ত্রিপুরার সাহিত্য চর্চায় নয়া ইতিহাস রচনা করেছে উড়ান: জয় গোস্বামী।।
ফের সুনামির ত্রাস! কেঁপে উঠল বঙ্গোপসাগরের গর্ভ

সোমবার সকালে কেঁপে উঠল বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন বিস্তীর্ণ অঞ্চল। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৫.১। আর তার জেরেই কেঁপে উঠল বঙ্গোপসাগর লাগোয়া বাংলাদেশের একাধিক এলাকা। ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি অঞ্চলে সকাল ৯টা ০৫
মিনিটে ভূমিকম্প হয়। তবে এখনও পর্যন্ত সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি। স্থলভাগেও এই কম্পনের প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। তবে জানা গিয়েছে,
বাংলাদেশের একাধিক এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়েছে। ভারতে সেভাবে কম্পনের
তীব্রতা বোঝা না গেলেও বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা-সহ একাধিক এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়েছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ভূমিকম্পের
উৎসস্থল ভারতের খুব কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিমে। বাংলাদেশে ঢাকার ৫২৯ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং চট্টগ্রাম থেকে ৩৯৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং ওড়িশার পুরী থেকে ৪২১ কিলোমিটার, ভুবনেশ্বর থেকে ৪৪১ কিলোমিটার দূরে। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির ট্যুইটার হ্যান্ডেলে জানানো হয়েছে, সোমবার সকালে অরুণাচল প্রদেশেও ভূমিকম্প হয়েছে। তবে ভূমিকম্পের
কারণে সুনামির কোনও আশঙ্কা এই মুহূর্তে নেই বলেই আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তুহিন শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
বলছেন, ‘পৃথিবীর কেন্দ্রে রয়েছে এমন একটি কাঠানো যা আকারে, আয়তনে বিশাল। যার পরিধি প্রায় ১০০০ কিলোমিটার এবং ২৫ কিলোমিটারের মতো পুরু। ওই এলাকার নাম হল ‘আলট্রা-লো ভেলোসিটি জোন’। যে ভূকম্পন তরঙ্গ বা ভূ-তরঙ্গ বয়ে চলেছে ওই এলাকার মধ্যে দিয়ে তার গতিবেগ খুবই কম। কীভাবে ওই ভূ-তরঙ্গ তৈরি হল সেটা এখনও রহস্য।’ তিনি মনে করছেন, ওই এলাকার
রাসায়নিক গঠন ও তাপমাত্রাও অনেকটাই আলাদা। তার মতে, পৃথিবীর ভেতরটা অনেকটা পেঁয়াজের খোসার মতো পরতে পরতে জড়িয়ে আছে বিভিন্ন স্তর। তাদের রাসায়নিক ও ভৌত গঠন, বৈশিষ্ট্য আলাদা ।
সবচেয়ে বাইরের স্তরটি রাসায়নিক গঠনগতভাবে ভিন্ন, নিরেট সিলিকেট ভূত্বক যার নীচে রয়েছে ম্যান্টল। একে বলে গুরুমণ্ডল। ভূত্বক এবং গুরুমণ্ডলের উপরের অংশকে একসঙ্গে বলে লিথোস্ফিয়ার। এই অংশেই টেকটনিক প্লেটগুলো সংকুচিত অবস্থায় থাকে। তুহিনবাবু বলছেন, ‘উপগ্রহ চিত্রে পৃথিবীর যে রূপ এখন আমরা দেখতে পাই তার সঙ্গে কোটি কোটি বছর আগের
পৃথিবীর মিল নেই। একটু একটু করে রূপ বদলাচ্ছে।’ বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই বদলের অন্যতম কারণ হচ্ছে এই টেকটনিক প্লেট ও তার নীচে পৃথিবীর গভীরে থাকা ম্যান্টল স্তরের চলাফেরা। গলিত ম্যান্টলের প্রবাহের ফলে তার উপরের টেকটনিক প্লেটগুলোর একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। কখনও মৃদুধাক্কা আবার কখনও জোরদার ঠোকাঠুকি হয়ে প্লেটগুলো একে অপরের থেকে দূরে সরে যায়। কখনও বা একটি প্লেট অন্যটার ঘাড়ে উঠে যায়। এই ধাক্কাধাক্কির ফলেই ভূত্বকের পরিবর্তন হয়। আর এই পরিবর্তনের সঙ্গী হয় ভূমিকম্প, অগ্ন্যুৎপাত বা কখনও সুনামি ।