বঞ্চনা, হস্তক্ষেপ করুক কেন্দ্র”!
বিমান সংস্থাগুলি কি রাজ্যবাসীর পকেটকাটা চালিয়েই যাবে?সম্প্রতি রাজ্যের আকাশে ৬৪ বছর পরিষেবা নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে।অন্যদিকে, অ্যালায়েন্স এয়ারের পরিষেবা থেকে মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন।সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, পূর্বোত্তরের অধিকাংশ রাজ্যে অ্যালায়েন্স এয়ারের পরিষেবা থাকলেও এ যাত্রায় বঞ্চিত ত্রিপুরা। অন্য বিমান সংস্থাগুলিও মর্জিমাফিক ভাড়া নিয়েই চলছে রাজ্যের যাত্রীদের কাছ থেকে।বিমান সংস্থাগুলি জানে যে, আগরতলা সেক্টর হচ্ছে অন্যতম একটি লাভজনক সেক্টর।ত্রিপুরার মানুষ বাড়ি, জমি, গাড়ি বিক্রি করেও প্রয়োজন হলে বিমানে চড়েন। তাও শখে নয়। মূলত জরুরি প্রয়োজনে, চিকিৎসার কাজে। এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে যাচ্ছে সংস্থাগুলি। ফলে আগরতলা সেক্টরে বিমানভাড়া সারা বছরই থাকে অনেকটাই চড়া। অথচ আগরতলা থেকে কলকাতা মাত্র ৪০-৪৫ মিনিটের জার্নি। আগরতলা-গুয়াহাটি জার্নি ৩০-৩৫ মিনিটের।
এই দুই সেক্টরে সারা বছর যাত্রীভিড় লেগেই থাকে। আর ভাড়াও নেহাত মন্দ নয়। বিমান সংস্থাগুলি এর সুযোগ নেয় সারা বছর। আর পুজো, ফেস্টিভেল সিজন কিংবা কোণকারণে পাহাড়ি লাইনে রাস্তা বন্ধ থাকলে বিমানভাড়া আকাশছোঁয়া হয়ে দাঁড়ায়।
একটা সময় রাজ্যে ছিল শুধুমাত্র এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান।দিনে দিনে আগরতলায় একদিকে যেমন প্রচুর বিমান সংস্থা তাদের বিমান নিয়ে আসে, আবার এদের মধ্যে অনকেই এখান থেকে বিমান গুটিয়ে নেয়। যাত্রীদের অবস্থা এমন যে, আরও বিমান সংস্থা এলেও আপত্তি নেই।বিশেষ করে ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে মূলত চিকিৎসা করাতে বহিঃরাজ্যে যাওয়া লোকের সংখ্যাই রাজ্যে বেশি। তাই এই সেক্টরে যাত্রীভিড় থাকে সারা বছরই।ফলে বিমান সংস্থাগুলি এর সুযোগ নেয় সারা বছর। অথচ এটি একটি লাভজনক সেক্টর।
খবরে প্রকাশ,কেন্দ্রীয় সরকারের কম ভাড়ার বিমান সংস্থা অ্যালায়েন্স এয়ারের বিমানও অনেক আগে থেকেই এ রাজ্য থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে।ফলে এর পরিষেবা থেকে বঞ্চিত রাজ্যবাসী।সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, পূর্বোত্তরের সব রাজ্যে অ্যালায়েন্স এয়ারের বিমান চালু থাকলেও একমাত্র বঞ্চিত ত্রিপুরা।এর কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন না রাজ্যবাসী।সম্প্রতি আসামের গুয়াহাটির সাথে অরুণাচল প্রদেশের তেজু বিমানবন্দরে অ্যালায়েন্সের এয়ারের বিমান পরিষেবা সম্প্রসারিত হয়েছে।এছাড়া,অ্যালায়েন্স এয়ারের বিমান শিলং, ইম্ফল, কোহিমা, গুয়াহাটি, আইজল ও পূর্বোত্তরের সব বিমানবন্দরেই চালু রয়েছে। ব্যতিক্রম আগরতলা।প্রশ্ন উঠছে বিমান পরিষেবা সম্প্রসারণ করলে রাজ্যবাসীর যেখানে উপকৃত হবার কথা সেখানে ত্রিপুরাকে বঞ্চিত কেন করা হচ্ছে। একসময় আগরতলায় অ্যালায়েন্স এয়ারের বিমান চালু ছিল।কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে রাজ্য থেকে তা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে অনেক আগেই।এই অ্যালায়েন্স এয়ারের বিমান রাজ্যে চালু থাকলে কম ভাড়ায় রাজ্যের যাত্রীরা বিমানে যাতায়াত করতে পারতেন। কেননা এই বিমানটি হলো কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। কেন্দ্রীয় সরকার এতে ভর্তুকি দিয়ে থাকে।আগরতলা সেক্টর একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর-এটা খুব ভাল করেই জানে বিমান সংস্থাগুলি।
তাহলে কেন এই সেক্টরে অ্যালায়েন্স এয়ারের মতো কম ভাড়ার বিমান নেই এর কোন স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। রাজ্য সরকার এর জন্য দাবি জানাচ্ছে না।ফলে সারাবছরই আগরতলা সেক্টরে যাত্রীভিড় লাগিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা লাভই এখন বিমান সংস্থাগুলির একমাত্র কাজ এবং লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।অবিলম্বে কেন্দ্রকে রাজ্যের বিমানযাত্রীদের কথা বিবেচনা করে আগরতলা সেক্টরে কম ভাড়ার বিমান পরিষেবা চালানোর জন্য ভাবনাচিন্তা করা প্রয়োজন। রাজ্য সরকারেরও এক্ষেত্রে নীরব দর্শক হয়ে থাকা বাঞ্ছনীয় নয়।এছাড়াও এই সেক্টরে প্রধানমন্ত্রীর সাধের উড়ান প্রকল্প চালুর বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ভাবনা চিন্তা করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন রাজ্যের যাত্রীসাধারণ।