প্রোমোটারি চক্রে চিরতরে বন্ধ হল হিন্দুস্থান মোটর

 প্রোমোটারি চক্রে চিরতরে বন্ধ হল হিন্দুস্থান মোটর
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

কারখানার ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে ২০১৪ সালে। বন্ধ কারখানার বাড়তি জমিতে ফ্ল্যাট তৈরি হয়ে বিক্রিও শুরু হয়েছে। তবুও মূল কারখানার ৩৯৫ একর জমি সংস্থার মালিক
সি কে বিড়লা গোষ্ঠীর অধীনেই ছিল। তাই নিয়ে কারখানা খোলা নিয়ে ক্ষীণ আশা জাগিয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি রাজ্য সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই ৩৯৫ একর
জমি ফেরত নেওয়ায় চিরতরে বন্ধ হয়ে গেল
একদা এশিয়ার বৃহত্তম তথা পূর্ব ভারতের প্রথম গাড়ি তৈরির কারখানা হিন্দুস্থান মোটর। ২০১৭ সালের পশ্চিমবঙ্গ সরকার সংশোধিত জমি আইন হাতিয়ার করে
হিন্দুস্থান মোটর কারখানার ৩৯৫ একর জমি সম্প্রতি বিড়লা গোষ্ঠীর হাত থেকে নিয়ে নেয়। ফলে প্রায় ৪০০ শ্রমিকের পাওনা বকেয়া রেখে হিন্দমোটর দীপ নিভল। এক সময় এখানে কাজ করেছেন ১৪ হাজার শ্রমিক। ১৯৪৮ সালে স্থাপিত এই কারখানায় তৈরি হতো অ্যাম্বাসাডার, ট্রেকার, কনটেশা-সহ নানা গাড়ি। ২০০৪ সালে সি কে বিড়লা তদানীন্তন বাম সরকারের বদান্যতায়
কারখানা সংলগ্ন ৩১৪ একর জমির মালিকানা পেয়ে যায় মাত্র ১০ কোটি টাকায়।
সরকার বলেছিল, ওই জমি ৮৫ কোটিতে বিক্রি করা হবে। ৭০ কোটি দিয়ে হবে
কারখানার আধুনিকীকরণ। বাকি ১৫ কোটি দিয়ে শ্রমিকদের বকেয়া মেটান
হবে। কিন্তু দেখা যায় অন্য চিত্র। ওই ৩১৪ একর জমি বেঙ্গল শ্রীরাম হাইটেক
সিটি নামে একটি বেসরকারি নির্মাণ সংস্থাকে ২৮৫ কোটি টাকায় বিক্রি করে
দেয় বিড়লারা। এই ৩১৪ একর জমির দখলি স্বত্ব থাকলেও মালিকানা ছিল না
বিড়লাদের। তৎকালীন বাম সরকার জলের দরে এদের মালিকানা দিয়েছিল।
এই ৩১৪ একরের প্রায় ১৫০ একর জলা জমি। এই জলায় এক সময় পর্যাপ্ত
মাছ এবং পানিফলের চাষ হতো। এই জলা ভরাট করে ৬ হাজার কোটি টাকার
উপনগরী গড়ার অনুমোদন দেয় তৎকালীন বাম সরকার। ২০১৫ সাল থেকে
৪০০ গাছ কেটে ওই জলা ভরাট করে মাথা তুলছে সুউচ্চ আবাসন। জল,
জঙ্গল ও নিকাশি ধ্বংস করে তৈরি এই বেআইনি প্রকল্পের বিরুদ্ধে সামাজিক
সংগঠন ‘গণ উদ্যোগ’ হাইকোর্টেমামলা করে। মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট
পর্যন্ত। একাধিক মামলার সুবাদে হাইকোর্ট ৩০ একর জলা বাঁচান�োর আদেশ
দেয়। তবু এভাবেই ভরাট হয়ে যাচ্ছে কারখানা সংলগ্ন জমাভূমি (সঙ্গের ছবি)।
রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘হিন্দুস্থান মোটরের জমিতে
আবার কারখানা হবে।’ কিন্তু গত ৪৫ বছরে পশ্চিমবঙ্গে বন্ধ কারখানার জমিতে
কারখানা তৈরির ইতিহাস নেই।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.