ফের নোটবন্দি!

 ফের নোটবন্দি!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

জল্পনা ছিলই।অবশেষে সেই জল্পনা বাস্তবে পরিণত হলো। বাজার থেকে দুই হাজার টাকার নোট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইণ্ডিয়া।নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে,দুই হাজার টাকার নোট দেশের সমস্ত ব্যাঙ্কে আগামী৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত জমা অথবা বিনিয়োগের সুবিধা পাবেন আমজনতা।আগামী ১লা অক্টোবর থেকে আর দুই হাজার টাকার নোট বাজারে দেখা যাবে না।আরবিআইয়ের নির্দেশিকায় আরও জানানো হয়েছে,দুই হাজার টাকার নোট ৩০ সেপ্টেম্বরের পরও আইনি টেণ্ডার থাকবে। তবে নতুন করে কোনও ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের আর দুই হাজার টাকার নোট প্রদান করবে না।নির্দেশিকায় এও জানানো হয়েছে,এক সঙ্গে একজন ব্যক্তি দুই হাজার টাকার নোটে কুড়ি হাজার টাকার বেশি জমা দিতে পারবেন না। আরবিআইয়ের দাবি,নোট বদলের জন্য চার মাস সময় যথেষ্ট।সেই সাথে আরবিআই মনে করে, বাজারে বর্তমানে যত দুই হাজার টাকার গোলাপি নোট ছড়িয়ে রয়েছে, তার বেশিরভাগ অংশই আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যাঙ্কে ফিরে আসবে।রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তার বার্ষিক রিপোর্টে দুই হাজার টাকার নোট সম্পর্কে বেশকিছু তথ্য দিয়েছে। রিপোর্ট মোতাবেক,২০১৯-২০, ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ এই তিন অর্থবর্ষে দুই হাজার টাকার একটি নোটও ছাপানো হয়নি।ফলে বাজারে এর প্রচলনও অনেকটা কমে এসেছে।বিজ্ঞপ্তিতে আরবিআই জানিয়েছে, বর্তমান সময়ে দুই হাজার টাকার প্রায় তেত্রিশ লক্ষ নোট বাজারে ছড়িয়ে রয়েছে।যার মোট মূল্য ছিল ৬.৭২ লক্ষ কোটি টাকা।এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন হচ্ছে,এই বিশাল পরিমাণ অর্থ পুনরায় ব্যাঙ্কে ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন কেন পড়লো ?শুক্রবার ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই নির্দেশিকা জারি হওয়ার সাথে সাথেই ফের একবার জনমনে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়। ফের ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দেশে নোটবন্দির ঘোষণার স্মৃতি উসকে উঠে। প্রধানমন্ত্রীর নোটবন্দির ঘোষণায় কার্যত মাথায় হাত পড়ছিল আমজনতার। পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণায় রাতারাতি রাস্তায় লাইন পড়ে গিয়েছিল এটিএমের সামনে। তারপরের ইতিহাস সকলের জানা। হঠাৎ করে সেই আশঙ্কার ছায়া আবার জনমনে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই ঘোষণা সামনে আসতেই ফের একবার দেশে রাজনৈতিক চাপানউতোর তেজি হয়ে উঠেছে। বিরোধী দলগুলো ফের একবার মোদি সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণের নিশানা করেছে।একের পর এক সমালোচনার বাণ নিক্ষেপ করে চলেছে।সাত বছর আগে দেশে নোটবন্দি করার সময় প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, কালো টাকা উদ্ধারের জন্যই পাঁচশ এবং এক হাজার টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।যদিও এই সিদ্ধান্তের ফলে কী পরিমাণ কালো কাটা ফিরে এসেছে বা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে- – তা নিয়ে সাত বছর পরেও বিতর্ক রয়েছে।সাত বছর আগে নোটবন্দির ফলে সাধারণ মানুষকে নোট বদল করতে গিয়ে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছিল।সাত বছর পর ফের একবার নোট তুলে নেওয়ার ঘোষণায় পুরনো স্মৃতি তাজা হয়ে উঠেছে।প্রশ্ন উঠেছে,ফের একবার নোট তুলে নেওয়ার প্রয়োজন হলো কেন? আরবিআইয়ের দাবি অনুযায়ী ফের একবার কালো টাকা উদ্ধারের গল্প শোনা যাচ্ছে। সরকার চাইছে কালো টাকা নিয়ন্ত্রণ করতে।দুই হাজার টাকার নোটের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে কালো টাকা মজুত করা হচ্ছে।এটা ঠিক যে, যে পরিমাণ দুই হাজার টাকার নোট বাজারে ছাড়া হয়েছিল, তার নামমাত্রও এখন চোখে পড়ছে না। তাহলে এই টাকা গেল কোথায় ?এর থেকে স্পষ্ট হয়েছে, দুই হাজার টাকার নোট ছাপানোটাই মোদি সরকারের সবথেকে বড় ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।এই নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই।সেই ভুল সংশোধন করতে ফের একবার জনগণকে সমস্যায় ফেলে নোট তুলে নেওয়ার পথে হাঁটতে হচ্ছে সরকারকে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.