ফলাফল ‘ড্র’!!

 ফলাফল ‘ড্র’!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

লোকসভা নির্বাচনের ছয়’ মাসের মাথায় আরও দুটি রাজ্য মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা ভোেট সম্পন্ন হয়েছে।শনিবার সকাল আটটা থেকে ভোট গণনা শুরু হয়।বেলা যত বাড়তে
থাকে ভোটের ফলাফল স্পষ্ট হতে থাকে।টানটান এবং চরম উত্তেজনাপূর্ণ ভোটের লড়াইয়ে ফলাফল শেষ পর্যন্ত ‘ড্র’ হয়েছে।যুযুধান দুই পক্ষই একটি করে রাজ্যে জয়লাভ করেছে।সেই দৃষ্টিকোন থেকে বিচার করলে হাইভোল্টেজ নির্বাচনে ভোটের ময়দানে লড়াই করতে নেমে দুই পক্ষই জয়ী, আবার দুই পক্ষই
পরাজিত হয়েছে বলা যায়। তবে ভোটের ফলাফল ‘ড্র’ হলেও,দুই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল থেকে বেশ কিছু
ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা পাওয়া গেছে।যেমন, বুথ ফেরত সমীক্ষার পূর্বাভাস।এর আগে হরিয়ানা এবং জম্মু কাশ্মীরের বিধানসভা ভোটের যাবতীয় বুথ ফেরত সমীক্ষা পুরোপুরি ভুল প্রমাণিত হয়েছিল।এবার মহারাষ্ট্র,
ঝাড়খণ্ডের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটলো।অধিকাংশ সমীক্ষক সংস্থা বিজেপিকে এগিয়ে রাখলেও, ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গেল
ঝাড়খণ্ডে বিগত চব্বিশ বছরের পুরনো রাজনৈতিক রেকর্ড ভেঙে দ্বিতীয়বার আরও বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে হেমন্ত সোরেন জোট।ঝাড়খণ্ডের ৮১ টি আসনের মধ্যে জেএমএম, কংগ্রেস আর জেডি জোট রাত আটটা পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যঅনুযায়ী জয়ী হয়েছে ৫৬ টি আসনে।
মহারাষ্ট্রেও একই ছবি। সমীক্ষার আভাস ছিল, বিজেপি-শিবসেনা (শিণ্ডে)-এনসিপি (অজিত)-এর জোট ‘মহাজুটি’ এবং কংগ্রেস শিবসেনা (উদ্ধব)-এনসিপি (শারদ)-এর মহাবিকাশ আঘাড়ি জোটের মধ্যে কাঁটায় কাঁটায় টক্কার হবে। ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গেল মহারাষ্ট্রে বিজেপি জোট ধরাছোঁয়ার বাইরে। ২৮৮ আসনের বিধানসভায় বিজেপি জোট রাত আটটা পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী জয়ী হয়েছে ২৩৪ আসনে। কয়েকটি সমীক্ষক সংস্থা মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস জোট ক্ষমতায় ফিরে আসার আভাস দিয়েছিল।আবার কয়েকটি সংস্থা অনেকটা ব্যালান্স করে দুই জোটকেই খুশি রেখেছিল।তবে একটা বিষয় লক্ষ্য করা গেছে, কোনও সমীক্ষক সংস্থাই মহারাষ্ট্রে বিজেপি জোটকে ২০০ আসন পেতে পারে, এমন আভাস দেয়নি। সর্বোচ্চ ছিল মেট্রিজ নামক একটি সংস্থার।তারা মহারাষ্ট্রে বিজেপি জোট ১৫০-১৭০ আসন পেতে পারে বলে আভাস দিয়েছিল।সেই অনুমানও মেলেনি।বরং বিজেপি জোট ২০০ আসনের গণ্ডি পার হয়ে গেছে।সমীক্ষক সংস্থাগুলির উপর এমনিতেই সাধারণ মানষের আস্থা অনেকটাই কম। আর এই ভাবে চলতে থাকলে সমীক্ষক সংস্থাগুলির আর কোনও বিশ্বাসযোগ্যতাই থাকবে না।এটা একপ্রকার নিশ্চিত।
সে যাই হোক,মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোটে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, হিন্দুত্বে আপস করে বালাসাহেবের উত্তরসূরির তকমা হারিয়েছেন উদ্ধব। শিবসেনার সেনাপতি এবং বালাসাহেবের উত্তরসূরি একনাথ শিণ্ডেই।জনতার রায়ে সেটাই প্রমাণিত হলো। দীর্ঘ টানপোড়েনের পর লোকসভা নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন শিব সেনার লোগো ও নামের উত্তরাধিকার শিণ্ডেকেই দিয়েছিল।এবার জনাদেশও সেদিকে নির্দেশ করেছে। অন্যদিকে ‘কাকা’ শারদকে টেক্কা দিয়ে ভাইপো অজিও প্রমাণ করে দিলেন,তিনিই আসল এনসিপি।এই বিধানসভা ভোট কাকা-ভাতিজা দুজনের কাছেই ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।দেড় বছর আগে এনসিপি ভেঙে নিজের অনুগামীদের নিয়ে বিজেপি জোটে শামিল হয়েছিলেন বর্ষীয়ান রাজনৈতিক নেতা শারদ পাওয়ারের ভাইপো অজিত পাওয়ার।দীর্ঘ বছর মারাঠাভূমের রাজনীতিতে সমান্তরাল ক্ষমতার অধিকারী এনসিপি।ছয় মাস আগে লোকসভা ভোটে কাকা শারদকে তেমন একটা চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারেননি ভাইপো অজিত। কিন্তু বিধানসভা ভোটে সব হিসাব পাল্টে কাকাকে ছাপিয়ে গেলেন ভাইপো। ফলাফল থেকে স্পষ্ট, এনসিপির সমর্থকদের মূল ধারা চলে গেছে অজিতের সঙ্গে।তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে, মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের ফলাফল খুবই খারাপ।একই অবস্থা ঝাড়খণ্ডে। ফলে ফের প্রশ্নের মুখে রাহুলের নেতৃত্ব। কেননা, আপাতদৃষ্টিতে দুই রাজ্যে ভোটের ফলাফল ড্র হলেও, প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের খুশি হওয়ার কোনও কারণ নেই। বরং পদ্ম শিবিরে খুশি হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে- এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.