ফাইফরমাশ খাটছেন টিএসআর জওয়ানরা !!
অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও টিএসআর আধিকারিকদের বাড়িতে, সরকারী আবাসে রাতদিন ফাইফরমাশ খাটতে হচ্ছে টিএসআর জওয়ান, পুলিশ কনস্টেবল ও হোমগার্ড কর্মীদের। আধিকারিকদের বাড়িতে ও সরকারী আবাসে রান্নার কাজ, কাপড় কাচার কাজ, বাসন মাজার কাজ সবই করতে হচ্ছে টিএসআর জওয়ান, পুলিশ কনস্টেবল ও হোমগার্ড কর্মীদের। এখানেই শেষ নয়, আধিকারিকদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পৌঁছানো, স্কুল থেকে বাড়ি, সরকারী আবাসে ফিরিয়ে নিয়ে আসার কাজ যেমন করতে হচ্ছে টিএসআর জওয়ান, পুলিশ কনস্টেবল ও হোমগার্ড কর্মীদের, তেমনি আধিকারিকদের স্ত্রী, পুত্র, কন্যাদের শপিংয়ে নিয়ে যাওয়া, পার্লার ও সেলুনে নিয়ে যাওয়ার মতো ফাইফরমাশ খাটতে হচ্ছে। বাড়ি ও সরকারী আবাসে ঝাঁট দেওয়া থেকে বাগান করার কাজও করতে হচ্ছে জওয়ানদের। রহস্যজনক ঘটনা হল, পুলিশ ও টিএসআর আধিকারিকদের বাড়িতে এক-দু’জন নয়, কোন কোন আধিকারিকদের বাড়ি ও সরকারী আবাস মিলে এক থেকে দুই ডজনের বেশি টিএসআর জওয়ান, পুলিশ কনস্টেবল, হোমগার্ড কর্মী রেখে ফাইফরমাশ খাটানো হচ্ছে। কোন কোন টিএসআর এবং পুলিশ আধিকারিক নিজেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাত্রাতিরিক্ত অধিক সংখ্যক টিএসআর জওয়ানদের, পুলিশ কনস্টেবল ও হোমগার্ড কর্মী সরকারী আবাসে এনে লাগামহীনভাবে ফাইফরমাশ খাটাচ্ছেন। বহুক্ষেত্রে পুলিশের ও টিএসআরের মাঝারি ও শীর্ষ আধিকারিকরা নিজেদের বাড়িতে টিএসআর জওয়ান, পুলিশ কনস্টেবল ও হোমগার্ড কর্মী রেখে যেমন ফাইফরমাশ খাটাচ্ছেন, তেমন একই আধিকারিক সরকারী আবাসেও পৃথকভাবে টিএসআর জওয়ান রেখে ফাইফরমাশ খাটাচ্ছেন। এখানেই শেষ নয়, একইভাবে বহু অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাড়িতে টিএসআর জওয়ান, পুলিশ কনস্টেবল, হোমগার্ড কর্মী রেখে ফাইফরমাশ খাটাচ্ছেন। টিএসআর এবং পুলিশ আধিকারিকদের একটা বড় অংশের মধ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ পরিচয় দিয়ে নিজেদের মর্জিমতো বিশাল সংখ্যক টিএসআর জওয়ান, পুলিশ কনস্টেবল, হোমগার্ড কর্মী বাড়ি সহ সরকারী আবাসে ডিউটিতে রেখে ফাইফরমাশ খাটালেও স্বরাষ্ট্র দপ্তরও এ ব্যাপারে রহস্যজনক কারণে বিষয়টি জেনেও না জানার ভান করে কাটাচ্ছে। বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে বিরোধী দলনেতাও টিএসআর এবং পুলিশ আধিকারিকদের বাড়ি ও সরকারী আবাসে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাত্রাতিরিক্তভাবে বিশাল সংখ্যক টিএসআর জওয়ান ও পুলিশ কনস্টেবল, হোমগার্ড কর্মীদের ফাইফরমাশ খাটানোর ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের কোনও ভূমিকা না থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। যদিও সরকার পক্ষ এ ব্যাপারে তেমন স্পষ্টীকরণ দিতে পারেনি। কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। যদিও টিএসআর এবং পুলিশ আধিকারিকদের বাড়ি ও সরকারী আবাসে ব্যাপক সংখ্যক টিএসআর জওয়ান, পুলিশ কনস্টেবল, – হোমগার্ড কর্মীদের ফাইফরমাশ খাটানোর বিষয় নিয়ে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের প্রশাসনিক কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ না থাকায় পুলিশ আধিকারিকদের ক্ষমতা অপব্যবহারের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। স্বরাষ্ট্র দপ্তরের শীর্ষ আধিকারিক থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী যেন এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও উদ্যোগ গ্রহণ করেন সংশ্লিষ্ট মহলে এ দাবি উঠেছে। সংশ্লিষ্ট টিএসআর জওয়ান, পুলিশ কনস্টেবল থেকে হোমগার্ড কর্মীদের অভিযোগ, বহুক্ষেত্রেই তাদের অমানবিকভাবে ফাইফরমাশ খাটানো হচ্ছে। প্রয়োজনেও তারা ছুটি পাচ্ছেন না। ছুটি চাইলেই বদলি থেকে চাকরিচ্যুত করে দেওয়ার হুমকি পর্যন্ত তাদের দেওয়া হচ্ছে। তারা পরিবার পরিজনদের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। পরিবার পরিজনদের সময় দিতে পারছেন না। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। অভিযোগ ও গুঞ্জন, বহুক্ষেত্রে একাংশ পুলিশ আধিকারিক মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকদের নানা ইস্যুতে হুমকি-ধমকিও দিচ্ছেন। এ ধরনের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর সুনাম নষ্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে অভিযুক্ত অফিসারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি উঠেছে। এদিকে টিএসআর জওয়ানদের পুলিশ ও টিএসআর আধিকারিকদের বাড়ি, সরকারী আবাসে যেমন ফাইফরমাশ খাটতে হচ্ছে, তেমনি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে কোনও প্রশিক্ষণ না থাকা টিএসআর জওয়ানদের দিয়ে ট্রাফিকের ডিউটিও করানো হচ্ছে।