বঙ্গ যেন যুদ্ধক্ষেত্ৰ !

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

আগামী ৮ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের ২২টি জেলার ৩ হাজার ৩১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬৩ হাজার ২৮৩টি আসনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।একই সঙ্গে এদিন ৯২৮টি জিলা পরিষদ এবং ৯ হাজার ২১৭টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনেও ভোট গ্রহণ হবে।এই ভোটকে সামনে রেখে এখন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর্ব চলছে। বঙ্গ নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিকাল চারটায় মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা অতিক্রান্ত হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত কোন দলের কতজন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিলেন সেই তথ্য এখনও জানা যায়নি।এই পর্যন্ত সবটাই ঠিক আছে। কিন্তু গণতন্ত্রের এই মহান উৎসবকে (পঞ্চায়েত ভোট) কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গ যেন যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। মনোনয়ন জমা নেওয়া থেকেই এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি।এর পরবর্তী দিনগুলি এবং ভোটের দিন তাহলে কী কবে?এটা ভেবেই বঙ্গবাসী এখন চরম উৎকণ্ঠায়।একেবারে চিরাচরিত ঐতিহ্য বজায় রেখে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শুরুর দিন থেকেই গোটা রাজ্যজুড়ে ব্যাপক হাঙ্গামা, মারধর, বোমাবাজি, গুলী চলছে মুড়িমুড়কির মতো।গোটা রাজ্যজুড়ে কার্যত সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রাখা হয়েছে। গত চার-পাঁচদিনে রাজনৈতিক সন্ত্রাস ও হিংসায় বহু লোক আহত হয়েছেন।এমন কী সন্ত্রাসে মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে।সন্ত্রাসের হাত থেকে বাদ যাচ্ছে না সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরাও।সন্ত্রাসের খবর করতে গেলেই শাসকদলের আশ্রিত গুণ্ডাবাহিনী হামলে পড়ছে সাংবাদিকদের উপর। বিরোধী দলের প্রার্থীদের একেবারে নগ্নভাবে মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়া,মারধর করা হচ্ছে।প্রতিরোধ করলেই বাঁধছে সংঘর্ষ।বৃষ্টির মতো বোমাবাজি। ব্লক অফিসগুলো কার্যত শাসকবাহিনীর কবজায়। সব মিলিয়ে গোটা রাজ্য যেন যুদ্ধক্ষেত্রে রূপান্তরিত হয়েছে। শুধু তাই নয়,পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট হচ্ছে, সেটা ইতিমধ্যেই শুধু দেশবাসী নয় প্রযুক্তির দৌলতে গোটা বিশ্ব জেনে গেছে।আর এই ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ প্রশাসন কার্যত নীরব দর্শক। নীরব দর্শক বললেও কম বলা হবে। নির্বাচন কমিশন এবং পুলিশ প্রশাসনের কোনও অস্তিত্ব আছে বলে মনে হচ্ছে না। আইন, আদালত বলতে যে কিছু আছে, সেটাই যেন ভুলে গেছে বহু প্রশাসন ও সরকার। কোনও নির্দেশের তোয়াক্কা না করেই চলছে সন্ত্রাস।সম্ভবত সারাদেশে পশ্চিমবঙ্গেই একমাত্র রাজ্য যেখানে বিরোধী দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে, সরাসরি রাজ্য নির্বাচন কমিশন অফিসের সামনে বিক্ষোভ ধরনায় বসতে হচ্ছে। যেখানে প্রতি মুহূর্তে রাজ্যপালও উচ্চ আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে।প্রশ্ন হচ্ছে, এমনটা কেন হবে ? গণতন্ত্রের উৎসবে কেন এত হিংসা ? কেন এত রক্ত ঝড়বে? দেশের বহু রাজ্যে ভোট হয়। ওইসব রাজ্যে ভোট হচ্ছে বা ভোট হয়েছে, সেই খবরও অনেক সময় পাওয়া যায় না। হিংসা তো দূরের কথা। কিন্তু গোটা দেশে ব্যতিক্রম দুই রাজ্য, পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরা। বলতে কোনও দ্বিধা নেই, এই দুই রাজ্যে যে কোনও ভোট মানেই আতঙ্ক।ভোট মানেই হিংসা, মারামারি,সন্ত্রাস। সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রতিযোগিতা চলতে থাকে।ভোটের আগে থেকে শুরু হয় সন্ত্রাস,ভোট ফুরিয়ে গেলেও চলতে থাকে সন্ত্রাস।২০১৮ পশ্চিমবঙ্গে শুধু পঞ্চায়েত ভোটের দিনই খুন হয়েছিল কম পক্ষে ১৮ জন। বেসরকারী হিসাব আরও বেশি। আহতের সংখ্যা বলে লাভ নেই। ২০২৩ ফের পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে মনোনয়ন শুরু থেকেই গোটা বঙ্গ কার্যত যুদ্ধক্ষেত্র!এই পরিস্থিতি কি পাল্টাবে না কোনও দিন ?

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!

নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…

23 hours ago

বিমানযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…

24 hours ago

হরিয়ানাঃ পাল্লা কার পক্ষে?

হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…

2 days ago

রাজধানীতে চাঁদার জুলুমে অতিষ্ঠ মানুষ!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-মুখ্যমন্ত্রীডা. মানিক সাহার নির্বাচনি এলাকার আপনজন ক্লাবের চাঁদার নামে বড় অঙ্কের তোলাবাজির অভিযোগের রেশ…

3 days ago

ইন্ডিয়ান বুকে রাজ্যের মেয়ে ঝুমা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ইচ্ছে ছিলো অনেক আগে থেকেই। অবশেষে নিজের ইচ্ছেকেই বাস্তবে পরিনত করলো ঝুমা দেবনাথ।…

3 days ago

সুশাসনে আইনশৃঙ্খলা!

রাজ্যে কি সত্যিই আইনের শাসন রয়েছে?সাধারণ মানুষ কিন্তু প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।সরকার বলছে রাজ্যে সুশাসন…

3 days ago