ফের শিরোনামে লালছড়ি বিদ্যাজ্যোতি স্কুল,পচা চালেই চলছে মিড ডে মিল!!

 ফের শিরোনামে লালছড়ি বিদ্যাজ্যোতি স্কুল,পচা চালেই চলছে মিড ডে মিল!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-বড় আশা করে আমবাসা মহকুমার অভিভাবক পিতা মাতারা তাদের ছেলেমেয়েদের পাঠাচ্ছেন আমবাসা লালছড়িস্থিত বিদ্যাজ্যোতি ইংরেজি মাধ্যম মডেল স্কুলে। বাবা মায়েরা তাদের ছেলে মেয়েদের ভালো শিক্ষা পাবে এই আশাতেই অপেক্ষমাণ। যা হবারই কথা।স্কুলটিতে শিক্ষা দান কতটা হচ্ছে অভিভাবক, মাতা, পিতারা সেটার কিছুটা আঁচ করতে পারছেন বৈকি।তারপরও স্কুলে পাঠাচ্ছেন।এদিকে, স্কুলে যাওয়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য সরকারী টাকার মিড ডে মিলের খবর কি রাখছেন পিতা, মাতা, অভিভাবকরা। না রাখছেন না। স্কুলটির পুরো লাগাম নিজের হাতে রেখে যাচ্ছেতাই ভাবে স্কুলের সর্বনাশ ঘটিয়ে চলেছেন চব্বিশ জনের একজন অধ্যক্ষা বাসন্তী ভট্টাচার্য একা।মিড ডে মিলের চাল কম করেও পাঁচশ কেজিতে পোকায় খেয়ে একেবারেই নষ্ট করে দিয়েছে। খাওয়ার আর যোগ্য নয় অল্প পরিমাণ চালও। তারপরও অধ্যক্ষা সেই চালাই গিলে খাওয়াচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের।
এক সাক্ষাৎকারে অধ্যক্ষা বাসন্তী ভট্টাচার্য সমস্ত দায়ভার চাপিয়ে দেন বিদ্যালয় পরিদর্শক বিষ্ণু দত্তের কাঁধে।অধ্যক্ষা বলেন, প্রয়োজন না থাকার পরও বিদ্যালয় পরিদর্শক আমার স্কুলে অতিরিক্ত চাল বরাদ্দ দিয়েছেন।তবে আমি বিশেষ মেশিনের মাধ্যমে চালগুলিকে পুনরায় ঝাড়াই বাছাই করে নিয়েছি।এখন কোনও সমস্যা হবে না। অধ্যক্ষা স্কুলের ছেলে মেয়েদের যদি আপন করে নিতে পারতেন তাহলে পচা এবং পোকায় খাওয়া গাে খাদ্যসম চালগুলিকে কোনও ভাবেই খাওয়াতে পারতেন না। একটি দ্বাদশ মান ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যাজ্যোতি মডেল স্কুল এবং তার পরিচালনায় থাকা অধ্যক্ষার স্কুল পরিচালনা নিয়ে বারবার সংবাদ হওয়ার পরও কোনও পদক্ষেপ নেই জেলা শিক্ষা আধিকারিক যতন কুমার দেববর্মা,জেলা শিক্ষা দপ্তরের ওএসডি অপু চন্দের।বারবার কেন এমনটা হচ্ছে একটি মাত্র স্কুলে।স্কুলের মিড ডে মিলের চালের বাজে অবস্থা, পোড়া খিচুড়ি খাওয়ানো, স্কুল ফাঁকি, অধ্যক্ষা সহ অন্যান্য শিক্ষকদের বেহিসেবি চালচলন, প্রতিদিনকার রুটিনে গরমিল, স্কুলের অভিভাবকদের সাথে দুর্ব্যবহার, ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি ফি সহ স্কুলের উন্নয়ন কার্যাদি বাবদ নেওয়া লক্ষ লক্ষ অর্থ নিজ হাতে রেখে দেওয়া, এসএমসি কমিটির চেয়ারম্যান তথা মহকুমাশাসককে অনুরোধ নয়, নিদেশ করা। এই বিষয়গুলি নিয়ে বারংবার সংবাদ হওয়ার পরও জেলা শিক্ষা আধিকারিক বিদ্যালয় শিক্ষা আধিকারিক থেকে শিক্ষা সচিবও কোনও পদক্ষেপ নিতে পারছেন না অধ্যক্ষার বিরুদ্ধে।