প্রাণী সম্পদে ছয় মাসেই মুখ থুবড়ে পড়লো এমভিইউ প্রকল্প।

 প্রাণী সম্পদে ছয় মাসেই মুখ থুবড়ে পড়লো এমভিইউ প্রকল্প।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি || ডাবল ইঞ্জিনের রাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অ্যাম্বুলেটরি মোবাইল ভেটেরিনারি ইউনিট’ প্রকল্প। অর্থাৎ বহু সুবিধাযুক্ত অত্যাধুনিক ভ্রাম্যমাণ প্রাণী চিকিৎসা ভ্যান। যে গাড়িতে গৃহপালিত প্রাণীদের যাবতীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম, অপারেশন থিয়েটার, ভ্যাকসিনেশন,ওষুধ সবকিছু রয়েছে। প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের বর্তমান সচিব (আইএফএস) বি.এস মিশ্রের নেতিবাচক মানসিকতা এবং অকর্মণ্যতার কারণে এই পরিস্থিতি বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, অবসরে চলে যাওয়া বর্তমান সচিব শুধু দপ্তরের মন্ত্রীকে তেল দিয়ে আরও ছয়মাসের জন্য পুনর্বাসন বাগিয়ে নিয়েছেন। অথচ কাজের বেলায় অশ্বডিম্ব। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে দপ্তরের বিভিন্ন মহল থেকে।গত ৪ জানুয়ারী রাজধানীর প্রজ্ঞা ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ঘটা করে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। সারা রাজ্যে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের ১৩টি সহ অধিকর্তা অফিসে ১৩টি অত্যাধুনিক ভ্রাম্যমাণ প্রাণী চিকিৎসা ভ্যান প্রদান করা হয়েছে।এই প্রকল্পে জনগণ যাতে সুবিধা নিতে পারে,তার জন্য ১৩ জন গাড়ির চালক,১৩ জন হেল্পার, ২৫ জন ভেটেরিনারি অফিসার (চিকিৎসক) এবং ৪ জন কল এগজিকিউটিভ চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, নিযুক্তির পর থেকে গত ছয়মাস ধরে তারা বেতন পাননি। এখানেই শেষ নয়, উদ্বোধনের দিন ১৩টি ভ্রাম্যমাণ গাড়িকে ৬০ লিটার করে পেট্রোল দেওয়া হয়েছিলো। ওই ৬০ লিটার পেট্রোলে এখনও চলছে। যে গাড়ির পেট্রোল শেষ হয়ে গেছে, ওই গাড়িগুলি বসে আছে।দপ্তরের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, দপ্তরের অধিকর্তা কে শশী কুমার এবং রাজ্য প্রাণীরোগ অনুসন্ধান কেন্দ্রের উপ-অধিকর্তা ডা. জ্যোতির্ময় রায় সম্প্রতি দিল্লী গিয়ে অর্থের বন্দোবস্ত করেছেন। কিন্তু দপ্তরের সচিবের কল্যাণে সেই ফাইল তিন সপ্তাহ ধরে আটকে আছে বলে অভিযোগ। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে বর্তমান সচিবের মনোভাব নিয়ে। এদিকে গত ছয়মাস ধরে চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত কর্মীরা আর্থিক অনটনের মধ্যে কাটাচ্ছেন।কাজ করে যাচ্ছেন অথচ বেতন পাচ্ছেন না। অথচ দপ্তরের বর্তমান মন্ত্রীরও এ ব্যাপারে কোনও হেলদোল লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ডাবল ইঞ্জিন সরকারে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তর যে গতিতে চলছে, তাতে প্রাণী সম্পদের বিকাশ তো দূরের কথা দপ্তরের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই মুশকিল হয়ে যাচ্ছে বলে অনেকের অভিমত। দপ্তর সূত্রে খবর, বর্তমান সচিবের নেতিবাচক মনোভাবের কারণে গত বছরও ত্রিপুরা গো উন্নয়ন সংস্থার (টিএলডিএ)প্রায় ৩২ কোটি টাকা খরচ করতে পারেনি দপ্তর।সারা রাজ্যে যেখানে ২১৭ জন প্রাণী চিকিৎসক প্রয়োজন, বর্তমানে আছেন মাত্র ৪২ জন। অন্য কর্মীদের কথা বলে লাভ নেই।এর থেকে স্পষ্ট,দপ্তর কীসের উপর চলছে।এখানেই শেষ নয়, জানা গেছে, দপ্তরে ৬৭ জন প্রাণী চিকিৎসক নিয়োগের জন্য টিপিএসসি আগামী ১৩ আগষ্ট লিখিত পরীক্ষা আহ্বান করেছে। কিন্তু দপ্তর সূত্রে খবর, টিপিএসসি থেকে সেই ফাইল সচিব নিয়ে এসেছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হতে পারে। জানা গেছে, নানা কারণে দপ্তরের অধিকর্তা কে শশী কুমারও এই দপ্তর ছেড়ে অন্য দপ্তরে চলে যেতে চাইছেন।এ নিয়েও চাপানউতোর চলছে।এই পরিস্থিতিতে দপ্তরের কর্মীরা মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.