয় নন।ফিজির স্থায়ী নাগরিকত্ব নিয়ে সেখানে বসবাস করছেন।১৯৫৬ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ভারতীয় বংশোদ্ভূতেরাই ফিজিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলেন।পরে ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা সংখ্যায় কমতে থাকে।বদলে বাড়তে থাকে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মানুষ।তবে এখনও ভারত থেকে বহু দূরে প্রশান্ত মহাসাগরীয় সেই দ্বীপটি যেন দ্বিতীয় ভারতবর্ষ। একটা সময় ভারত থেকে কাজের সূত্রে ফিজিতে যারা গিয়েছিলেন তারা অধিকাংশ আওয়াধি (উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চল বলে কথিত এলাকা) এবং ভোজপুরি (মধ্য বিহার) সংস্কৃতির বাহক। উত্তর ভারতের হিন্দি বলয় থেকে ফিজিতে চলে গিয়েছিলেন তাদের পূর্বপুরুষেরা। মূলত কাজের সন্ধানেই ফিজিতে দ্বীপে পাড়ি দিতেন ভারতীয়েরা।লখনউ, কানপুর, ফৈজাবাদ, গোরক্ষপুর, গাজিপুর,বালিয়া, সুলতানপুর,শাহবাদ, সিওয়ান থেকে দলে দলে শ্রমিক পাড়ি দিতেন ফিজিতে।এ ছাড়া দক্ষিণ ভারতের তেলুগু এবং তামিলভাষী কিছু মানুষও সে দেশে আছেন।এ ছাড়া আছেন আফগানিস্তান, নেপালের আদি বাসিন্দারা।
আনুমানিক ১৮৭৯ থেকে ১৯১৬ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়া থেকে বহু শ্রমজীবী মানুষ আখের বাগানে কাজ করতে ফিজিতে চলে যান। বস্তুত, এই শ্রমিকদের সূত্রেই জনসংখ্যা বাড়ে ফিজিতে। ভারত থেকে সে দেশে যারা তখন চলে গিয়েছিলেন, তাদের একটা অংশ আর দেশে ফেরেনি।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.