বর্তমানে এলাকার প্রতিটি অভিভাবক দাবি করছে বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষাকে অন্যত্র বদলি করা হোক বা স্কুল থেকে সরিয়ে নেওয়া ‘হোক।অন্যথায় স্কুলটিকে একেবারেই শেষ করে দেবেন অধ্যক্ষা।এদিকে, প্রতিবেদকের সাথে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে অধ্যক্ষা বলেন,আমি এই স্কুল থেকে বদলি হতে চাই না। আর যদি আমাকে এই স্কুল থেকে সরাতে হয়, তাহলে শিক্ষা দপ্তরের রাজ্য কার্যালয়েই নিতে হবে।প্রশ্ন হচ্ছে অধ্যক্ষা বাসন্তী ভট্টাচার্য এমন ধরনের কথা বলতে পারেন কি।আর যদি বলছেনই, তাহলে কীসের জোরে এবং কাদের জোরে এমন কথা বলতে পারেন তিনি।
প্রকাশ যে, পাঁচ এপ্রিল ২০২৩ সালে বিদ্যালয়ের নানা বিষয় জানতে সরকারী নিয়ম মেনে পোস্টাল অর্ডার সমেত একটি আরটিআই জমা করা হয় প্রতিনিধির পক্ষ থেকে। যার কোনও উত্তর অদ্যাবধি প্রতিবেদককে দেওয়া হয়নি। যেখানে স্কুলের আয় ব্যয়, শিক্ষামূলক ভ্রমণ ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা এসএমসি কমিটির সভা হয় কিনা চেয়ারম্যান তথা মহকুমাশাসকের সাথে ব্যাঙ্কে যৌথ অ্যাকাউন্ট করা হয়েছি কিনা।এই বিষয়ে জেলা শিক্ষা দপ্তর থেকেও কোনও উত্তর দেননি।জানা গেছে, প্রতিবেদকের জমা করা আরটিআই কপি জেলা শিক্ষা দপ্তর থেকে বিদ্যাজ্যোতি মডেল স্কুলে পাঠানোর পর আজ পর্যন্ত তার কোনও উত্তর অধ্যক্ষা বাসন্তী ভট্টাচার্য দেননি। তাই মনে করা হচ্ছে বিদ্যাজ্যোতি ইংরেজি মাধ্যম মডেল স্কুলটিকে আরও উন্নত করার কোনও চিন্তা নেই যেমন স্কুলের অধ্যক্ষা বাসন্তী ভট্টাচার্যের, তেমনি জেলা শিক্ষা দপ্তরেরও।প্রশ্ন হচ্ছে স্কুলের নানা বিষয় নিয়ে লুকোচুরি খেলার পেছনে স্বার্থটা কি। তার কোনও উত্তর দেবে কি অধ্যক্ষা এবং জেলা শিক্ষা আধিকারিক।এও জানা গেছে, চলতি ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে লালছড়িস্থিত বিদ্যাজ্যোতি বিদ্যালয়টি। মাধ্যমিকের মোট বাষট্টি জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে পাস করেছে মাত্র পঁচিশজন। বাদবাকি ৩৭ জন ফেল। যার মধ্যে উনত্রিশ জন ছাত্রছাত্রী কম্পারমেন্টাল পেয়েছে।এই বিষয়গুলি থেকে সহজেই অনুমেয়, বিদ্যালয়টির অবস্থা কতটা সঙ্গীন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.