প্রশ্নের মুখে টিসিএ!!

 প্রশ্নের মুখে টিসিএ!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

রাজ্য ক্রিকেটের অভিভাবক হচ্ছে ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (টিসিএ)। এটি একটি স্বশাসিত সংস্থা। রাজ্য ক্রিকেট এবং ক্রিকেটারদের যাবতীয় উন্নয়ন,পরিকাঠামো উন্নয়ন থেকে শুরু করে সবকিছু এই সংস্থার উপর অর্পিত। আমাদের দেশে এবং রাজ্যগুলিতে যতগুলি ক্রীড়া নিয়ন্ত্রক সংস্থা রয়েছে,তার মধ্যে আর্থিকভাবে শক্তিশালী সংস্থা হচ্ছে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন।আরও স্পষ্ট করে বললে’বনেদি কর্পোরেট সংস্থা’-ও বলা যায়।এতে খুব একটা ভুল বা বাড়িয়ে বলা হবে বলে মনে হয় না।ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের শরীরেও সেই বনেদি এবং কর্পোরেট সংস্থার ট্যাগ লাগানো আছে।এমনটাই মনে করেন রাজ্যবাসী।সংস্থার নিজস্ব সংবিধান অনুযায়ী এখানেও গণতান্ত্রিক উপায়ে টিসিএ পরিচালন কমিটি নির্বাচিত হয়ে থাকে।অন্তত কাগজে কলমে।সংবিধান অনুযায়ী এখনও নির্বাচন হয়।কিন্তু সেই নির্বাচন কতটা গণতান্ত্রিক পরিবেশে হয়, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে মান্যতা দিয়ে হয়?এই নিয়ে জনমনে বিশেষ করে ক্রিকেটপ্রেমী মহলে এবং ক্রিকেটের সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত সকলেই ভালো করে জানে।এই নিয়ে নতুন করে এখানে বলার মতো কিছু নেই।
বর্তমান রাজ্য ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালন কমিটির নির্বাচন নিয়ে রাজধানীতে যা ঘটেছে,তা রাজ্যবাসীর স্মৃতিতে এখনও উজ্জ্বল।এমন কলঙ্কজনিত অধ্যায় রাজ্য ক্রিকেটের ইতিহাসে এর আগে আর রচিত হয়নি।ক্রিকেটকে পেছনে ফেলে রাজনৈতিক এবং আর্থিক স্বার্থ যখন বড় হয়ে উঠে, তখন এই ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটতে বাধ্য।বিস্ময়কর ঘটনা হলো, যে দুর্নীতিকে ইস্যু করে টিসিএ-এর ইতিহাসে এমন কলঙ্কিত অধ্যায় রচিত হয়েছে,সেই দুর্নীতি এখন বিশবাঁও জলের নীচে চাপা পড়ে গেছে।রাজ্যবাসী আজও জানতে পারলো না, দুর্নীতি কোথায়, কীভাবে এবং কারা করলো?
সে যাই হোক, টিসিএ নিয়ে এই কথাগুলি বলার একটাই কারণ, সম্প্রতি টিসিএ-এর বর্তমান পরিচালন কমিটির কাণ্ডজ্ঞানহীন ভূমিকা ও আচরণ নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমী মহলে ব্যাপক সমালোচনা শোনা যাচ্ছে।শুধু তাই নয়, প্রশ্ন উঠেছে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়েও।দিন কয়েক আগে রাজধানীর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে টিসিএ-এর বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।তাও বেশ কয়েক বছর পর।খবরে প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রায় পঁয়ত্রিশ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে।এই নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই।প্রশ্ন হচ্ছে অন্য জায়গায়। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়রও।মেয়র হচ্ছেন শহরের প্রথম নাগরিক।মেয়র পদটির একটি ঐতিহ্য এবং গড়িমা রয়েছে।অথচ দেখা গেল মেয়র মঞ্চের নীচে সাধারণ আসনে বসে আছেন। আর মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর ডানে-বামে এমন কয়েকজন স্থান পেয়েছেন, যা নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমী মহলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এটা কি টিসিএ-এর ভুল? নাকি এর পেছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে? এইভাবে মেয়রকে আমন্ত্রণ করে ডেকে নিয়ে অপমান করা হলো কেন?এই প্রশ্ন কিন্তু উঠেছে।সব থেকে অবাক করার বিষয় হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী সব দেখেও নীরব ছিলেন।জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রী যখন অনুষ্ঠানের প্রায় শেষ দিকে মঞ্চ ছেড়ে চলে যান, তখন যাওয়ার পথে মেয়রকে মঞ্চে গিয়ে বসতে বলে যান মুখ্যমন্ত্রী।প্রশ্ন হচ্ছে, এমনটা হবে কেন?এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।ক্রিকেট মহলে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, টিসিএ এখন নিয়ন্ত্রণ করছেন,পরিচালন কমিটির বাইরে থাকা দুইজন লোক। যারা কট্টর বাম রাজনীতির আদর্শে দীক্ষিত এবং অনুপ্রাণিত।আরও শোনা যাচ্ছে,এদের শ্যামাপ্রসাদ লেনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অবাধ যাতায়াত রয়েছে।যে থাকুক, তাতে কারও আপত্তি নেই আপত্তি হলো টিসিএ-এর কাজকর্ম নিয়ে।মেয়রকে ডেকে নিয়ে অপমান করার পেছনে একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে মনে করছে অনেকে।টিসিএ-এর ক্ষমতা দখল নিয়ে ক্রিকেটের তথাকথিত সুচিন্তকদের যতটা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা লক্ষ্য করা যায়, ঠিক ততটাই নিষ্ক্রিয় রাজ্য ভিকেটের সার্বিক উন্নয়নে।ফলে রাজ্য ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ যে খাদের কিনারে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।ক্ষমতা ও স্বার্থের দ্বন্দ্বে ক্রিকেটের প্রকৃত বিকাশ কবে দেখবে ত্রিপুরা?সেটাই এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন!

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.