ফ্ল্যাট না পেয়ে নিরাপত্তার মোড়া জেল ভাড়া নিলেন যুবক
বহুদিন মনে ছিল আশা, ধরনীর এক কোণে রহিব আপন- মনে, ধন নয়, মান নয়, এতটুকু বাসা করেছিনু আশা। কবিগুরু যখন এই কবিতা লিখেছিলেন, তখন হয়তো স্বপ্নেও ভাবেননি যে একবিংশ শতাব্দীতে মন্থন গুপ্তা নামে এক যুবকের আর্বিভাব হবে, যিনি জেলখানার একটুকরো সেলে খুঁজে পাবেন তার ভালবাসার ঘর! কল্পকাহিনি নয়, বাস্তব। ঘটনাস্থল এ দেশের বেঙ্গালুরু। এ শহরের বাসিন্দা মন্থন গুপ্তা। মনের মতো একটি ফ্ল্যাট খুঁজছিলেন, বাসা ভাড়ার জন্য। তন্ন তন্ন করেও খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি। এটা ঘটনা যে বেঙ্গালুরুর মতো জনবহুল শহরে পছন্দের বাসা পাওয়া বেশ কঠিন। দেশের নানা প্রান্ত থেকে বহু কর্মদ্যোগী ছেলেমেয়ে এ শহরে চাকরি করতে আসেন। ফলে শহরে এমনিতে ফ্ল্যাট বাড়ন্ত। মন্থন বহু খুঁজে ছোটখাটো একটি ভাড়ার ফ্ল্যাট না পেয়ে শেষ পর্যন্ত জেলখানার সেলই ভাড়া নিয়ে ফেলেছেন। ওই সেলের মধ্যে আছে একটি বিছানা, একটি ছোট আলমারি এবং একটি টেবিল। ছোট হলেও ঘরটি ছিমছাম, সাজানো। সেই ঘরের ছবি নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন মন্থন। ক্যাপশনে মন্থন লিখেছেন, ‘অবশেষে বেঙ্গালুরুতে একটি সম্পূর্ণ সজ্জিত বাড়ি পাওয়া গেছে। গেটেড সোসাইটি এবং ২৪×৭ নিরাপত্তা।’ মন্থনের পোস্ট করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ঘরটিতে একটি ছোট জানলা এবং ধাতব দণ্ডযুক্ত দরজা আছে। যা দেখে বোঝা যাচ্ছে, এটি জেলের সেল। পরে সাংবাদিকদের মন্থন জানিয়েছেন, তন্ন তন্ন করে খুঁজেও শহরের কোথাও পছন্দের বাসা পাননি তিনি। শেষমেশ সিদ্ধান্ত নেন, জেলের একটি সেল ভাড়া নেবেন তিনি। শর্ত ছিল একটাই, ঘর যেন সাজানো-গোছানো হয়, পরিষ্কার হয়। এমনটাই চাওয়া ছিল তার। ওই যুবকের দাবি, কোনও ফ্ল্যাট বা বাড়ি নয়, থাকার জন্য তার নতুন ঠিকানা এখন জেলখানা। ট্যুইটারে পোস্ট করে মন্থন জানান, জেলের এই ঘরটি খুব ছোট। কয়েদির থাকার জন্য যেমনটা হয় আর কী! ঘরের একটা দরজা, একটা জানলা। কোনও রকমে একটি খাট, একটি কাবার্ড এবং একটি
টেবিল রাখা হয়েছে। দরজা আছে, তাও আবার কাঠের নয়। লোহার গরাদ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি শেয়ার করে তার বক্তব্য, “অবশেষে একটা পরিষ্কার ঘর খুঁজে পেলাম বেঙ্গালুরুতে। আমার দুয়ারে ২৪ ঘণ্টা, সারা সপ্তাহ পাহারা থাকে। পুরোপুরি নিরাপত্তার মধ্যেই রয়েছে আমি।’
মন্থনের ওই পোস্টে এক ইউজার লেখেন, ‘যারা সেখানে থাকে, তারা ভাগ্যবান যে ঘরে সূর্যের আলো থাকে।’